কুষ্টিয়ায় পানের বরজে ভয়াবহ আগুনে কৃষকের সম্বল এখন পোড়ামাটি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পানের বরজে ভয়াবহ আগুন লেগে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন একাধিক কৃষক পরিবার। আগুন নেভাতে কুষ্টিয়া ও পার্শ্ববর্তী জেলার ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট একযোগে কাজ করেছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় বাহাদুর ও ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামের মাঠে পানের বরজে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রোববার (১০ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে লাগা আগুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। সন্ধ্যার পর আগুন সম্পূর্ণরূপে নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ঘটনাস্থল থেকে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, "পাটকাঠি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। তবে ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছান। আগুন নিয়ন্ত্রণে তারা একযোগ কাজ করেছেন।"
তবে কী কারণে আগুন লেগেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এটি অনুসন্ধান করতে সময় লাগবে। অনুসন্ধান হলে জানানো হবে।"
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা, মাধবপুরসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মাঠে দুপুর ১২টার কিছু আগে আগুন লাগে। দুপুর ১২টার দিকে খবর পেয়ে প্রথমে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট যায়। আগুন দ্রুত এক জমি থেকে আরেক জমির পাটকাঠির বানের বরজে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। বেশি রোদ ও হালকা বাতাস হওয়ায় আগুন দ্রুত মাঠের পর মাঠ ছড়িয়ে যায়। এছাড়া, মাঠে পানির উৎস কম থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা ও মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কামারুল আরেফিন, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, "আগুনের পুড়ে যেসব পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া করা হবে।"
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল আলিমের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পান বরজের সাথে থাকা তার প্রায় ৪ বিঘা জমির ফসল আগুনে পুড়ে গেছে। পুড়ে গেছে একটি বসতবাড়িও। বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি এখন কী করবেন।
একই অবস্থা কৃষক ইমানেরও। তার পুড়েছে পানের বরজ। পোড়া মাটি ছাড়া বরজের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
আড়কান্দি গ্রামের রোকনুজ্জামান রোকন জানান, "নজিরবিহীন অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হলো ভেড়ামারাবাসী। আগুনে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা পান বরজ, ফসলি জমি, বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।"
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)জহিরুল ইসলাম বলেন, "কীভাবে আগুন ধরেছে, তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সাথে কথা হয়েছে। তবে তদন্ত করে দেখা হবে আগুন দেওয়ার সাথে কেউ জড়িত আছে কিনা।"