শ্রমিক ইস্যুতে নয়, নিষেধাজ্ঞা আসলে সেটা হবে রাজনৈতিক কারণে: পোশাক মালিকপক্ষ
বাংলাদেশে পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায়নি, যেজন্য যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। বরং নিষেধাজ্ঞা আসলে সেটা হতে পারে রাজনৈতিক কারণে, এমনটাই মনে করছেন মালিকপক্ষ।
আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগরে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অফিসে আয়োজিত এক সেমিনারে তাঁরা এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ'র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি এমন খারাপ অবস্থানে নেই, যে জন্য স্যাংশন দিতে হবে। যদি দেওয়া হয়, সেটা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে দেওয়া হবে। শ্রম অধিকারের কারণে নয়।'
বিকেএমইএ'র সহ-সভাপতি ফজলে শামিম এহসানও একই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'যে পরিস্থিতি, এটি রাজনৈতিক। ফলে তা কূটনৈতিক উপায়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। মালিকপক্ষ বা শ্রমিকপক্ষের মাধ্যমে (সমাধান) সম্ভব নয়।'
আলোচনায় শ্রমিক নেতা ও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, 'যারা স্যাংশন দিতে চান তারা আইএলও কনভেশনের কয়টি রেটিফাই করেছেন? তারা কোর কনভেনশনের বেশিরভাগই র্যাটিফাই করেননি। তারা যদি বলে তোমার (বাংলাদেশের) শ্রমমান উন্নত নয়, তাহলে বলতে হবে, শ্রমমান নয়, তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।' তিনি বলেন, এতে ভীত হওয়ার কারন নেই।
অবশ্য শ্রমিক নেতা এবং ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মনে করেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক স্মারকলিপিকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। কারন এটা গ্লোবাল বিজনেস।'
বাংলাদেশ ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশনের সদস্য ও অর্থনীতিবিদ মোস্তফা আবিদ খান বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরেন্ডাম অনুযায়ী, ট্রেড স্যাংশান আসার সম্ভাবনা কম। কারণ ডব্লিটিও'র (বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা) বিধান অনুযায়ী, এটি দেওয়া সহজ নয়। কিংবা ট্যারিফ বাড়ানোরও সুযোগ কম।' তিনি বলেন, ব্যক্তি-ভিত্তিক কোন পেনাল্টি হয়তো দেওয়া হতে পারে।
তিনি এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়াশীল নাহয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সক্রিয় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের মন্ত্রী (বাণিজ্য) সেলিম রেজা একটি চিঠি দেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষকে। ওই চিঠিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম ইস্যুর অজুহাতে স্মারকলিপিতে বর্ণিত যেকোনও ব্যবস্থা নিতে পারে। এই স্মারকলিপি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে শ্রম অধিকারের অজুহাতে ব্যবস্থা নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন থেকে এ চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে তপন কান্তি ঘোষ গত ২৮ নভেম্বর টেলিফোনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, 'চিঠি হাতে পেয়েছি। কোনোভাবেই এটি সতর্কবার্তা নয়। এটা সাধারণ কমিউনিকেশন।'