মীর আক্তারের হাতে ৯,২৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত দেশের একমাত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের হাতে বর্তমানে ৯ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার ৩৩টি প্রকল্প রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বর্তমানে চলমান কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে: ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন, পায়রা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ ও সারা দেশে অনেকগুলো সড়ক প্রকল্প।
২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স কমে গেলেও বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, অনেকগুলো সরকারি প্রকল্পের কাজ পাওয়ায় মীর আক্তার ভবিষ্যতে ভালো করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে যে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট থেকে মূলধন বরাদ্দ বাড়ায় নির্মাণ খাত উপকৃত হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন আগের বছরের তুলনায় ৯.২১ শতাংশ বেড়ে ২.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত বাজেট বরাদ্দ হলো ২.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা।
মীর আক্তারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও বাণিজ্য বাধা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও জ্বালানির চড়া দামসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের প্রভাব পড়েছে দেশে।
২০২২ সালে গড় বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৭ শতাংশ। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে তা ৯.৭ শতাংশে ঠেকেছে, যা দশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালজুড়ে মূল্যস্ফীতির এই হার বজায় থাকবে বলে প্রক্ষেপণ করেছে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া ২০২৫ সালে মূল্যস্ফীতি ৭.৭ শতাংশে নামবে বলেও প্রক্ষেপণ করেছে সংস্থাটি।
মীর আক্তারের চেয়ারপারসন সোহেলা হোসেন বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছেন, এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে নির্দিষ্ট পর্যায়ের দক্ষতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে মুনাফা ধরে রাখতে কাজ করেছে মীর আক্তার। ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করতে তারা বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) বুক-বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৬০ টাকা দরে প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় মীর আক্তার। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা প্রত্যেকে শেয়ারপ্রতি ৫৪ টাকায় ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট রেট পেয়েছেন।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর ছিল ৫০ টাকা ৮০ পয়সা। প্রাইস আর্নিং রেশিও (পি/ই)-এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের অনেক নিচে।
তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট দায় ছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা মোট সম্পদের ৫৯ শতাংশ এবং শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটির চেয়ে ২৩৮ শতাংশ বেশি। ঋণের সুদের হার বাড়লে কোম্পানিটি মুনাফার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অসুবিধায় পড়বে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।