২০২৬ সালে চাঁদে গাছ নিয়ে যাবেন আর্টেমিসের নভোচারীরা
চাঁদে মানুষের পা ফেলবার প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে প্রথমবারের মতো নভোচারীরা সেখানে একটি ক্ষুদ্র গ্রিনহাউজ স্থাপন করবেন। সব পরিকল্পনা ঠিক থাকলে ২০২৬ সালেই চাঁদে গ্রিনহাউজটি স্থাপন করা হবে।
নাসা ২০২৬ সালে আর্টেমিস ৩ মিশনে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারীদের সহায়তায় তিনটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এলইএএফ বা লিফ (লুনার ইফেক্টস অন অ্যাগ্রিকালচার ফ্লোরা)। এ গবেষণার মাধ্যমে চাঁদের মতো স্থানে (মহাকাশে) ফসলের অবস্থা কেমন হতে পারে তা পরীক্ষা করা হবে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) তিনটি পরীক্ষা নির্ধারণ করার পর সেগুলোর ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে নাসা কর্মকর্তারা লিখেছেন, "মহাকাশ-বিকিরণ এবং আংশিক মাধ্যাকর্ষণে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ, উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং পদ্ধতিগত 'স্ট্রেস' প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা প্রথম পরীক্ষা হবে লিফ।"
তারা আরো জানিয়েছেন, "উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং বিকাশের তথ্যসহ লিফের পরিমাপ করা পরিবেশগত প্যারামিটার থেকে বিজ্ঞানীরা চাঁদে এবং তার বাইরে মানুষের পুষ্টি ও জীবন ধারণের জন্য চাঁদে জন্মানো উদ্ভিদের ব্যবহার বুঝতে সক্ষম হবে।"
এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে রোবোটিক চ্যাং ই ৪ মিশনের মাধ্যমে চাঁদের অন্ধকার অংশে তুলা গাছ পাঠিয়েছিল।
লিফের বাইরে অন্য দুটো নতুন বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিষয়বস্তু হলো: লুনার এনভায়রনমেন্ট মনিটরিং স্টেশন (এলইএমএস) এবং লুনার ডিইলেকট্রিক অ্যানালাইজার (এলডিএ)।
এলইএমএস হলো একটি স্বাধীন সিসমোমিটারের স্যুট যা স্থাপনের পর দুই বছর পর্যন্ত চাঁদের কম্পন অনুসন্ধান করবে। এলডিএ চাঁদের রেগোলিথ (পুরু স্তরের খণ্ডিত এবং বিক্ষিপ্ত শিলা উপাদান যা চাঁদের সম্পূর্ণ পৃষ্ঠকে ঢেকে রেখেছে) পরিমাপ করবে একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করার উদ্দেশ্যে। এটি চাঁদের পৃষ্ঠতলের গঠন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে।
আর্টেমিস ৩ মিশনের মাধ্যমে চাঁদে লিফ, এলইএমএস এবং এলডিএ গবেষণা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা থাকলেও নাসা এটি এখনো নিশ্চিত করেনি।
আর্টেমিস ৩ এর ক্রু কারা হবেন সেটির ঘোষণাও এখনো দেওয়া হয়নি। কিন্তু নাসা প্রথমবারের মতো চাঁদে একজন মহিলা এবং একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
আর্টেমিস ৩ মিশনের মাধ্যমে ১৯৭২ সালের পর প্রথমবারের মতো মানুষ চাঁদে অবতরণ করবে। আর্টেমিস ২ মিশনের মাধ্যমে ২০২৫ সালে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার জন্য নভোচারী পাঠানো হবে। এদিকে আর্টেমিস ১ এর মাধ্যমে ২০২২ সালে নভোচারী ছাড়াই একটি সফল মিশন সম্পন্ন করা হয়েছিল।