বন্দি ও যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ‘ভাল অগ্রগতি’ হয়েছে: কাতারের প্রধানমন্ত্রী
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান বিন জসিম আল থানি বলেছেন, মিসর, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে 'ভাল অগ্রগতি' হয়েছে।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এই তিন দেশের গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী সোমবার (২৯ জানুয়ারি) জানান, তাদের মধ্যে একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ চুক্তির মধ্যে ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি ও অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আটলান্টিক কাউন্সিল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এই প্রস্তাবটি হামাসের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এবং তাদের এমন জায়গায় নিয়ে আসার আশা করছি, যেখানে তারা এ প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ও গঠনমূলকভাবে জড়িত থাকবে।'
কাতারের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'হামাস আলোচনায় অংশ নেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দাবি করেছিল।'
তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি আমরা সেই জায়গা থেকে এমন এক জায়গায় এসে পৌঁছেছি, যেটি সম্ভবত ভবিষ্যতে আমাদের স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যাবে।'
আল থানি বলেন, 'কয়েক সপ্তাহ আগে আমাদের আলোচনা যে পর্যায়ে ছিল, এখন তার চেয়ে অনেক ভাল পর্যায়ে রয়েছে।'
ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে। হামলায় ইসরায়েলে অন্তত এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়।
জবাবে গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এসব হামলায় গাজায় ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরের শেষের দিকে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। এই সময়ে শতাধিক জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি দুই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ক্রমাগত চাপের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কারণ জিম্মিদের পরিবার তাদের স্বজনদের ফিরে পেতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলি বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ও গাজায় হামাসের শাসনব্যবস্থা মেনে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হামাসের শর্ত মেনে নেওয়ার অর্থ হলো সশস্ত্র এই গোষ্ঠীকে 'অক্ষত' অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া এবং ইসরায়েলের সৈন্যরা 'ব্যর্থ' বলে প্রতীয়মান হওয়া।