যন্ত্রাংশ আমদানিতে ৪৯% শুল্ক বৃদ্ধি, এয়ার কন্ডিশনিং সেক্টর মুখ থুবড়ে পড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের
বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআরএএমএ) নেতারা প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম (কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা) এবং কম্প্রেসারের আমদানি শুল্ক ৪৯ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করার সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বর্ধিত শুল্ক ব্যবসা এবং ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সরকারের রাজস্ব কমাবে এবং উচ্চমাত্রার বিদ্যুৎ খরচের কারণ হবে।
বুধবার (১২ জুন) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, "আগের মতো শুল্ক ১১ শতাংশ করা না হলে এ সেক্টরের প্রসার মুখ থুবড়ে পড়বে এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হবেন।"
সংবাদ সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম বা পরিবর্তনশীল রেফ্রিজারেন্ট ফ্লো (ভিআরএফ) এবং পরিবর্তনশীল রেফ্রিজারেন্ট ভলিউম (ভিআরভি) সিস্টেম বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী উপলব্ধ সবচেয়ে উন্নত, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব রেফ্রিজারেশন প্রযুক্তি হিসেবে সমাদৃত।
তিনি বলেন, "এই সিস্টেমগুলো বহু বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা হয়েছে।"
আসাদুজ্জামান উল্লেখ করেন, সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, বাণিজ্যিক ভবন এবং সরকারি প্রকল্পে সাধারণত প্রতি ইউনিটে ২ লাখ ১০ হাজার বিটিইউ (১৭.৫,১৯ এবং ২১ টন) সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
তিনি বলেন, ইনভার্টার প্রযুক্তির (বৈদ্যুতিক সংকেতের মেরু বদল) জন্য কারণে এগুলো ব্যবহার করা সহজ, স্থান কম দখল করে এবং সহজেই শক্তি সংরক্ষণ করা যায়।
আমদানি শুল্ক ৬০ শতাংশে উন্নীত করার সরকারি পদক্ষেপকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে দুই হাজার কোটি টাকার এয়ার কন্ডিশনিং মার্কেটের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন।
তিনি আরো বলেন, এয়ার কন্ডিশনিং শিল্পের সঙ্গে প্রায় এক লাখ এর বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম আমদানি করার জন্য বিপুল পরিমাণ পুঁজি ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ করেছেন।
বর্তমানে প্যানাসনিক, ডাইকিন, মিতসুবিশি, হিটাচি এবং তোশিবার মতো ব্র্যান্ডের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাংলাদেশের ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, হাসপাতাল, মার্কেটসহ বাণিজ্যিক ভবনে ব্যবহৃত এসি'র দাম বাড়লে তার খরচ সাধারণ মানুষের ওপরই পড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আকরাম হোসেন এবং এসি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।