পুরুষ কর্তৃত্বের র্যাপ মিউজিকে যেভাবে জায়গা করে নিলেন মরোক্কান তরুণী
উত্তর আফ্রিকান দেশ মরোক্কোয় র্যাপ মিউজিকে পুরুষদের একক আধিপত্য চলছে শুরু থেকেই। ২৪ বছর বয়সী তরুণী হুদা আবুজ সেই আধিপত্যে ভাগ বসিয়েছেন। হয়ে ওঠেছেন আরবিভাষী ওই দেশের অন্যতম শীর্ষ র্যাপ সিংগার।
তেতুয়ান শহরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম স্টাডিজে পড়েন হুদা। দীর্ঘকাল ধরেই হিপ-হপের এই অনুরাগী বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় হাতে তুলে নেন মাইক্রোফোন, করতে শুরু করেন পারফর্ম।
এ বছরের জানুয়ারিতে 'হোরস সেরিয়ে' ট্র্যাকে হাজির হন তিনি; পারফর্ম করেন মরোক্কোর সবচেয়ে বিখ্যাত তিন র্যাপ তারকা- এলগ্রান্ডে টোটো, ডন বিগ ও ড্রাগানভের সঙ্গে।
ইউটিউবে ১৬ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ হয়েছে ওই মিউজিক ভিডিওর। পুরো উত্তর আফ্রিকায় তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এটি। আর তাতেই একা গান গাওয়ার সাহস পান হুদা।
ফেব্রুয়ারিতে তিনি রিলিজ করেন তার অভিষেক সিঙ্গেল- 'কিকঅফ'। সমাজে নারীর জন্য সমান সুযোগের ব্যবস্থা না রাখার তীব্র সমালোচনা এই র্যাপ গানে করেন হুদা।
নিজের গানের জগত নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি একজন স্বশিক্ষিত শিল্পী। আমার গানের কথা নিজেই লিখি; নিজের ভাবনাই প্রকাশ করি।'
'পুরুষতান্ত্রিক সমাজে র্যাপ গান আমার কাছে প্যাশন ও আত্মরক্ষার উপায়,' বলেন 'খতেক' বা 'তোমার বোন' ছদ্মনামে পরিচিতি পাওয়া এই শিল্পী।
তবে হুদা একা নন; মরোক্কোতে আরও কয়েকজন নারী হিপ-হপ তারকার আবির্ভাব ঘটেছে। এদের মধ্যে মানালের গান 'স্লে'র ৪৪ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে ইউটিউবে।
নিজেকে নারীবাদী বলে পরিচয় দেওয়া হুদা জানান, ২০১১ সালে আরব গণবিক্ষোভের সময় মরক্কোতেও গণতন্ত্রের দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
যদিও গানকে তিনি রাজনৈতিক বিবৃতির হাতিয়ার করে তুলতে নারাজ, তবে 'মরোক্কোর অলিগলির ও গভীরতার একটা স্বাদ' বুনে যেতে চান গানে গানে।
র্যাপের দুনিয়ায় সর্বত্র পুরুষদের দাপট মরোক্কোর সমাজেও প্রভাব ফেলেছে, বলেন হুদা; তবে নিজের কাজ দিয়ে নারীদের হাতে কর্তৃত্ব এনে দেওয়ার লড়াই করে যেতে চান তিনি।
'কিকঅফ'-এ যেমনটা গেয়েছেন, 'তোমার চেয়ে আমি ভালো লিখি, যদিও তুমি আমায় স্রেফ একটা মেয়েই ভাবো।'
সূত্র: দ্য ন্যাশনাল (সংযুক্ত আরব আমিরাত)