প্রতিবাদের মুখে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল
নাগরিকদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে সিলেট নগরের পুরাতন ২৭টি ওয়ার্ডে নির্ধারণ করা নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।
গতকাল (শুক্রবার) রাতে নগর ভবনের সভাকক্ষে জরুরি সাধারণ সভা শেষে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরি সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলরবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিসিক মেয়র সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
এসময় মেয়র জানান, সকল হোল্ডিংয়ের অ্যাসেসমেন্ট রি-এসেসমেন্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে রি-অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে নতুন গৃহকর নির্ধারণ করা হবে। এর আগে একইসাথে ৪২টি ওয়ার্ডের হোল্ডিং সমূহে নতুন করে রি-এসেসমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরি বলেন, "পুরোনো ২৭ ওয়ার্ডের পাশাপাশি একই সাথে নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৫টি ওয়ার্ডের অ্যাসেসমেন্ট শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় অব্যাহত থাকবে।"
বকেয়া প্রদানের জন্য নাগরিকদের আহ্বান জানান মেয়র। এইসময় তিনি বলেন "কাউন্সিলরদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নাগরিকবৃন্দের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে ২৭টি ওয়ার্ডের হোল্ডিং ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট রি-এসেসমেন্ট বাতিল করে হোল্ডিংসমূহে নতুন করে রি-এসেসমেন্ট ও একই সাথে নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৫ টি ওয়ার্ডের অ্যাসেসমেন্ট কার্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
মেয়র আরও বলেন, "এর আগে আমি সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের কাছে বারবার বলেছিলাম, জনগণের জন্য অকল্যাণ হয় এমন কোনও সিদ্ধান্ত আমি নিবো না। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমার দায়িত্ব তাদের মতামতকে মূল্যায়ন করার।"
নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সিসিক মেয়র মেয়র বলেন, "নগরবাসীকে সাথে নগরীর কল্যাণে নিয়ে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। জনগণের প্রতিষ্ঠানে জনমত প্রাধান্য পাবে।"
এসময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরি, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, সচিবসহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে সিসিক সিটি করপোরেশন নতুন নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) অনুযায়ী ভবনমালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের নোটিশ দেওয়া শুরু করে।
এরপর নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবনমালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে নগরজুড়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর থেকে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন সংগঠন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে নিয়মিত আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শুরু হয়।