মেয়ার্স দাপটে চট্টগ্রামকে উড়িয়ে ফাইনালের রেসে তামিমরা
ম্যাচের পর ফরচুন বরিশাল এখন সুখী পরিবার। দাপুটে জয়ে ফাইনালে পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে তামিম ইকবালের দল। আরও একটি কারণে বরিশালকে সুখী মনে হবে তাদের আজকের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে। লিগ পর্বে দুবারের সাক্ষাতে বরিশালকে পাত্তাই দেয়নি তারা, দুই ম্যাচেই জেতে চট্টগ্রাম। কিন্তু ম্যাচটি যখন বাঁচা-মরার, তখনই বরিশালের বিপক্ষে খেই হারাল দলটি। চট্টগ্রামকে অল্প রানে আটকানোর পর ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্স ঝড়ে হেসেখেলেই জিতলো বরিশাল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। এই জয়ে ফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগোলো তামিমের দল। আজ রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ম্যাচে হেরে যাওয়া দলের বিপক্ষে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে বরিশাল। আজকের হারে এবারের মতো বিপিএল যাত্রা শেষ হলো চট্টগ্রামের।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে চট্টগ্রাম। বরিশালের কাইল মেয়ার্স, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাইজুল ইসলামদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দলটির ওপেনার জশ ব্রাউন ও অধিনায়ক শুভাগত হোম ছাড়া কেউ-ই লড়াই করতে পারেননি। বাকি ৯ ব্যাটসম্যানের কেউ-ই ২০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। ৯ উইকেটে ১৩৫ রান তোলে চট্টগ্রাম। জবাবে শুরুতে উইকেট হারালেও চাপে পড়তে হয়নি বরিশালকে। দাপুটে ব্যাটিংয়ে দলের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন তামিম ও ম্যাচসেরা মেয়ার্স। ৩১ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বরিশাল।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই বিপদে পড়ে বরিশাল। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই নিজের উইকটটি বিলিয়ে আসেন ওপেনার সৌম্য সরকার। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই চট্টগ্রামের উইকেটরক্ষক ইমরান উজ্জামানের হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। যদিও শুরুর ধাক্কা বুঝতেই হয়নি বরিশালকে। দ্বিতীয় উইকেটে দাপুটে ব্যাটিং শুরু করেন তামিম-মেয়ার্স।
উইকেট হারানোর কথা ভুলে চড়াও হন তামিম, কিছুক্ষণ পরই তার সঙ্গে যোগ দেন মেয়ার্স। এরপর তার ব্যাটিং শো-ই চলেছে মূলত। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন তামিম-মেয়ার্স। চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ২৬ রান তোলেন মেয়ার্স, মারেন ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। ২৬ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ঝড়ো ৫০ রান করে আউট হন বরিশালের হয়ে সব ম্যাচেই ব্যাটে-বলে আলো ছড়ানো ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার
তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ডেভিড মিলারও। যদিও শেষ করতে পারেননি তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৩ বলে ২টি চারে ১৭ রান করেন। মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে জয় তুলে নেওয়ার কাজ সারেন অধিনায়ক তামিম। বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই ওপেনার ৪৩ বলে ৯টি চারে ৫২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।
এর আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রামের হয়ে কেবল ব্রাউন ও শুভাগত কিছুটা লড়াই করেন। ২২ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৩৪ রান করেন ব্রাউন। ১৬ বলে ৪টি চারে ২৪ রান করেন শুভাগত। এ ছাড়া টম ব্রুস ১৭, সৈকত আলী ১১, রোমারিও শেফার্ড ১১ ও নিহাদুজ্জামান ১০ রান করেন। বরিশালের মেয়ার্স, সাইফউদ্দিন ও ওবেদ ম্যাকয় ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান তাইজুল ইসলাম ও জেমস ফুলার।