টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হলেন টেইলর সুইফট
চলতি বছর বিখ্যাত সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের 'পারসন অফ দ্য ইয়ার' এ ভূষিত হয়েছেন বিখ্যাত সংগীত শিল্পী টেইলর সুইফট। সম্প্রতি ইরাস ট্যুরের মাধ্যমে একের পর এক রেকর্ড তৈরি করে যাওয়া এই তারকার আগে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন বারাক ওবামা, গ্রেটা থুনবার্গ ও ভলেদেমির জেলেনস্কির মতো ব্যক্তিত্বরা। খবর বিবিসির।
সাধারণত পুরষ্কারটি এমন একটি ইভেন্ট বা ব্যক্তিকে দেওয়া হয় যা গত বছরের বিশ্বব্যাপী ঘটনাবলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হয়। পুরস্কারটি পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সুইফট জানান, এটি তার জীবনের সবচেয়ে গর্বের ও খুশির মুহূর্ত।
তবে ইরাস ট্যুরে সুইফটের এমন আকাশচুম্বী সফলতার পেছনে রয়েছে অজস্র শ্রম। দীর্ঘ সময়ের এই কনসার্টের পরিশ্রমে তিনি প্রায়শই শারীরিকভাবে ক্লান্ত অনুভব করেন।
সুইফট বলেন, "বেশ কিছু শো করার পর আমি এতটাই ক্লান্ত থাকি যে খাবার আনা এবং খাওয়া ছাড়া আমি আমার বিছানা ছেড়ে উঠি না। শো-এ টানা গান করার ফলে আমি খুব কমই কথা বলতে পারি। প্রতিবার নাচতে নাচতে আমি মাংসপেশিতে টান অনুভব করি।"
অন্যদিকে মার্কিন ফুটবল তারকা ট্র্যাভিস কেলসের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন টেইলর। গত সেপ্টেম্বর মাসে তার একটি খেলা দেখতে মাঠে দর্শক হিসেবে হাজির হয়েছিলেন তিনি।
এ সম্পর্কে সুইফট বলেন, "আমি যখন প্রথম খেলা দেখতে যাই, ততদিনে আমরা সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। গত গ্রীষ্মেই আমরা একসাথে প্রেম করেছি।"
সঙ্গীতাঙ্গনে সুইফটের অভাবনীয় প্রভাব যেন তার বাকি সবকিছুকে ছাপিয়ে ফেলেছে। তারকার ইরাস ট্যুরের টিকেট পেতে ভক্তরা রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সিয়াটলে তার কন্সার্টে দর্শকদের উন্মাদনায় ২ দশমিক ৩ মাত্রায় ভূমিকম্প পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুইফট বলেন, "এটা আমার ক্যারিয়ারের যুগান্তকারী মুহূর্ত, ৩৩ বছর বয়সে এটি ঘটছে। তবে জীবনে প্রথমবারের জন্য আমি মানসিকভাবে যথেষ্ট শক্ত ছিলাম এমন পরিস্থিতি জন্য।"
টাইম ম্যাগাজিনের এডিটর-ইন-চিফ স্যাম জ্যাকব এ সম্পর্কে বলেন, "মার্কিন পপ আইকন সুইফট এমন এক বিরল ব্যক্তিত্ব যিনি তার নিজেই নিজের গল্পের লেখক ও নায়ক। তিনি নিজেই সীমানা অতিক্রম করে আলো খুঁজে নিয়েছেন৷"
গত সোমবার টাইম ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে পুরস্কারটির জন্য মোট নয়জনকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখার কথা জানানো হয়েছিল। এই তালিকায় ছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিনসহ বহু হলিউড তারকা ও শিল্পী।
ইরাস ট্যুর ছাড়াও সুইফট চলতি বছর নিজের পুরনো ১৯৮৯ অ্যালবামের রি-রেকর্ডিং করেছেন। সেটিও দর্শকদের মন জয়ের পাশাপাশি বেশ ব্যবসাসফল হয়েছে।
সুইফটের ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য সব অর্জন। তার ইরাস ট্যুর নিয়ে নির্মিত সিনেমা বিশ্বজুড়ে আয় করেছে ২৪৯ মার্কিন ডলার; যা কন্সার্ট সিনেমা হিসেবে ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একইসাথে একমাত্র জীবিত কিংবদন্তি শিল্পী হিসেবে টেইলরের পাঁচটি অ্যালবাম মার্কিন টপ ১০ চার্টে জায়গা করে নিয়েছে। আর স্পটিফাই ও অ্যাপল মিউজিকে তার গান নারী শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার স্ট্রিম হয়েছে।
গত মাসে বিজনেস পাবলিকেশন ব্লুমবার্গ সুইফটকে বিলিয়নিয়ার হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই তালিকার রয়েছে আর মাত্র তিনজন শিল্পী; রিহানা, বিয়ন্সে, জে-জি। তবে এদের মধ্যে সুইফটই প্রথম যিনি শুধু মিউজিক দিয়েই এই বিশাল পরিমাণ আয় করেছেন। বাকিরা মিউজিকের পাশপাশি ফ্যাশন, বিউটি প্রোডাক্ট ও হাই-ফাই ইউকুইপমেন্টের ব্যবসা করে আয় করেছেন।