সরস্বতী প্রতিমার কারিগরেরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে উৎসবের আমেজ। চারদিকে সাজ সাজ রব। দেয়ালে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুনগুলো জানান দিচ্ছে- পহেলা ফাল্গুনে এসেছেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী। মাঘের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বাগদেবী বন্দনার জন্য প্রস্তুত প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট।
সরস্বতী বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী। সনাতন ধর্মালম্বী বিদ্যার্থীরা অত্যন্ত ভক্তি ভরে দেবীর আরাধনা করেন। ফলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতী পূজা হয় জাঁকজমকপূর্ণ। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বীণাপাণির বন্দনা যেন আর সবাইকে ছাড়িয়ে যায়। আলাদাভাবে পূজা মণ্ডপের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আয়োজনসহ আশেপাশের পূজার জন্য প্রতিমা নির্মাণে বেশ ব্যস্ত সময় কাটে কারিগরদের। দিন কয়েক আগে কাজের ফাঁকে তাদের সঙ্গে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কথা হয়। তারা জানালেন জীবনের গল্প।
কারিগরদের কাহিনি
সুকুমার পালের বাবা ছিলেন নামকরা প্রতিমা শিল্পী। তবে তিনি চাননি সন্তানেরা এই কাজে আসুক। সুকুমার অবশ্য খুব ছোটবেলা থেকেই বাবার দেখাদেখি মূর্তি গড়ার চেষ্টা করতেন। একবার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। সেই শুরু। এরপর অল্পদিনেই লেখাপড়ায় ভালো সুকুমার নাম করেন প্রতিমা কারিগর হিসেবে। ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেও চাকরির পেছনে ছোটেননি তিনি। ১৯৮৯ সালে কাজ শুরু করেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেই থেকে আজ ৩৬ বছর ঐতিহ্যবাহী এ মন্দিরের প্রতিমা শিল্পী তিনি।
এবারের সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সুকুমারের ব্যস্ততা শুরু হয়েছে কয়েক মাস আগে থেকেই। তাকে সহযোগিতা করছেন আরও দু'জন কারিগর। সবার বাড়িই মানিকগঞ্জ। রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তারা। তাদের শৈল্পিক ছোঁয়ায় একের পর এক গড়ে উঠছে সরস্বতী মূর্তি। এর পর সেগুলোয় করা হয় নানা অলঙ্করণ।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দিরেও চলছিল বিশাল কর্মযজ্ঞ। এখানে রতন পালের নেতৃত্বে কাজ করেছেন ১৩ জন কারিগর।
রতন পাল গোপালগঞ্জের মানুষ। পারিবারিকভাবে মাটির কাজ করলেও প্রতিমা নির্মাণ করতে শেখেন অনেক পরে। মাদারীপুরের নিরঞ্জন পাল তার শিক্ষাগুরু। এবার তিনি কালী মন্দিরের আশেপাশের অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কাজ পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডারই ছিল ৪০টির মতো।
তার কাছে কারিগর হিসেবে কাজ করেন বিবেক পাল। জানালেন, বছরের ৮ মাস বিভিন্ন পূজা উপলক্ষে ঢাকায় কাজ করেন তারা। তবে দূর্গা ও সরস্বতী পূজার সময় সবচেয়ে ব্যস্ততা যায়। এবারের পূজার আগে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১টা পর্যন্ত কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের প্রতিমায় থাকে ভিন্নতা, থাকে নিজস্ব শৈলী। তাই দরকার হয় বাড়তি দক্ষতার। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগই প্রতিমা বানানোয় ভরসা রেখেছিলেন রতন পালের ওপর।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রান্ত দত্ত জানালেন, এই প্রতিমা নির্মাতাদের দক্ষতার ওপর তার ভরসা আছে। তাই এদের কাজ দিয়েছিলেন।
তিনি বললেন, 'যারা এই ঐতিহ্যবাহী নির্মাতা, তারা বংশানুক্রমে পেয়েছে, তাদের ওইটা আলাদা। ওরা এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে, এটা কাইন্ড অব আর্ট।'
কালী মন্দিরের উঠান জুড়ে সাজানো ছিল অসংখ্য দেবী মূর্তি। ক্রেতারা আসছিলেন। কেউ নতুন অর্ডার দিচ্ছিলেন, কেউ বা অর্ডার করা প্রতিমাটির অগ্রগতি দেখছিলেন। ভেতরের একটি ঘরে বসে নকশা করছিলেন রতন পাল। বললেন, পূজার আগের দিন সব প্রতিমা অক্ষতভাবে পৌঁছে দিতে পারলেই তার স্বস্তি।
বড় ক্রেতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে প্রতিমা গড়েছেন কারিগর শ্রীপতি পাল। বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়। গত ৩০ বছর ধরে প্রতি সরস্বতী পুজোয় তিনি সদলবলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। থাকেন পুজোর দিন পর্যন্ত। এখানেই থাকা-খাওয়া, এখানেই কাজ। এবার শ্রীপতির দলে সদস্য মোট সাতজন। তারা সবাই বৃহত্তর ফরিদপুরের মানুষ।
তাদের মূল ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আশেপাশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিমা বানানোর অর্ডার তারা পেয়েছিলেন এবার। পুজোর একদিন আগে দিতে হবে। ফলে বেশ ব্যস্ততা কাটছিল তাদের।
একটু দূরেই কাজ করছিলেন আরেক কারিগর। নাম তার অনাদি পাল। ফরমায়েশি কাজ বাদে নিজস্ব ঢঙে প্রতিমা বানাচ্ছিলেন তিনি। বললেন, যারা রেডিমেড কিনতে চায়, এগুলো তাদের জন্যই। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর কাজ কম পেয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
অনাদি বললেন, 'অন্যান্য বছর যেমন পাই, এ বছর তা পাইনি। অন্যান্য বছর সাধারণত ৪০টার মতো কাজ পাই। এবার ২০ টার মতো পেয়েছি।'
এরই মধ্যে সেখানে এলেন আজিমপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিকের একদল শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে পূজা আয়োজন করবেন। এসেছেন প্রতিমা পছন্দ করে দর করতে। শেষ অবধি দামে না হওয়ায় তারা রওনা দিলেন রমনা কালী মন্দিরের দিকে।
কালী মন্দির প্রাঙ্গণেও বেশিরভাগ প্রতিমার গায়েই ঝুলছিল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভাগের ট্যাগ।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমা দেখতে এসেছিলেন অভ্যর্থনা সম্পাদক প্রাচুর্য সরকার। প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে সাজগোছ, সব দায়িত্বই এবার তার ছিল।
তিনি বলছিলেন, 'আমরা নিজেরাই একটা ডিজাইন ওদের দিয়েছি। সেই অনুযায়ী ওরা আমাদের বানিয়ে দেবে। গত বছর ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বানিয়েছিলাম, এবার এসেছি রমনায়। আমরা কলেজের ৪৯ তম ব্যাচ, আমাদের ইচ্ছা এবার একটি ভিন্নধর্মী পূজা আয়োজনের। মূর্তিটা যাতে ডিফারেন্ট হয়, সেজন্যই এখানে আসা।'
নানা আকারের প্রতিমা
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ছোট একটি ঘরে চলছিল প্রতিমায় রঙ লাগানোর কাজ। ছোট ছোট মূর্তিগুলোতে সাদা রঙের প্রলেপ দিচ্ছিলেন দুই কারিগর। তাদের একজন রুহিদাস পাল। তিনি জানালেন, তাদের মূর্তিগুলো যায় মূলত বাসাবাড়িতে। তাই আকারে ছোট।
রমনা কালী মন্দিরের বাইরের দিকে সারি সারি সাজানো রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফরমায়েশি প্রতিমা। সবগুলোই আকারে বেশ বড়। তবে অন্য একটি ঘরে চোখে পড়ে ছোট আকারের আরও অনেকগুলো মূর্তি।
কারিগর রতন পাল বললেন, 'বাসাবাড়িতে একদিনের পুজোর জন্য অনেকে সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট প্রতিমা ক্রয় করেন। আমাদের কাছে সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকার থেকে শুরু করে ৬৫ হাজার টাকার পর্যন্ত প্রতিমা আছে। বাসাবাড়িতে ছোট প্রতিমাই বেশি যায়। তবে একটা ফ্লাটে যদি দশ ঘর হিন্দু থাকে, তারা অনেক সময় বড় প্রতিমা নেয়।'
ক্রেতাদের নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী আলাদা আলাদা ডিজাইনের প্রতিমা বানিয়ে থাকেন রতন। তবে সেক্ষেত্রে দাম বেড়ে যায় কাজের।
তিনি বলছিলেন, 'আসলে ক্যাটালগের কাজ তো অনেক হিসাব করে করতে হয়। অনেক কঠিন। নতুন নতুন জিনিসপাতি ব্যবহার করতে হয়। ক্রেতাদের চাহিদাও অনেক রকম থাকে। তাই দামটাও বেশি।'
বিভিন্ন আকারের প্রতিমা তৈরিকে ইতিবাচকভাবে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক প্রণব সাহা। তিনিও নিজের বাড়ির জন্য প্রতিমা অর্ডার করতে এসেছিলেন।
তিনি বলছিলেন, 'আপনি যদি রায়েরবাজার মন্দিরে যান, সেখানে দেখবেন ছোট ছোট প্রতিমা, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্তের হিন্দুদের জন্য। সবার সামর্থ্য সমান না। এখানে দাম বেশি, বড়, কাস্টমাইজড। ওখানে ছোট আকারের মূর্তি, দাম কম। ওই মার্কেটগুলা পুরাতন। দরকার আছে এগুলোর।'
উপকরণের দাম বেড়েছে, বাড়েনি প্রতিমার
অনাদি পাল বলছিলেন, 'আগে যে রঙের দাম ছিল ২০০ টাকা, এখন সেই রঙ ৫০০ টাকা। সবকিছুর দাম দ্বিগুণেরও বেশি। আগে একটা কারিগর আনছি ১০-১৫ হাজার টাকা দিয়ে, এখন ৩০ হাজার টাকা দেওয়া লাগছে।'
গত ১০ বছর ধরে তিনি জগন্নাথ হলের প্রতিমা নির্মাতাদের সাথে কারিগর হিসেবে আসছেন। এর আগে এত বেশি খরচের সম্মুখীন হননি।
মূর্তি বানানোর প্রয়োজনীয় সব উপকরণ নিজেরা সংগ্রহ করেন বলে দাম নির্ধারণ করতে হয় সেসব খরচ মাথায় রেখেই। তবে এ বছর খরচ যত বেড়েছে, প্রতিমার দাম তত বাড়াতে পারেননি। ফলে তাদের লাভ কমেছে।
অনাদি পাল বলেন, 'প্রতিমার দাম কিন্তু এত বাড়েনি। প্রতিমার দাম বড়জোর এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা বেড়েছে। ছোট প্রতিমার দাম তো বরং কমেছে। আগে বিক্রি করতাম তিন হাজার টাকা করে। এখন দুই-আড়াই হাজারে বিক্রি করা লাগে।'
একই সমস্যা রতন পালদের। ঢাকা শহরে মাটির দাম খুব বেশি হওয়ার গ্রাম থেকে মাটি নিয়ে আসেন তারা। কাঠ, খড়, বাঁশ অবশ্য ঢাকা থেকেই কেনেন। নকশা করা ছাঁচে মাটি বসাতে বসাতে রতন জানালেন, সবকিছুর দাম বাড়ায় খুবই অসুবিধায় পড়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার তো দুই সংসার চালাতে হয়। গ্রামে একটা, এখানে এতগুলো কারিগর নিয়ে আরেকটা। আবার ওদেরও পরিবার আছে। ওদেরও তো কিছু অর্থ দিতে হয় গ্রামে পাঠানোর জন্য।'
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বললেন, 'প্রতিমা বানাতে তো অনেক কিছুই লাগে। খড়, বাঁশ, চাটাই, কাঠ, মাটি লাগে দুই-তিন পদের। গ্রাম থেকে ট্রাক ভরে নিয়ে আসি। মাটি কম পড়লে ঢাকার আমিন বাজার থেকে কিনি। দাম বাড়ছে সবকিছুর। কিন্তু প্রতিমার তো সেরকম মূল্য পাচ্ছি না।'
নতুন প্রজন্মকে কাজে আনার ক্ষেত্রে দ্বিধা
বাঁশ-কাঠ-মাটি দিয়ে যারা এই অসাধারণ শিল্প সৃষ্টি করেন বছরের পর বছর, জনসাধারণের কাছে তারা তেমন কোনো শিল্পীর মর্যাদা পান না বলে আক্ষেপ সুকুমারের। তাদের দেখা হয় নিছকই প্রতিমা কারিগর হিসেবে।
সুকুমার বললেন, 'আমি বাংলা ১৩৯৫ সালে বিসিক আয়োজিত এক শিল্পকর্ম প্রতিযোগিতায় সারাদেশে প্রথম হয়েছিলাম। এই যে রাস্তার ধারে যত মাটির টেরাকোটা বিক্রি করতে দেখেন, এগুলোর প্রথম দিককার উদ্যোক্তা কিন্তু আমি। অথচ শিল্পী হিসেবে তেমন মর্যাদা পাই নাই।'
একসময় প্রতিমা নির্মাণে অর্থ থাকলেও করোনার পর থেকে লাভ কমেছে অনেকাংশে। কঠোর পরিশ্রম করলেও আয় কম হওয়ায় অনেকেই অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। মাস্টার্স পাশ করায় চাকরির একাধিক সুযোগ ছিল সুকুমারের। তবে দুর্নীতির মাধ্যমে কোনো চাকরি গ্রহণের পক্ষপাতী ছিলেন না তার বাবা। তাই এই পেশাতেই তিনি কাটিয়ে দিয়েছে জীবন। যতদিন বাঁচবেন, এই পেশাকেই আঁকড়ে থাকবেন।
সুকুমার বলছিলেন, 'এখন যে কয়টা দিন আছি, যদি সুস্থ থাকি, ফিটনেস ধরে রাখতে পারি, তাহলে এ কাজ চালিয়ে যাব। পরবর্তী সময়ে আমার বংশধরেরা কী করবে, সেটা তাদের বিবেচনা।'
সুকুমার দ্বিধাগ্রস্ত হলেও অনেক কারিগরই জানালেন নতুন প্রজন্মকে তারা এ কাজে আনবেন না।
অনাদি পাল জানালেন, 'পরের প্রজন্মকে এই কাজে আনার ইচ্ছা নাই তার। তবে প্রভু কী করবে তা তো বলা যায় না। যদি পড়াশোনা না হয়, সবার মাথা তো সমান না, তাহলে আসবে। নইলে আনব না। আমি পড়াশোনা করি নাই, এই কাজ করি, আমার ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়ে।'
একই কথা রতন পালের। তিনি বলেন, 'ইচ্ছা আছে ছেলেদের এই পেশায় আনব না। লেখাপড়া করিয়ে অন্যভাবে প্রতিষ্ঠিত করব। এ কাজে এখন আগের মতো মূল্যায়নও নেই। সেই রকম টাকা-পয়সাও পাওয়া যায় না। নিজে কাজ শিক্ষা করছি, কাজ করি। ছেলেদের দিয়ে এই কাজ করাব না।'