চট্টগ্রামে রাতে তিন বাসে আগুন, সকাল থেকে নগরে যান চলাচল কম
বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধে সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাত থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার ভোর ছয়টার দিকে নগীরর ইপিজেড থানার সল্টগুলা ক্রসিং এলাকায় একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
অবরোধের আগের রাতে চট্টগ্রাম নগরীতে আরো দুটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে রাত সোয়া ৩টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ট্যানারি বটতলে একটি সিটি বাস এবং রাত পৌনে ১০টার দিকে গরীবুল্লাহ শাহ মাজার এলাকায় একটি মিনিবাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বাসটি যাত্রী তোলার জন্য সল্টগুলা ক্রসিং এলাকায় দাঁড়ায়। ওই সময় যাত্রীবেশে দুজন উঠে বাসে আগুন দিয়ে দ্রুত নেমে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইপিজেডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে যান। প্রায় আধঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
মঙ্গলবার অবরোধ শুরুর প্রথম দিনে সকাল ৯টা পর্যন্ত সড়কে যানচলাচল কম ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়কে যানবাহন বাড়ছে। এদিন সড়কে রিকশা, অটোরিকশা, টেম্পু, মিনিবাসসহ ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেশি।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত, নগরীর অক্সিজেন মোড়, টেকনিক্যাল মোড়, ২ নম্বর গেইট, জিইসি মোড়, ওয়াসার মোড় এলাকায় দেখা যায়, প্রতিদিনের চেয়ে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা কম। অফিসগামী যাত্রীদের অটোরিকশা, টেম্পু, রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে করে নিজ নিজ অফিসের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা গেছে।
জিইসি মোডে অফিসগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতি কম লক্ষ করা যাাচ্ছে। প্রতিদিন বাসে করে আগ্রাবাদের অফিসে যাই। আজ রাইড শেয়ারিং মোটর সাইকেলে করে অফিসে যেতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন টিবিএসকে বলেন, অবরোধের প্রভাবে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ৮০ শতাংশ গণপরিবহন চলাচল করছে। সময় বাড়ার সাথে সাথে ২০ শতাংশ গাড়িও চলাচল করবে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন রুটে ১২০০ মিনি বাস ১৬০০ হিউম্যান হলার এবং ২০০ টেম্পু চলাচল করে।
এদিকে অবরোধের প্রথম দিনে চট্টগ্রাম থেকে যথাসময়ে ছেড়ে গেছে সবকটি ট্রেন। একই দিন ৯টা পর্যন্ত সকল ট্রেন যথাসময়ে চট্টগ্রাম স্টেশন পৌঁছেছে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে কোন জায়গায় অবরোধ দেখা না গেলেও দুরপাল্লার যান চালচল খুবই কম।
অবরোধে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক স্বাভাবিক রাখাসহ সার্বিক নিরাপত্তায় মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় দুই প্লাটুন করে মোট চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করে বিএনপি। একই দিন মতিঝিল শাপলা চত্ত্বর এলাকায় সমাবেশ করে জামায়াত। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া জামায়াতের কর্মসূচি শেষ হলেও বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশসহ নিহত হওয়া ছাড়াও ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর জেরে প্রথমে হরতাল এবং পরে অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি।