এমপি আনার হত্যা: কলকাতায় খালের পাড় থেকে হাড় উদ্ধার
কলকাতায় সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের তদন্তে ২০ দিনের তল্লাশির পর দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ভাঙড়ের খাল থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, নেপাল থেকে আটক এই ঘটনায় অভিযুক্ত সিয়াম হোসেনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে এসব হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, উদ্ধার করা ওই হাড়গোড় মানুষের। তবে হাড় এমপি আনারেরই কি না, জানার জন্য করতে হবে ডিএনএ পরীক্ষা।
সিআইডির তরফে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আটক সিয়ামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার নির্দিষ্ট করা জায়গা থেকে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি মানুষের হাড় রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞরা।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি গ্রামের বিজয়গঞ্জ বাজার লাগোয়া বাগজোলা খালের দক্ষিণ-পূর্ব পাড় থেকে উদ্ধার হয়েছে হাড়গুলো। উদ্ধার হওয়া এসব হাড়ের ভিত্তিতে বিজয়গঞ্জ বাজার থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান চলছে।
একজন কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'ফরেনসিক প্রতিবেদনে যদি নিশ্চিত হয় যে হাড়গুলো মানুষের, সেক্ষেত্রে সেগুলো খুন হওয়া এমপির কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা ডিএনএ বিশ্লেষণ করব। সেজন্য আদালতের অনুমতি লাগবে। এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।'
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর চব্বিশ পরগণার যে খালের তীর থেকে হাড়গুলো উদ্ধার করা হয়েছে, সেই জায়গা কলকাতার নিউ টাউন থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে।
মে মাসে কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেন্সে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। ঘটনার ৩ দিন পর সরকারের কাছে ভারতে বাবার নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এরপর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ভারতের বিদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগ করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামানই খুন করিয়েছেন আনারকে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। খুনের পর জিহাদ হাওলাদার নামে এক কসাইকে দিয়ে আনারের দেহ টুকরো টুকরো করানো হয়। হাড়-মাংস আলাদা করে দেহাংশ ফেলে দেওয়া হয় কলকাতা লাগোয়া বিভিন্ন খালে।
গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাঙ্কে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু মাংস উদ্ধার হয়। এবার উদ্ধার হলো হাড়। তবে মাংস ও হাড় আনারের কি না, তা জানতে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) দিকে তাকিয়ে তদন্তকারীরা।