‘সীতা-পূজারি অনেক, আকবর সুদক্ষ শাসক’: সিংহ-সিংহীর নাম বদলাতে বললেন কলকাতা হাইকোর্ট
সিংহ 'আকবর' ও সিংহী 'সীতা'কে নতুন নাম দিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে বলেছেন কলকাতার উচ্চ আদালত।
শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে প্রাণী দুটোকে একই খাঁচায় রাখার পর এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এগুলোর নাম নিয়ে আপত্তি তোলে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শুনানিশেষে বিচারপতি সুগত ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ যেকোনো বিতর্ক এড়াতে প্রাণী দুটোকে অন্য কোনো নাম দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশনা দেন।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানান, হিন্দুদের দেবী সীতাকে ভারতের বড় সংখ্যক মানুষ পূজা করেন। আর আকবর ছিলেন একজন সুদক্ষ ও সফল মোগল সম্রাট।
বিচারপতি সুগত ভট্টাচার্য বলেন, 'মিস্টার কাউন্সেল, আপনি কি আপনার নিজের পোষা প্রাণীকে কোনো হিন্দু দেবতা বা মুসলিম নবীর নাম দেবেন … আমার মনে হয়, আমাদের কেউ কর্তৃপক্ষের আসনে থাকলে আমরা কেউ তাদের [সিংহজোড়া] আকবর ও সীতা নাম দিতাম না। কোনো প্রাণীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাম দেওয়ার কথা আমরা কেউ চিন্তা করতে পারি?'
'এ দেশের বড় একটি অংশে সীতাকে পূজা করা হয় … সিংহের নাম আকবর দেওয়ার বিষয়েও আমি বিরোধী। তিনি ছিলেন একজন সুদক্ষ, সফল ও অসাম্প্রদায়িক মোগল সম্রাট,' বিচারক আরও বলেন।
তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতকে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রাণী দুটোকে আনার আগেই ২০১৬ ও ২০১৮ সালে সেগুলোর নামকরণ করেছিল ত্রিপুরা চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ।
সিংহ ও সিংহীকে একসঙ্গে রাখা হিন্দুদের জন্য অসম্মানজনক উল্লেখ করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি ছিল সিংহীর নাম পরিবর্তন করার।
তবে ভারতের চিড়িয়াখানায় ভারতীয় দেব-দেবীর নামে প্রাণীর নাম রাখা নতুন কিছু নয়। দিল্লি জুওলজিক্যাল পার্কের একটি সাদা বাঘের নামও সীতা। এছাড়া মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কের একটি চীতার নাম রাখা হয়েছে হিন্দুধর্মের আগুনের দেবতা অগ্নির নামে।