নতুন সংক্রমণের খবর নিউজিল্যান্ডে, জরুরি অবস্থা জারি
নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত আইসোলেশন ইউনিটের বাইরে চারটি কোভিড-১৯ পজিটিভ কেস পাওয়া গেছে বলে জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ১০২ দিন টানা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন মুক্ত থাকার পর এটিই প্রথম আক্রান্ত শুরু হবার ঘটনা। এরফলে পুনরায় সুরক্ষা ব্যবস্থা শুরু করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড।
ঠিক কীভাবে নতুন করে এই চারজন আক্রান্ত হলেন তা এখনো অজানা থাকায় আবারও পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড, জানান আরডার্ন।
ফলস্বরূপ, অকল্যান্ডে আগামীকাল থেকে তৃতীয় পর্যায়ের জরুরি নিরাপত্তা অবস্থা জারি করা হয়েছে। অকল্যান্ড ছাড়া নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য অঞ্চলে দ্বিতীয় পর্যায়ের জরুরি নিরাপত্তা অবস্থা জারি করা হয়েছে। তিন দিন ধরে পুরো দেশজুড়ে চলবে এই জরুরি অবস্থা।
আরডার্ন বলেন, 'এই তিন দিন আমাদেরকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে, তথ্য যোগাড় করতে ও সংক্রমণের প্রকৃতি বুঝতে সময় দিবে।'
সংক্রমণ রোধে অকল্যান্ড নিবাসীদের কঠোরভাবে গৃহে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'আপনাদের নিজের ও আশেপাশের মানুষের কোভিড হয়েছে ধরে নিয়ে সেভাবে আচরণ করুন।'
অকল্যান্ড নিবাসীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বার ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে আগামী তিন দিন। এছাড়া বিয়ে ও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
অন্যান্য শহর থেকে অকল্যান্ডে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধু শহরে অবস্থানরতরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য চলাচলের অনুমতি পাবেন। উপসর্গ থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে টেস্ট করার জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ফার্মেসিসহ অন্যান্য জরুরি সেবা ব্যবস্থা খোলা থাকবে। তৃতীয় মাত্রার জরুরি অবস্থায় খাবার ডেলিভারির সেবা চালু করা হবে। তিন দিনের জরুরি অবস্থা শেষে জনগণকে সাম্প্রতিক অবস্থার তথ্য জানানো হবে।
আরডার্ন জানান, তিনি জরুরি অবস্থা শেষ হবার আগে এখনই পরবর্তী পরিকল্পনা স্থির করবেন না।
নতুন সংক্রমণ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাধারণ পরিচালক ড. অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড বলেন, নতুন আক্রান্ত চারজন একই পরিবারের সদস্য। প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি দক্ষিণ অকল্যান্ডে বসবাসকারী পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি। এই পরিবারের বাকি ৬ সদস্যের তৎক্ষণাৎ টেস্ট করার পর আরও তিনজনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। সরকার এই পরিবারের সঙ্গে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছে। এই পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে সংস্পর্শে আসা অন্যান্য সবার আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই পরিবারেরই চারজন আক্রান্ত হলেও কর্মস্থলের কারণে তারা অন্যান্য অনেকের সংস্পর্শে ছিলেন।
টেস্টিং
ড. অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড জানান, সংক্রমণের উৎপত্তি বুঝতে বর্ডারে কর্মরত সকলের টেস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। টেস্টিং ব্যবস্থা কার্যকর করতে অকল্যান্ডে টেস্টিং সেন্টারে আরও কর্মী যুক্ত করা হবে এবং তাদের কাজের সময় বাড়ানো হবে।
ডিসট্রিক্ট হেলথ বোর্ড (ডিএইচবি) করোনা সেবার জন্য হাসপাতাল পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান ব্লুমফিল্ড।
প্রয়োজনীয় টেস্ট নিশ্চিত করতে ডিএইচবি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একত্রে কাজ করবে।
'সংক্রমণ শুরুর দিকে আমরা আগেও যেভাবে কাজ করেছি, সেভাবেই সম্পূর্ণভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধের কাজ করতে হবে,' বলেন ব্লুমফিল্ড। হাত ধোয়া, মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও উপসর্গ থাকলেই গৃহে অবস্থানের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনগণকে।
আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সকলের সন্ধান পেতে 'কোভিড ট্রেসার অ্যাপ' অত্যাবশকীয় বিধায় সকলকে অ্যাপটি ডাউনলোডের পরামর্শ দেন ব্লুমফিল্ড।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান