রাজশাহীতে আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক খুন: লিটন, এমপি আসাদকে মদতদাতা বললেন শাহরিয়ার আলম
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল খুনের জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও এমপি আসাদুজ্জামান আসাদকে দোষারোপ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তবে রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ এবং মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন উভয়ই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল মারা যান। শনিবার রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম ও বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলীর সমর্থকদের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা সংঘর্ষে তিনি আহত হন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাঘা মডেল হাইস্কুলে আশরাফুলের জানাজায় অংশ নেওয়ার পর শাহরিয়ার বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল হত্যায় মূল মদতদাতা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ।'
হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের খায়রুজ্জামান লিটন ও আসাদুজ্জামান আসাদের সঙ্গে সবসময় দেখা যেত দাবি করে তিনি বলেন, 'মদতদাতা হিসেবে [আসামিদের পাশাপাশি] লিটন, আসাদ ও বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন লাবলুর নামও মামলায় আসা উচিত।'
এ মন্তব্যের প্রতিবাদে এদিন বিকেলে নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেন, 'লাশ নিয়ে রাজনীতি করতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিদ্বেষপূর্ণ এমন মন্তব্য করা হয়েছে। যা কোনোভাবেই কাম্য না।'
'যিনি মারা গেছেন, তিনি আমার অত্যন্ত স্নেহবৎসল ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমি নিজেই শোকাহত। আমি চাই তার মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হোক,' তিনি যোগ করেন।
সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ শাহরিয়ারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, 'এ অভিযোগ দিয়ে হত্যাটাকে জায়েজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।'
বাবুল হত্যার সঠিক তদন্ত চান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের যে-সব হাইব্রিড নেতা এ হত্যাটাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে, আমাদের ওপর মামলা করার হুমকি দিয়েছে; তারা যদি মামলা না করে, সাতদিন পর আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।'
গত শনিবার আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে বাঘা উপজেলা চত্বরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টার সংঘর্ষে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে।
সংঘর্ষে আশরাফুল ইসলামের মাথা ফেটে গেলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে আশরাফুল ইসলাম হত্যার বিচার দাবি এবং খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে 'অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রকারী শাহরিয়ার আলমের' শাস্তির দাবিতে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগ আগামীকাল শুক্রবার (২৮ জুন) রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে।