প্রকাশ্য নিলামে আড়াই কোটি টাকার মহিষের মাংসের দাম উঠল মাত্র চার লাখ
মাইকিং করে ভারত থেকে আমদানি করা ২৮ মেট্রিক টন হিমায়িত মহিষের মাংস প্রকাশ্য নিলামে তুলেছিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এ মাংসের দাম ধরা হয় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
কিন্তু নিলামে এই মাংসের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৪ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখায় সোমবার (৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ওই নিলামে সর্বোচ্চ দর দেয় শাহ মখদুম ট্রেডার্স।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, নিলামে সংরক্ষিত পণ্যের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য পাওয়া গেলে পণ্য বিক্রির বিধান রয়েছে। সেই হিসাবে পণ্য চালানটির দাম ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯০ হাজার ৬৩৯ টাকা হলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামে বিক্রি করতে পারবে। এতে প্রতি কেজি মাংসের দর পড়বে ৫২৫ টাকা।
তবে পচনশীল পণ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমসের নিলাম কমিটির সভায় সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশের কম দামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ৪ লাখ টাকায় মাংসগুলো বিক্রি করা হবে কি না, এ বিষয়ে দুই-তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে কাস্টমসের নিলাম কমিটি।
তবে নিলামে অংশ নেওয়া বিডাররা বলেন, মাংসগুলোর গুণগত মান নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো খাওয়ার উপযোগিতা হারিয়েছে। সময়মতো নিলাম অনুষ্ঠিত হলে ন্যূনতম ১ কোটি টাকা বিক্রি হতো বলে জানান বিডাররা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. আব্দুল হান্নান টিবিএসকে বলেন, 'সর্বোচ্চ দরদাতাকে মাংসের চালান ডেলিভারি দেওয়া হবে কি না, তা নিলাম কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দুই-একদিনের মধ্যে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।'
তিনি বলেন, 'যেহেতু মাংসের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, তাই আমরা মনে করছি এগুলো খাওয়ার উপযোগী রয়েছে। ডেলিভারির আগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মাংসের গুণগত মান পরীক্ষা করবে।'
সর্বোচ্চ দরদাতা শাহ মখদুম ট্রেডার্স-এর স্বত্বাধিকারী সরওয়ার হোসেন টিবিএসকে বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য চালানটি সরেজমিন পরিদর্শন করতে গেলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ আমাদের প্যাকেট খুলে পণ্য দেখায়নি। কনটেইনারের ভেতরে দুর্গন্ধ অনুভব হয়েছে। কিছু মাংস হয়তো ভালো থাকতে পারে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত দর দিয়েছি।'
তিনি আরো বলেন, 'প্রকাশ্য নিলামের নিয়ম অনুযায়ী আমরা ২০ শতাংশ, অর্থাৎ ৮০ হাজার টাকা কাস্টমসে জমা দিয়েছি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরীক্ষায় যদি এই পণ্য নষ্ট হয়, তাহলে আমরা মাংস ডেলিভারি নেব না।'
কাস্টম কর্মকর্তারা জানান, নারায়নগঞ্জের আমদানিকারক এনবি ট্রেডিং ভারত থেকে 'হালাল ফ্রোজেন বাফেলো মিট' আমদানি করে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে আমদানি করায় খালাস দেয়নি কাস্টমস। প্রক্রিয়া শেষে পণ্য চালানটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ।