গার্মেন্ট বর্জ্য: সব ঝুট কিন্তু কিছুই ফেলনা নয়
নামটা ব্যবসায়ীদের বিপাকে ফেলে দিয়েছিল। অনেক ভাবনা-চিন্তা করে নাম ঠিক হয় মিরপুর কাটা কাপড় ব্যবসায়ী সমিতি। সমিতির হিসাবরক্ষক মো. মোজাম্মেল হককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন আপনারা ঝুট শব্দটি পছন্দ করেননি? তিনি বলেছিলেন, 'কেমন যেন শোনায়! ঝুট মানে মিথ্যা, আমরা অর্থ করি পরিত্যক্ত বা উচ্ছিষ্ট। তাই উচ্ছিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী সমিতি রাখলে আপনিও হেসে ফেলতেন।'
তিনি জানান, 'আমাদের সমিতির নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে সমাজসেবা দপ্তর থেকে। যখন নিবন্ধন নিতে গিয়েছিলাম, তখনই প্রশ্নটা সামনে চলে আসে। শেষে ওই নাম রাখা হয়। প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, জ্যাকেট, সোয়েটার বানানোর পর কাপড়ের যে অংশটা কাটা বা বাদ পড়ে, সেগুলো আমরা নিয়ে এসে বিভিন্ন কাজে লাগাই। এজন্য নামটা জুতসই।'
ঝুটের উৎস সন্ধানে
কিন্তু ঝুট শব্দটার উৎস কোথায়? উত্তর পেতে ঘুরতে হলো, পরিষ্কার উত্তর পাওয়াও গেল না। ব্যবসায়ী সোহেল প্রধান বললেন, 'আগে ঝুট কাপড় রাস্তায় গড়াগড়ি খেত। যখন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা দেখা দিল, তখন কাড়াকাড়ি শুরু হলো। একপর্যায়ে মারামারি। অনেক ছল-চাতুরি আছে এ ব্যবসায়। ফার্স্ট থেকে লাস্ট, সব পার্টিই তালে থাকে কখন কার মাথায় কাঁঠাল ভাঙা যায়। এ কারণেই হয়তো কেউ বলে থাকবেন, ইয়ে সব ঝুট হ্যায়।'
কিন্তু কাজটি পরিবেশবান্ধব, সিনথেটিক ঝুট যেমন প্রকৃতিতে মিশে যায় না, জমে থাকলে দূষণ ছড়াত। তাছাড়া অনেক কর্মসংস্থানও হচ্ছে এ খাতে। প্রকৃতিতে মিশে যায় না—প্রসঙ্গটি তুললে সোহেল বললেন, 'এটা ঠিক। আমরা পরিবেশের দূষণ কমাচ্ছি। ফুটপাতে ১০০ টাকায় প্যান্ট-শার্ট-গেঞ্জি পাওয়া যায়; তা কিন্তু এই ঝুটপট্টিরই অবদান। তবে যারা ঝুট বাছাইয়ের কাজ করে, তারা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে। এ ব্যাপারে নজর দিলে আরো ভালো হতো।'
যেভাবেই আসুক, জায়গার নাম ঝুটপট্টিই রয়ে গেছে। মিরপুর ১০ নম্বরের ওই জায়গায় ঝুট বা কাটা কাপড়ের ব্যবসা শুরু হয় আশির দশকের শুরুতে। তবে জমে ওঠে নব্বইয়ের দশকে।
১৯৯৩ সালে ঝুট ব্যবসা শুরু করেন রশিদ মাতব্বর। আগে তিনি সিমেন্টের বস্তার ব্যবসা করতেন। তার সঙ্গে সখ্য ছিল এক গার্মেন্ট মালিকের ড্রাইভারের। কথায় কথায় ড্রাইভার বন্ধু রশিদকে ঝুট কাপড়ের কথা বলেন। রশিদ উৎসাহ দেখালে বন্ধুটি তাকে গার্মেন্টে নিয়ে যান। গিয়ে দ্যাখেন বেশ কিছু কার্টন নিচতলায় জমা করা আছে যেগুলো ভরতি ঝুট কাপড় দিয়ে। রশিদ ঠিকা চুক্তিতে কয়েকটি কার্টন কিনে আনেন। প্রতিটির ওজন ছিল সাত-আট কেজি। সে সময় ঝুট কেনা যেত নামমাত্র মূল্যে। অনেকে সেধেও দিয়ে দিত, জায়গা নষ্ট হচ্ছে ভেবে।
কার কাছে বিক্রি করলেন নিয়ে আসা কাটা কাপড়গুলো?—জানতে চাইলে রশিদ বললেন, 'তখন ঝুটের ব্যবহার বেশি ছিল বালিশ, তোশক তৈরিতে। কিছু পাইকার আসত জিনজিরা, কালিগঞ্জ থেকে। তারা বেশি দৈর্ঘ্যের ঝুট নিয়ে গিয়ে জোড়াতালি দিয়ে শার্ট-প্যান্ট বানাত।'
সাইজ লেবেলও বিক্রি হয়
ঝুটপট্টিতে প্রায় ৭০০ দোকান আছে। শুধু ঝুট কাপড়ের দোকান আছে দেড়শর মতো; আর বাকি সব গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজের (বোতাম, লেবেল, সুতা বা ইলাস্টিক)। এগুলোর বেশিরভাগই সিঙ্গেল আইটেম বিকিকিনি করে। আরো আছে জিপারের দোকান, ফিতা বা দড়ির দোকান, গ্যাবার্ডিনের থান কাপড়ের দোকান, কার্টনের দোকান, গাম টেপের দোকান, প্লাস্টিক কভারের দোকান।
তারপর আছে সাইজ লেবেল, মেইন লেবেল, কেয়ার লেবেল, স্টিকার ইত্যাদির দোকান। শুধু বোতামের যে দোকান, তাতে কম করেও ১০০ পদের বোতাম দেখার সুযোগ হয়। এগুলো রঙে যেমন, গড়নে আর আকারেও অনেকরকম। এমন দোকানে স্টপার আর লকপিনও পাওয়া যায়, যেগুলো ব্যবহৃত হয় জ্যাকেটে।
ফিতা বা দড়ির দোকানে আধা সেন্টিমিটার থেকে ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ফিতা পাওয়া যায়। ৪৫ গজ ফিতায় এক চাক্কি হয়। ৫.৫ সেন্টিমিটার প্রস্থের এক চাক্কির দাম ২০০ টাকা, ৮ সেন্টিমিটার প্রস্থের চাক্কির দাম ৪০০ টাকা। দড়ির মধ্যে আছে জুতার, ব্যাগের, বস্তা বাঁধার বা ভ্যানে মালপত্র গুছিয়ে রাখার দড়ি। কোনোটার ইলাস্টিসিটি আছে, কোনোটার নেই। ফুট দরে বিক্রি হয় এগুলো।
এবার বলি লেবেলের দোকানের কথা। লেবেলের বাহার দেখেও চোখ কপালে তুলতে হয়। বেশিরভাগই চৌকোনা বা আয়তাকার। মেইন লেবেল হলো যার গায়ে কোম্পানির নাম এবং মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা থাকে, কেয়ার লেবেলে কটন, পলিস্টার ইত্যাদির ভাগ ও সংরক্ষণের উপায় লেখা থাকে। তবে সাইজ লেবেল সাধারণত কাপড়ের তৈরি হয়। এগুলোয় এম (মিডিয়াম), এল (লার্জ) কিংবা ইঞ্চি ধরে ২২-৩০ ইত্যাদি লেখা থাকে। একেকটি সাইজ লেবেল ১-২ টাকায় বিক্রি হয়।
এগুলোর কিছু স্থানীয়ভাবে তৈরি (লোকালি মেইড), কিছু আছে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির। সাধারণত গার্মেন্টগুলো অর্ডার (ফরমায়েশ) পাওয়ার পর নানা কারণে প্রয়োজনের অধিক কাপড় ও অ্যাক্সেসরিজ জোগাড় করে। ফরমায়েশ পূরণ হওয়ার পর বেঁচে যাওয়া কাপড়গুলো ইনট্যাক্ট (ক্ষতিগ্রস্ত নয়) তকমা পেয়ে ঝুটপট্টিতে আসে। এগুলো কিন্তু ঝুট নয়; ঝুট হলো ছাট কাপড়, মানে কেটে বাদ দেওয়া ছোট কাপড়। তবে ঝুট বস্তায় অনেক সময় সুতা, ববিন, বোতাম, জিপার, সুতা, দড়ি, প্লাস্টিক কভারও থাকে।
কেন মিরপুর উপযুক্ত স্থান
রশিদ মাতব্বর যখন ব্যবসা শুরু করেছিলেন, তখন গার্মেন্ট মালিকেরা ঝুটকে ঝামেলা মনে করত। প্রোডাকশন ম্যানেজার বা তার অধস্তনদের একটা বাড়তি ইনকাম ছিল ঝুট। কেজি দরে বিক্রি করার কথাও মাথায় আসেনি কারোর। ঝুটপট্টির দোকানগুলো ছিল টিনের চালাঘর; অ্যাক্সেসরিজের দোকান তখন ছিল না। এখন তো অ্যাক্সেসরিজের দোকানই বেশি, ঝুটের দোকান ছড়িয়ে পড়ছে কোনাবাড়ি, আশুলিয়া ইত্যাদি জায়গায়। মালিকরাও এখন ঝুটের প্রতি মনোযোগী, আয়-রোজগার তো একেবারে মন্দ নয়। ঝুটের ব্যবসা প্রথম শুরু হয়েছিল টঙ্গীতে, তারপরই মিরপুরে, জানালেন রশিদ মাতব্বর।
জানতে চাইলাম, মিরপুর কেন এ ব্যবসার উপযুক্ত স্থান হয়ে উঠেছিল? রশিদ মাতব্বর উত্তর দিলেন, 'ঝুট ব্যবসার জন্য বেশ পরিমাণে জায়গা লাগে। মিরপুরে আগে খালি জায়গা ছিল। ব্যবসা এখান থেকে চলে যাচ্ছে, কারণ খালি জায়গা নেই, কোনাবাড়িতে গিয়ে দেখবেন, বড় বড় সব গোডাউন।'
রশিদ মাতব্বরের কাছাকাছি সময়ে ব্যবসা শুরু করেন চাঁদপুরের হজরত আলী। তার এক বন্ধু ছিল মজিবর প্রধান। দুজনের ছিল গলায় গলায় ভাব। মতলব বাজারে তাদের সকাল-বিকাল একসঙ্গেই দেখা যেত। মজিবরের একসময় চাকরি হয়ে গেলে হজরত আলী একা হয়ে যান।
আলী বিয়ে করেছিলেন এক শিল্পপতির বোনকে। ওই শিল্পপতির মিরপুর ১ নম্বরে একটি গার্মেন্ট ছিল। আলী সে সূত্র ধরে ঢাকায় আসেন এবং ঝুটের ব্যবসা করতে লেগে যান। আলীর উন্নতি ঘটে অল্পদিনেই। দেখাদেখি বন্ধু মজিবর প্রধান একসময় চাকরি ছেড়ে ঝুট ব্যবসায় যুক্ত হন।
তেরোশ টাকায় ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন মজিবর, মুলি বাঁশের বেড়ার ঘর। এখন তার ছেলে সোহেল প্রধান এক শাটার পরিমাণ ঘরের ভাড়া দেন ১৫ হাজার টাকা। বস্তা ধরে মাল কেনেন সোহেল। একটি বস্তায় ৮০ থেকে ৮৫ কেজি ঝুট থাকে।
অন্য ব্যবসায়ীদের মতো সোহেলেরও সখ্যতা আছে গার্মেন্ট কর্মচারীদের সঙ্গে। ঝুট বিক্রির জমলে তারা ফোন দেন। সাধারণত পাঁচ থেকে বিশ টাকা কেজি দরে ঝুট কেনা হয়। বস্তা আনার পর দোকানের চাতালে ঢেলে দেওয়া হয়। তারপর বাছাইকারীদের সহযোগে রঙে রঙে ছাট বা কাটা কাপড় আলাদা করেন সোহেল। জিপারগুলো রাখেন আরেকধারে, বোতাম রাখেন অন্য একটা ঝুড়িতে। কোনো কোনো সময় দীর্ঘ দৈর্ঘ্যের লেস পান, আবার জর্জেটের এত বড় টুকরা পান যা তিনটি কামিজে ব্যবহার করা যাবে।
বাছাইকারীরা মজুরি পায় ২০০ বা ২৫০ টাকা। বাছাই শেষে ছাট বা কাটা কাপড়, মানে ঝুট বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। ঝুট কাপড়ের অধিকাংশই রপ্তানি হয় চীন ও ভারতে।
ঝুট সুতা থেকে নতুন কাপড়
মোটাদাগে ঝুটপট্টির কাপড়গুলো দুই ধরনের—পুনর্ব্যবহারযোগ্য (ইনট্যাক্ট) ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতযোগ্য (ঝুট)। ঝুট থেকে প্রথমে তুলা তারপর সুতা, আর সুতা হয়ে গেলে তা থেকে নতুন কাপড়।
সিনথেটিক (কৃত্রিম) তন্তুর প্রক্রিয়াজাতকরণও শুরু হয়েছে আমাদের দেশে। গেঞ্জির কাপড়ের ঝুটের (কাটপিস নামে পরিচিত) অবশ্য বিশেষ একটা ব্যবহার আছে—সেটা পরিষ্কারক হিসেবে, আর তা বন্দুকের নল থেকে কম্পিউটারের কিবোর্ড পর্যন্ত। ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এগুলো।
বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের চাহিদা ৭০ ভাগ ছাড়িয়ে যাবে শীঘ্রই। কৃত্রিম তন্তুর সুতা ও কাপড় তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়ছে আমাদের দেশেও। এখন দেশে ৭০টি কারখানা পলিয়েস্টার ও ভিসকস কাপড়ের কৃত্রিম তন্তু থেকে সুতা তৈরি করছে। বিটিএমএ তাই ঝুট রপ্তানি বন্ধ করার পক্ষে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ওয়েস্ট প্রসেসরস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিজিডব্লিউপিইএ) প্রতিবেদনে বলা হয়, দারুণ সম্ভাবনাময় একটি খাত হতে পারে ঝুট রপ্তানি। আর বিজিএমইএ সূত্রে জানা যাচ্ছে, দেশে বছরে চার লাখ টন ঝুট উৎপাদন হয় এবং ৩০০ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বিটিজিডব্লিউপিই এর সদস্যদের অনেকেই ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্কসহ ইউরোপের আরো দেশে ঝুট রপ্তানি করে। গত পাঁচ বছরের হিসাবে যার অর্থমূ্ল্য গড়ে ৫ থেকে ৬ কোটি ডলার। দেশে ঐতিহ্যবাহী কৌশল ব্যবহার করে কাপড় থেকে সুতা উৎপাদন করা হয়। এজন্য ছোট ছোট অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কিশোরগঞ্জ, পাবনার ঈশ্বরদী, নওগাঁ ও কুড়িগ্রামে।
২০ ট্রাক প্রতিদিন
মিরপুরের ঝুটপট্টি থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০টি ট্রাক দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং ভারত অভিমুখে ছুটে যায়। প্রতিটি ট্রাকে গড়ে ৮ টন করে ঝুট থাকলে মোট ওজন দাঁড়ায় ১৬০ টন, অর্থাৎ ১ লক্ষ ৬০ হাজার কেজি। প্রতি কেজি ২৫ টাকা করে ধরলে ৪০ লক্ষ টাকার ঝুট দিনে বিক্রি হয় ঝুটপট্টি থেকে, জানালেন কাটা কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির হিসাবরক্ষক মোজাম্মেল হক।
তিনি আরো জানান, ১০-১২ হাজার শ্রমিকের এখানে কর্মসংস্থান হচ্ছে। ঝুট ও অ্যাক্সেসরিজের দোকান মিলে ৩০০টি দোকান সমিতিতে নাম লিখিয়েছে।
ঝুট ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করেন সমিতি মারফত। সমিতি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেয়, বাজারের শৃঙ্খলা বজায় রাখে। নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা কর্মীও আছে সমিতির। বিনিময়ে সমিতি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মুনাফার ১ শতাংশ গ্রহণ করে থাকে।
বেনারসী পল্লীর গা ঘেঁষে ঝুটপট্টি। মিরপুর ১০ গোলচক্করের পশ্চিম ও পূর্বদিকে গড়ে উঠেছে সস্তা পোশাকের বিরাট বাজার। তাই মোজাম্মেল হক মনে করেন, সহসাই ঝুটপট্টি খালি হয়ে যাবে না। ঝুট ব্যবসায় নতুন করে অনেকে বিনিয়োগ করছেন, কারণ ৩ লাখ টাকায়ও এ ব্যবসা শুরু করা যায়।
তবে সোহেল প্রধান হুঁশিয়ার দিলেন, 'এতে লাভ আছে সত্যি, কিন্তু না বুঝে ব্যবসা করতে এলে পথে বসতে হবে।'