নির্বাচন করতে এসেছি, নির্বাচন থেকে চলে যাওয়ার নাটক করতে আসি নাই: চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, "আমরা নির্বাচন করতে এসেছি। নির্বাচন থেকে চলে যাওয়ার জন্য নাটক করতে আসি নাই। নির্বাচন করব এবং নির্বাচন করে আগামীতে ক্ষমতায় যাব– সেই স্বপ্নে আমরা বিভোর। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে যাবে– সে রকম চিন্তাই আমাদের মধ্যে আছে। কাজেই নির্বাচন থেকে চলে যাব কেন?"
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন।
দলের মহাসচিব বলেন, "আমরা নির্বাচনে এসেছি ভোট করার জন্য, না করার জন্য না। শর্ত হিসেবে আমাদের একটাই দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ এমন হতে হবে যেন ভোটারদের আস্থা আসে। আর কোনো দাবি আমাদের নাই।"
তিনি বলেন, নির্বাচনের কৌশল হিসেবে, রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে আসন-সহ যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। না-ও হতে পারে। সিদ্ধান্ত হতে পারে, না-ও হতে পারে। নির্বাচনী কৌশল হিসেবে রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট না করার অনুরোধ জানান, এবিষয়ে জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, উনাকে (রওশন এরশাদ), উনার ছেলেকে এবং আরেকজনকে আপনাদের মাধ্যমে বারবার বলেছি। উনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। উনি নিজেই বলেছেন, নির্বাচন করবেন এবং ফরম নেবেন। আমি বলেছি, আপনি নির্দেশ দিলে ফরম আমি আপনার বাসায় দিয়ে আসব। উনি বলেছেন লোক পাঠাবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন রাত ১০টা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর তিনি সংবাদ সম্মেলনে বললেন যে, নির্বাচনে যাবেন না। এখন দোষ কার আপনারা চিন্তা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে রওশন এরশাদের করা অভিযোগের বিষয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রওশন এরশাদ দলের কেউ না। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলংকারিক পদ। নির্বাহী কোনো ক্ষমতা তাঁর নেই।
দলের ভেতরে বিভক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, দলে কোনো বিভক্তি নাই।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, "গত রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতাদের সাঙ্গে আমরা অনেকক্ষণ আলাপ করেছি, খোশগল্প করেছি। নির্বাচন যাতে ভালোভাবে হয়। ভোটাররা কীভাবে আসবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী হবে, প্রশাসনের কী ভূমিকা থাকবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কী ভূমিকা থাকবে, নির্বাচন কমিশনের কী ভূমিকা থাকবে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের কী ভূমিকা থাকবে– এসব নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। কাজেই আমার মনে হয় না যে, উনারা যে বলছেন বিশ্বাস করেন না; বিশ্বাস না করলে— কারও বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে এত আলাপ করে খাওয়াইতেন না নিশ্চয়ই।"
তিনি আরও বলেন, জোট-মহাজোটের বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে কোনো দরখাস্ত করি নাই। আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী, যদি জোট-মহাজোট করতে হয়– তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত দিয়ে জানিয়ে দিতে হয়। আমরা জানাইনি, কারণ আমরা প্রথম থেকেই জোট-মহাজোটে যাওয়ার সিদ্ধান্তে নাই।