সাউদাম্পটনে আইরিশ রূপকথা
বেঙ্গালুরু ফিরলো সাউদাম্পটনে। একই প্রতিপক্ষ, লক্ষ্যও খুব কাছাকাছি। শুধু নায়ক আলাদা। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর পথে নিজের ব্যাটকে খোলা তরবারিতে পরিণত করেছিলেন কেভিন ও' ব্রায়েন। এবার আইরিশ রূপকথা লেখা হলো পল স্টার্লিং ও অ্যান্ডি বালবার্নির ব্যাটে। এবারও ৩২৯ রান করে ইংল্যান্ডকে হারালো আয়ারল্যান্ড।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে রানের পাহাড় টপকে ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। যদিও এই জয়ে সিরিজের ফলে কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় ইংলিশরা।
মঙ্গলবার সাউদাম্পটনের রোজ বলে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ইন মর্গানের সেঞ্চুরি ও টম ব্যান্টনের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩২৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে ম্যাচ সেরা পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নির সেঞ্চুরি ও তাদের রেকর্ড গড়া জুটিতে এক বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।
২০০৬ সাল থেকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩টি ওয়ানডে খেলেছে আয়ারল্যান্ড। এর মধ্যে দুবার ইংলিশদের হারের স্বাদ দিয়েছে আইরিশরা। মজার ব্যাপার হচ্ছে দুবারই ৩২৯ রান করে জিতেছে আইরিশরা। যদিও ২০১১ বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ৩২৮ রান। কিন্তু সেবারও ৩২৯ রান করে জেতে তারা।
রোজ বলে ৩২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা দাপুটে করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। দলীয় ৫০ রানে আউট হন গ্যারেথ ডিল্যানি। এরপর শুরু হয় আইরিশদের শাসন। প্রথম উইকেটের চাপ সামলে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকেন পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি।
৯ ওভার থেকে ৪১.৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করে এই জুটি। এ সময় ২১৪ রান যোগ করেন দুজন। দ্বিতীয় উইকেটে এটা আয়ারল্যান্ডের সেরা জুটি, যেকোনো উইকেট তৃতীয়। এই জুটি গড়ার পথে দুজনই সেঞ্চুরি তুলে নেন। ১২৮ বলে ৯টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১৪২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলা স্টার্লিং ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউটের শিকার হন। ওয়ানডেতে এটা তার নবম সেঞ্চুরি।
কিছুক্ষণ পর বালবার্নিও আউট হন। ১১২ বলে ১২টি চারে ১১৩ রান করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা আইরিশ অধিনায়ক। সেট দুজন ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও আয়ারল্যান্ডের সমস্যা হয়নি। হ্যারি টেক্টর ২৯ ও কেভিন ও' ব্রায়েন অপরাজিত ২১ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ডেভিড উইলি ও আদিল রশিদ একটি করে উইকেট নেন।
এরআগে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও দলকে সেই চাপ বুঝতে দেননি ওয়ানডেতে ১৪তম সেঞ্চুরি করা ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ইন মর্গান। টম ব্যান্টনের সঙ্গে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। কার্যকর এই জুটি গড়ার পথে ৮৪ বলে ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন মর্গান।
এ ছাড়া ব্যান্টন ৫৮, ডেভিড উইলি ৫১ ও টম কারেন অপরাজিত ৩৮ রান করেন। ৪৯.৫ ওভারে ৩২৮ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের ক্রেইগ ইয়ং ৩টি এবং জস লিটল ও কার্টিস ক্যাম্পার ২টি করে উইকেট পান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৪৯.৫ ওভারে ৩২৮/১০ (ইয়ইন মর্গ্যান ১০৬, টম ব্যান্টন ৫৮, ডেভিড উইলি ৫১, টম কারেন ৩৮*; ক্রেইগ ইয়ং ৩/৫৩, জস লিটল ২/৬২, কার্টিস ক্যাম্পার ২/৬৮)।
আয়ারল্যান্ড: ৪৯.৫ ওভারে ৩২৯/৩ (পল স্টার্লিং ১৪২, অ্যান্ডি বালবার্নি ১১৩, হ্যারি টেক্টর ২৯*, কেবিন ও' ব্রায়েন ২১*; ডেভিড উইলি ১/৭০, আদিল রশিদ ১/৬১)।
ফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ২-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ড জয়ী
ম্যান সেরা: পল স্টার্লিং (আয়ারল্যান্ড)
সিরিজ সেরা: ডেভিড উইলি (ইংল্যান্ড)