‘পুরাতন কাপড়ের রাজধানী’ বেগম বাজার, যেখানে ৫ টাকায়ও কাপড় মেলে
ভোর ৫টা বেজে ১০ মিনিট। রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঠিক একই শহরের ছোট্ট একটি গলিতে জমে উঠেছে পুরাতন কাপড়ের জমজমাট বাজার। অন্য কোথাও এই সময়ে মানুষের আনাগোনা না থাকলেও পুরান ঢাকার বেগম বাজারের বেচারাম দেউড়ির এই বাজারে মানুষ এসে একে একে জড়ো হচ্ছেন কাপড় ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে। রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে পুরনো কাপড়ের কয়েক'শ দোকান। সেই দোকানের বিক্রেতারা পার করছেন অতি ব্যস্ত সময়। কাপড় গোছানোর পাশাপাশি ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কাপড় কিনতেও তড়িঘড়ি করছেন অনেকেই।
জমজমাট এই বাজারে ক্রেতারা এসে বস্তাবন্দী করে নিয়ে যাচ্ছেন কাপড়। কেউ খুচরা, কেউ পাইকারি হিসেবে কিনে নিচ্ছেন এসব পোশাক। শুধু পোশাক নয়, চাদর, পর্দা, জুতা সবকিছুই পাওয়া যায় এই বাজারে। কেউ কেউ এক দুইটা কিনছেন নিজ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আবার কেউ কেউ ভ্যানে করে বস্তার পর বস্তা করে কিনছেন হকারে বিক্রির জন্য। এমন ভোরেও বাজারে দেখা মেলে প্রাণচঞ্চল দৃশ্যপট। মানুষের আনাগোনা দেখলে মনে হবে ভোর নয়, যেন ব্যস্ত দুপুরের চিত্র এটি। বেগম বাজার বেচারাম দেউড়ির এই বাজার ক্রেতাদের কাছে পরিচিত 'পুরাতন কাপড়ের রাজধানী' হিসেবে।
৫ টাকায় মেলে শার্ট, ১০ টাকায় জিন্সের প্যান্ট, ৩০ টাকায় শাড়ি!
বর্তমান বাজারে সবকিছুর দাম যখন আকাশচুম্বী, জিনিসপত্র কেনা নিয়ে মানুষের মধ্যে যখন চলছে হাহাকার, নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য যেখানে নতুন পোশাক কেনাই বিলাসিতা, সেখানে রাজধানীর বেগম বাজারের এই মার্কেটে ৫-১০ টাকায় কাপড় কিনে অনেকেই নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারছেন। বর্তমানে এই বাজারে ৫ টাকায় শার্ট, ১০ টাকায় জিন্সের প্যান্ট, ৩০ টাকায় শাড়ি, ২০ টাকায় লুঙ্গি কিনতে পাওয়া যায়; অথচ এমন ভাবনাই যেন কল্পনার মতো বিষয় অনেকের কাছে। কারও কারও কাছে তাই এ বাজার আশির্বাদের মতোই।
এ বাজারে কেনাকাটা করতে আসা রিকশাচালক আমিন হোসেন বলেন, "দিনে যে ইনকাম হয় তাতে তিনবেলা ভালোভাবে খাইতে পারাও দায় হয়ে গেছে। কাপড় আর এমন কী! যেকোনো একটা পরতে পারলেই হলো। এই বাজারে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে জামা কিনতে পারি। একটা শার্ট কিনে নিলে অনেকদিন পরা যায়।"
চল্লিশোর্ধ রাজিয়া আক্তার ৬০ টাকায় কিনে নেন দুটি চাদর। বাজারে একটি সিঙ্গেল বেডের চাদর কিনতে ২৫০ টাকা দরকার হয় যা তার সামর্থ্যের বাইরে। মাঝেমধ্যেই এ বাজার থেকে পর্দা, চাদর, লেপ কাভার ইত্যাদি জিনিস কিনেন তিনি।
সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে অনেকেই সব খরচ সামলে নতুন কাপড় কিনতে পারছে না বলে এই বাজার এখন অনেকের কাছে আস্থার নাম। বিক্রেতারাও বলছেন আগে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করলেও বর্তমানে খুচরা কাপড়ের ক্রেতা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ!
কীভাবে কাপড় আসে বাজারে?
পুরাতন এসব কাপড় কিভাবে বাজারে আসে তা জানতে চাইলে ৩০ বছর ধরে পুরাতন কাপড় নিয়ে কাজ করা বিক্রেতা মো. হূমায়ন বলেন, যেসব ফেরিওয়ালারা হাড়ি-পাতিল বিক্রি করেন তারা এইসব কাপড় হাড়িপাতিলের বিনিময়ে মানুষের বাসা থেকে নিয়ে আসেন। অনেক কেজি কাপড়ের বিনিময়ে একটা হাড়ি-পাতিল পাওয়া গেলেও সেটা তাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিণত হয়।
১০ বছর ধরে হাড়ি-পাতিল বা প্লাস্টিকের বিনিময়ে কাপড় সংগ্রহ করার কাজ করছেন মো. মানিক। হাড়িপাতিল দিয়ে কাপড় সংগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে মানিক বলেন, "অনেকেই টাকার বিনিময়ে হাড়ি-পাতিল কেনার চেয়ে পুরাতন কাপড়ের বিনিময়ে এইসব জিনিস নিতে পছন্দ করেন। ঢাকার প্রায় সব বাড়িতেই এই প্রবণতা দেখা যায়। এভাবে আমাদেরও দিনশেষে অনেকগুলো কাপড় সংগ্রহ করা হয়ে যায়।"
মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফেরিওয়ালারা হাড়িপাতিলের বিনিময়ে যেসব কাপড় নিয়ে আসেন সেগুলোই বেগম বাজারের এই মার্কেটে আবার বিক্রি করেন তারা। বাজারের বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে কিনে নেন কেজি হিসাবে। কেজি প্রতি ২-১০ টাকা দরে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে এইসব কাপড় কিনে নেন বাজারের বিক্রেতারা।
গৃহিণী তুহিন আক্তার বলেন, "পুরাতন কাপড়গুলো আমরা এমনিতেই হয়তো কোথাও ফেলে দিই বা শুধু শুধু জমিয়ে রাখি। জমিয়ে রাখা এসব কাপড় জায়গা দখলের পাশাপাশি ঘর অগোছালো করে রাখে। এসব কাপড় ফেরিওয়ালারাদের কাছে দিয়ে যদি হাড়ি-পাতিল পাওয়া যায় তবে তা আমাদের জন্য স্বস্তির মতো।"
তবে ফেরিওয়ালাদের দিয়ে দেওয়া এই পুরাতন কাপড় কোথায় যায়, কী হয় তা নিয়ে বিন্দুমাত্র জানাশোনা নেই তার। তবে এই কাপড় যে কোনো না কোনো এক উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়, সে বিষয়ে কিছুটা নিশ্চিত তিনি। শুধু তুহিন আক্তারই নয়, ঢাকা শহরের অনেক মানুষই জানেন না এই পুরাতন কাপড়ের কাজ আসলে কী!
ভোরেই শুরু হয় কেনাবেচা
বাজারের অন্যতম একটি বিষয় হলো অন্যান্য মার্কেটের মত সারাদিন খোলা থাকে না এটি। খুব ভোরবেলায় মার্কেটের লেনদেন হয়ে থাকে। দিনের অন্যান্য সময়ে না বসে কেন এত ভোরে বাজার বসে জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. জাহিদ বলেন, "বেগম বাজারের এই রাস্তা কেবল ভোরেই ফাঁকা থাকে। কোনোরকম গাড়ির চলাচল থাকে না বলে কাজ করতে সুবিধা হয়। এই রাস্তা এমন সরু যে একটা গাড়ি আসলেই রাস্তা ব্লক হয়ে থাকে। তখন বিক্রেতাদের উঠে যেতে হয়।"
আরেক বিক্রেতা হূমায়ূন জানান, এই বাজার ভোর থেকে চালু হওয়ার আরও একটি কারণ হলো সারাদিন ফেরি করে ফেরিওয়ালারা যে কাপড় সংগ্রহ করে থাকেন সেগুলো পরের দিন ভোরে বাজারে বিক্রি করে আবার সারাদিন ফেরি করেন। এভাবেই চলতে থাকে ক্রমান্বয়ে পুরাতন কাপড় সংগ্রহ এবং বিক্রির কাজ।
বাজারের যাত্রা শুরু কখন?
বাজারের গোড়াপত্তনের সময়কাল নিয়ে বিক্রেতারদের মধ্যে দেখা যায় মতের বিরোধ। কেউই নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ঠিক কবে সূত্রপাত হয়েছিল এই বাজারের। কারো মতে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই মার্কেট আবার কারো মতে ৬০-৭০ বছর বয়স এই মার্কেটের।
৩০ বছর ধরে এই ব্যবসায় মনোনিবেশ করা ব্যবসায়ী মো. হূমায়ুন বলেন, "আমিই এখানে কাজ করি ৩০ বছর ধরে। এর আগে থেকেই এই মার্কেট ছিল। তার মানে এই মার্কেটের বয়স ৭০-৮০ বছর তো হবেই।"
দীর্ঘদিন এই ব্যবসায় নিয়োজিত অনেক মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় আজ থেকে প্রায় ৪৮ বছর আগে গোড়াপত্তন হয় এই মার্কেটের। দোকানে কর্মরত অনেক দোকানিদের মতে, বিক্রমপুরের কিছু মানুষের হাত ধরেই এই বাজারের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৭৫ সালের দিকে বিক্রমপুরের ৪-৫ জন মানুষের হাত ধরেই এই মার্কেটের কাজ-কারবার শুরু হয়েছিল বলেও জানান অনেকেই। তবে কারও কারও মতে হয়তো তারও আগে শুরু হয়েছিলো এই বাজার।
ক্রেতা কারা?
প্রায় সব ধরনের মানুষই এই পুরাতন কাপড়ের ক্রেতা। এই তালিকায় আছেন বড় বড় ফ্যাক্টরির মালিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রিকশাওয়ালা, হকার এবং সাধারণ মানু্ষ। যারা অল্প দামে ভালো জিনিস কিনতে চান তারা এসে ভিড় করেন এই মার্কেটে। অনেক পুরাতন কাপড়ও দেখতে নতুনের মত থাকে। এইসব কাপড়ের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে বেশি।
তবে এই মার্কেটের দুই ধরনের ক্রেতা আছেন- খুচরা ও পাইকারি। খুচরা ক্রেতারা কম দামে অপেক্ষাকৃত ভালো কাপড়ের জন্য আসেন, অন্যদিকে পাইকারি ক্রেতা, যারা কাপড় কিনে নেন বস্তা ভরে।
বিশ্ববিদ্যাল্যের শিক্ষার্থীও কিনছেন এসব কাপড়। অনেকেই বাসা নিলে পর্দা, চাদর এসবের সংকটে পড়ে যান। তখন তারা খুব কম দামেই এই বাজার থেকে কিনে নেন পর্দা বা চাদর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, "আমি সাবলেটে বাসা নেওয়ার পর পর্দার দরকার হলে এই মার্কেট থেকেই মাত্র ৩০ টাকায় দুইটা জানালার পর্দা কিনে নিই। এতে করে আমার টাকাও সেইভ হলো আর পর্দাও দেওয়া হলো জানালায়।"
বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, "এমন কিছু ক্রেতা আছে যারা আমাদের কাছ থেকে এসব কাপড় কিনে ধোলাই করে বিক্রি করে অন্যদের কাছে। তখন তারা আরও বেশি দামে কাপড়গুলো বিক্রি করতে পারে।"
এক ক্রেতা মাত্র ২০০-২৫০ টাকায় কিনে নেন দুইটা সাফারি। সেগুলোকে তিনি নিজের মত করে পরিষ্কার করে আয়রন করে নিয়ে নতুন বানিয়ে নেবেন। কম টাকায় অনেক কাজের জিনিস পাওয়া যায় বলে প্রায়ই কাপড় কিনতে চলে আসেন এই বাজারে।
কোন কাপড় কত দাম?
পুরাতন জিনস প্যান্ট, শার্ট, লুঙ্গি, শাড়ি, গেঞ্জি, কাঁথা, কম্বল ও লেপের কাভার, ব্যাগ, ছোট বাচ্চাদের জামাকাপড়ের ছোট ছোট স্তূপ-একেকটি দোকানের সামনে। দোকানদাররা এসব কাপড় থেকে শাড়ি আলাদা করে রাখছেন শাড়ির স্তূপে, প্যান্টের স্তূপে রাখছেন প্যান্ট।
এই বাজারে কাপড়ের দাম শুরু হয় ২ টাকা থেকে এবং তা বেড়ে হয় ৫০/১০০/২৫০ পর্যন্ত। কাপড়ের মানের উপর নির্ভর করেই হয়ে থাকে দাম নির্ধারণের কাজ। পুরাতন সব কাপড়কে তারা ভাগ করে নেন ৩ ভাগে।
কম ভালো, ভালো, বেশি ভালো- এই তিনটি স্তরে কাপড়গুলোকে সাজিয়ে রেখে দামও নির্ধারণ করা হয় আলাদা করে। যেসব কাপড়ে ছেঁড়া অংশ থাকে সেগুলো বিক্রি করা হয় কেজি ২-১০ টাকায়, মাঝামাঝি ভালো কাপড়ের দাম নেওয়া হয় ২০-৫০ টাকা এবং বেশি ভালো কাপড়ের দাম নির্ধারণ করা হয় ১০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত। শাড়ির দাম শুরু হয় ২০-১৫০ টাকা, চাদরের দাম ২০-১০০ টাকা, শার্ট ৫-১০০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ৩-৫০ টাকা, লুঙ্গি ১০-৫০ টাকা, জিন্স ১০-১০০ টাকা, শীতের পোশাক ৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এই কাপড়গুলো বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করছে অনেক পরিবার। বিক্রেতাদের মতে এই বাজারে দোকানের সংখ্যা ২০০-২৫০ এর কাছাকাছি। প্রতিদিন দোকান থেকে বিক্রেতারা আয় করেন ৯-১০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে বিক্রি বেশি হলে টাকার পরিমাণও বেড়ে যায়।
এই বাজারের বিক্রেতা আবুল হাসান (ছদ্মনাম) বলেন, "এই বাজারে দোকান করে অনেকেই বাড়ি পর্যন্ত তৈরি করেছেন। এই ব্যবসায় লস নাই। বিক্রেতারা যে দামে কেনেন তার দ্বিগুণ দামে অন্যের কাছে বিক্রি করে।"
ছেঁড়া-ফাটা কাপড়ে লাভ বেশি
যে কাপড়গুলো একেবারেই পরিধানযোগ্য নয়, ফেলে দেওয়ার মতো, সেই কাপড়েরও আছে মূল্য। এই বাজারে পুরাতন কিছুই ফেলনা নয়। ফেলে দেওয়া জিনিসও এখানে দামি হয়ে উঠে। একেবারেই ছেড়া, অপরিধানযোগ্য কাপড়ই সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় স্থান করে নেয় ফ্যাক্টরির মালিকদের কাছে। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মোছার কাজ ছাড়াও কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা হাতে ব্যবহারের জন্য যে গ্লাভস, তা তৈরি হয় বেগম বাজার থেকে কিনে আনা জিনস প্যান্ট ব্যবহার করেই।
প্রিন্টিং প্রেস, গাড়ি রং করার ওয়ার্কশপ ও আসবাবপত্র তৈরির কারখানার জন্য যে বিশাল পরিমাণ কাপড়ের দরকার হয় তার যোগান আসে বেগমগঞ্জের এই বাজার থেকে। এখানে তাদের পছন্দের তালিকায় আছে সবচেয়ে ছেড়া কাপড়গুলো। কেজি দরে নিয়ে যান এসব কাপড়।
ব্যবহার অযোগ্য ছেঁড়া-ফাটা কাপড়গুলো বিক্রেতারা ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কিনে নেন কম দামে। এইসব কাপড় যখন পাইকারি দামে বিক্রি করেন তখন তাদের লাভের পরিমাণ বেড়ে যায়।
বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, "আমরা যদি এই ছেঁড়া কাপড়গুলো ১-২ টাকা কেজিতে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কিনে নিই, তবে সেটা আমরা আবার কোম্পানির লোকের কাছে বিক্রি করি ৫-১০ টাকায়। এতে করে আমাদের কম খরচে বেশি লাভ হয়।"
বেগম বাজার থেকে সারাদেশেই যায় এই কাপড়
বেগম বাজারের পুরাতন এই কাপড় ঢাকার বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী, দিনাজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা ইত্যাদি অঞ্চলেও নিয়ে যাওয়া হয়। পাইকারি ক্রেতারা এসে বস্তা ভরে নিয়ে যান এসব কাপড়।
দোকানের বিক্রেতা হূমায়ূন বলেন, "গতদিন খাগড়াছড়ির এক পাইকারি ক্রেতা এসে কয়েক বস্তা কাপড় কিনে নিয়ে যান। হয়তো এই কাপড়গুলোকে পরিষ্কার করে তিনি আরও বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করবেন। যদি ১০ টাকায় কোনো গেঞ্জি কিনে থাকেন তবে তিনি সেটা বিক্রি করবেন ৫০-৬০ টাকায়।"
তাছাড়া ঢাকায় পুরাতন কাপড়ের আরও যেসব দোকান রয়েছে, প্রায় সব দোকানের জন্য বেগম বাজার থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কাপড়। যারা ভ্যানে করে কাপড় ফেরি করেন তাদের অনেকেই এভাবে কাপড় পাইকারি হিসেবে কেনে এবং তিনগুণ দামে বিক্রি করে। এভাবে করে প্রায় সারাদেশেই বিক্রি হয় এই কাপড়।
জামা-কাপড় থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল জিনিসের অতিমূল্যের বর্তমান বাজারে এমন সূলভ মূল্যে কাপড় কিনতে পারা নিন্মবিত্ত মানুষের জন্য তীব্র অন্ধকারে এক চিলতে আলোর মতই। শ্রমিক হারুনের মতে, এই বাজারে কিনতে পাওয়া যায় 'সাধ্যের মধ্যে নিজের প্রয়োজন'।