টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কেন বেশি পছন্দের, জানালেন মুস্তাফিজ
২০১৫ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষেক মুস্তাফিজুর রহমানের। টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় পথচলা শুরু বাঁহাতি এই পেসারের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে সংক্ষিপ্তম এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মুস্তাফিজ। একটা সময়ে এসে গুঞ্জন ছড়ায়, সাদা বলের ক্রিকেটই বেশি উপভোগ করেন তিনি। ৯ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা মুস্তাফিজও তেমনই জানালেন। আরও নির্দিষ্ট করে বললেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই বেশি পছন্দ তার। কেন পছন্দ, জানালেন কারণও।
মুস্তাফিজের খেলা ম্যাচের হিসেব টানলেও প্রমাণ মিলবে, সাদা বলের ক্রিকেটেই বেশি সাচ্ছন্দ্য তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ১৫টি টেস্ট, ১০৪টি ওয়ানডে ও ৯৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বাংলাদেশের এই পেসার। কিন্তু তার অভিষেক থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৫০টি টেস্ট, ১৩৪টি ওয়ানডে ও ১২৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। সাদা বলের ফরম্যাটে সংখ্যাটা কাছাকাছি থাকলেও টেস্টে ব্যবধান অনেক।
এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় কোন ফরম্যাট বেশি টানে মুস্তাফিজকে। এবার তিনি নিজেই পরিষ্কার করলেন সাচ্ছন্দ্যের জায়গা নিয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বকাপের আগে স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলবে তারা। টেক্সাসের হিউস্টনে প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে আগামী ২১, ২৩ ও ২৫ মে ম্যাচ তিনটি অনুষ্ঠিত হবে। সিরিজ ও বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষবারের মতো ঝালিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ দলের সঙ্গে বেশিদিন প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি মুস্তাফিজের। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএল খেলে ২ মে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচ খেলে দলের সঙ্গে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিসিবির প্রকাশ করা একটা ভিডিওতে পছন্দের ফরম্যাট এবং পছন্দ করার কারণ নিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, 'ভালো লাগার প্রসঙ্গ এলে আমি টি-টোয়েন্টিটা খুব পছন্দ করি। এই ফরম্যাটে চাপ বেশি। এ কারণেই মনে হয় আমার ভালো লাগে। আমি চাপটা অনেক উপভোগ করি।'
দেশের হয়ে খেলার ব্যাপারটিকে গর্বের মনে করেন মুস্তাফিজ। কিন্তু এর মাঝে আছে আক্ষেপও। যে আক্ষেপ বড় টুর্নামেন্ট না জিততে পারার, বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠতে না পারার। তার ভাষায়, 'দেশের হয়ে খেলা তো একটা গৌরবের বিষয়। আমি সব সময় দেশের হয়ে খেলাটা উপভোগ করি। আমার মনে হয় যখন কোনো বড় টুর্নামেন্ট হয়, কোনো বড় ট্রফি জেতে; তখন বড় খেলোয়াড় বলা হয়। এই আক্ষেপ তো সব সময় রয়েই গেছে।'
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মুস্তাফিজের নাম হয়ে ওঠে 'কাটার মাস্টার'। 'দ্য ফিজ' বা 'ফিজ' নামেও ডাকা হতো, এখনও তাকে এই নামেই বেশিরভাগ সতীর্থরা ডাকেন। ধারাভাষ্যকারদের মুখেও শোনা যায় নামটি। কীভাবে নামটি হলো, সেই গল্পও শুনিয়েছেন তিনি, 'আমাদের যে বোর্ডটা আছে; ফিল্ডিং সেশন, বোলিং সেশনের বিষয় লেখা থাকে। ওই বোর্ডে যদি পুরো নাম লেখে, তাহলে অনেক বড় হয়ে যায়। এ কারণে লেখে ফিজ।'
প্রথম দিন নিজের সংক্ষিপ্ত নাম দেখে নিজেই বোঝেননি মুস্তাফিজ। মনে মনে ভেবেছেন, 'এটা আবার কে।' টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১০ উইকেটের মালিক বলেন, 'প্রথম দিন আমি বুঝিনি। ভেবেছি এটা কে। তারপর আমাকে বলেছে, এটা তুমি। এরপর থেকেই...এরপর আমি আইপিএলে খেলতে গিয়েছিলাম ২০১৬ সালে। ওখানেও ফিজ নামটা জনপ্রিয় হয়ে গেছে। এরপর থেকেই চলছে।'
দলের পেসারদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত মুস্তাফিজ, ভাগাভাগি করবেন আইপিএল অভিজ্ঞতা। আবার দলের অভিজ্ঞদের কাছ থেকে শিখবেনও, 'আমাদের যে পেস বোলাররা আছে; তাসকিন, শরীফুল, সাইফউদ্দিন (বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি), হাসান মাহমুদ। আমি যেটুকু শিখেছি, সেটা ওদের সঙ্গে ভাগাভাগি করব। এতে যদি আমাদের আরেকটু উন্নতি হয়। সাকিব ভাই আছে, রিয়াদ ভাই আছে। আমরা যদি কখনও আটকে যাই, মাঠে হতে পারে বা কোনো কিছু জানার থাকলে ভাইদের কাছ থেকে সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারব।'