জার্মান স্টেট: স্যাক্সনি-আনহল্ট অংশে নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের অবশ্যই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে হবে
জার্মান স্টেট স্যাক্সনি-আনহল্ট অংশে বিদেশীদের নাগরিকত্বের আবেদন করতে হলে ইসরায়েলকে সমর্থন করে অবশ্যই একটি ঘোষণাপত্রে লিখিতভাবে তা নিশ্চিত করতে হবে। গত বুধবার সেখানকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তামারা জিশাং এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। একইসাথে জার্মানির অন্য ১৫ টি রাজ্যে একই ধরনের নিয়ম চালুর আহ্বান জানান তিনি।
ইসরায়েলের সমর্থনে ঘোষণাপত্রে লিখতে হবে যে, "তারা (নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীরা) ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে পরিচালিত যেকোনো প্রচেষ্টার নিন্দা করে।"
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিশাং এর আগে বলেছিলেন যে, তার মন্ত্রণালয় গত নভেম্বরের শেষের দিকে স্যাক্সনি-আনহল্টের সকল পৌরসভাকে নতুন এই নীতি সম্পর্কে অবহিত করে একটি ডিক্রি পাঠিয়েছিল।
ডিক্রিতে বলা হয়, নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীরা ইহুদি বিরোধী মনোভাব প্রদর্শন করে কি-না সেদিকে গভীর মনোযোগ দিতে হবে। একইসাথে 'জার্মান নাগরিকত্ব' পাওয়ার জন্য ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকার করতে হবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে রাজ্যটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে, "যেসব বিদেশিরা জার্মানির মৌলিক আইনে বর্ণিত উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কাজ করবে, তাদের স্বাভাবিকীকরণ (নাগরিকত্ব প্রদান) করা হবে না। ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার অস্বীকার করা এবং ইহুদি বিদ্বেষ এই ধরনের কার্যকলাপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।"
স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আবেদনকারী যদি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায় তবে তার নাগরিকত্বের অনুরোধ যেন প্রত্যাখ্যান করা হয়। একইসাথে এই তথ্য ভবিষ্যতে রেফারেন্সের জন্য যেন নথিভুক্ত করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করে জার্মানির তৎকালীন হিটলারের সরকার; যা ইতিহাসে 'হলোকাস্ট' নামে পরিচিত। বর্তমানে তাই ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষা করাকে নিজেদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব বলে প্রচার করে দেশটি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা অভিবাসীদের মধ্যে ইহুদি-বিরোধী মনোভাব রয়েছে কি-না সেটি নিয়ে অবশ্য জার্মানিতে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর বিষয়টি যেন ফের নতুন করে সামনে এসেছে।
২০১৯ সালে স্যাক্সনি আনহল্টে ইহুদিদের উপাসনালয় সিনাগগে হামলায় দুইজন নিহত হয়েছিল। তবে সেটি কোনো বিদেশি করেননি; বরং অভিযুক্ত ছিলেন একজন ডানপন্থী জার্মান চরমপন্থী।