অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নেমে আসবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতি সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সরকারের ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বছর শেষে মূল্যস্ফীতি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রোববার (৫ মে) জাতীয় সংসদে '২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন' উপস্থাপন করতে গিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ওয়াআসেকা বলেন, 'মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের নির্ধারিত অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার গত বছর থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে।
'তবে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দেখা যায়, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির চাপ প্রকট হয়েছে।'
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৪৯ শতাংশ। গত মার্চে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৮১ শতাংশ। এরপর মে মাসে বেড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্পে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম। ডিজেলের দামও কিছুটা বেড়েছে।
আলোচনায় রয়েছে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি। এদিকে এপ্রিল মাসে দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এই তাপদাহে ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতি আদৌ কমবে কি না, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক ব্যবস্থায় ঋণের সুদহার (ভারিত গড়) ছিল ৯.৩৬ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.১৪ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। সম্প্রতি সুদহার আরও বেড়েছে। ফলে বাজারে টাকার সরবরাহ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংসদে অর্থ প্রতিমন্ত্রি বলেন, 'বিগত কয়েক বছর ধরে কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য ভূরাজনৈতিক কারণে বৈশ্বিক অর্তনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব চলমান আছে, তা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। কিন্তু সব বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।'