কৃষি উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তি, গুণগত বীজ, আধুনিক স্টোরেজ নিশ্চিতের তাগিদ ব্যবসায়ী-বিশ্লেষকদের
কৃষিতে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনশীলতা অর্জনে কৃষক পর্যায়ে উন্নত জাতের বীজ সহজলভ্যকরণ, উচ্চফলনশীল ও জলবায়ু সহিষ্ণু জাতের খাদ্য উদ্ভাবন প্রক্রিয়া জোরদার এবং গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি খাতের ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা।
পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় হ্রাসে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন, উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা এবং কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপরেও জোর দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২০ মার্চ) ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মতিঝিল কার্যালয়ে 'অ্যাগ্রিকালচার, অ্যাগ্রো প্রোসেসিং অ্যান্ড বেজড ইন্ডাস্ট্রি' বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন আলোচকরা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কৃষির বিকাশে সবচেয়ে জরুরি হলো গুণগত ও উন্নত জাতের বীজ।
"বীজের মান উন্নয়নে আমাদের গবেষণায় জোর দিতে হবে। সেইসাথে প্রযুক্তির ব্যবহারে বেশি বেশি মনোযোগ দিতে হবে। কৃষিতে প্রযুক্তি যত উন্নত হবে, উৎপাদনশীলতা তত বৃদ্ধি পাবে," বলেন তিনি।
উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণের বিভিন্ন ধাপে কৃষিপণ্যের অপচয় রোধে সারাদেশে কুল-চেইন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেশে একটি ক্রপ ক্যালেন্ডার তৈরি করা জরুরি বলে জানান এফবিসিসিআই'র প্যানেল উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।
কৃষকদের সমস্যা সমূহ চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানে কৃষক সমিতি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রপ্তানি সম্প্রসারণে কমপ্লায়েন্স এবং গ্যাপ (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস) বাস্তবায়নের সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান শাইখ সিরাজ।
এ সময়, ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। গতানুগতিক ফসলের পাশাপাশি হর্টিকালচার, ফিশারিজ, লাইভস্টক, পোল্ট্রিসহ ডাল ও তেলবীজ জাতীয় শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নজর বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে- কৃষিপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন ও মজুদের সঠিক ও সমন্বিত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার পরামর্শ জানান কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। সেইসঙ্গে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে কৃষিপণ্যের স্টক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তারা।