সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার কে?
সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার কে? মাত্র ৫ শব্দের একটি প্রশ্ন। এর উত্তরে হাজার হাজার শব্দ ব্যয় করেও সমাধানে আসা যায়নি কখনও, বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে গেছে। কারও চোখে কোর্টনি ওয়ালশ তো কারও চোখে ম্যালকম মার্শাল সর্বকালের সেরা। কারও পছন্দ ওয়াসিম আকরাম আবার কারও মনজুড়ে ডেনিস লিলি।
যুগে যুগে ফাস্ট বোলাররা এসেছেন, বিশ্ব শাসন করে গেছেন। কেউ গতিতে তুফান তুলেছেন, কারও বিষাক্ত বাউন্সারের ছোবলে নীল হয়ে উইকেট ছেড়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান। কেউ আবার ২২ গজে দেখিয়ে গেছেন সুইংয়ের ভেল্কি।
সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারের আলোচনায় উঠে আসে অনেকের নামই। যেখানে নিশ্চিতভাবেই রয়েছেন ম্যালকম মার্শাল, মাইকেল হোল্ডিং, রিচার্ড হ্যাডলি, কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, ডেনিস লিলি, ওয়াসিম আকরাম, গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো কিংবদন্তিরা। এদের মধ্যে আবার ম্যালকম মার্শাল ও ওয়াসিম আকরামকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখা হয়। এর বাইরেও অনেকগুলো নাম আছে, যাদেরকে সেরার চোখে দেখা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার জেফ টমসন, ক্রেইগ ম্যাকডার্মট, ব্রেট লি, ইংল্যান্ডের ফ্রেড ট্রুম্যান, ইয়ান বোথাম, বব উইলিসের পর জেমস অ্যান্ডারসন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্ডি রবার্টস, কলিন ক্রফট, জোয়েল গার্নার, পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনিস, ইমরান খান, শোয়েব আখতার, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন, অ্যালান ডোনাল্ড, শন পোলক, মাখায়া এনটিনি, ভারতের কপিল দেবরা বল হাতে বিশ্ব শাসন করেছেন।
যদিও এককভাবে কারও গায়ে সর্বকালের সেরার তকমাটা জুড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ স্বীকৃত কিছু বা এমন কোনো মাপকাঠি নেই, যার ভিত্তিতে সর্বকালের সেরা নির্বাচন করা সম্ভব। শুধু পরিসংখ্যানের বিচারেও সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার বেছে নেওয়া সম্ভব নয়।
তেমন হলে এক বাক্যেই বলে দেওয়া যেত, জেমস অ্যান্ডারসন সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার। টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ইংলিশ এই পেসার (৫৯৩ উইকেট)। কিন্তু সর্বকালের সেরাকে কেবল উইকেটের পরিসংখ্যানে বিচারের সুযোগ নেই। সামর্থ্য, মেধা, বিচক্ষণতা, যেকোনো উইকেটে রাজত্ব কায়েম করার দিক থেকে বিবেচনা করা হয়, কে সর্বকালের সেরা।
এমন প্রশ্নে উঠে আসে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ম্যালকম মার্শালের নাম। যাকে মনে করা হয় ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে পরিপূর্ণ বোলার। অসাধারণ গতি, অপ্রতিরোধ্য বাউন্সার, বিষাক্ত সুইং আর আগ্রাসনে মার্শাল ছিলেন ব্যাটসম্যানদের জন্য যমদূত। ৮১ টেস্টে ৩৭৬ উইকেট নেওয়া ডানহাতি এই ক্যারিবিয়ান পেসারের মুখোমুখি হলেই পিলে চমকে যেতে ব্যাটসম্যানদের।
যেকোনো উইকেট দাপট দেখাতেন মার্শাল। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় তার বোলিংয়ের সামনে দিশেহারা হয়ে উঠতেন ব্যাটসম্যানরা। আবার উপমহাদেশেও ছড়ি ঘোরাতেন ক্যারিবীয় এই কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার। সব মিলিয়ে 'কমপ্লিট প্যাকেজ' মার্শালকে সর্বকালের সেরার তালিকায় উপরের দিকেই রাখেন সবাই।
একইভাবে বিবেচনা করা হয় পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামকে। দারুণ গতি নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। ৩০ বছর বয়সেই ডায়াবেটিস হওয়ায় পরের দিকে গতি কমে গেলেও সমস্যা হয়নি। লাইন-লেন্থ, সুইং আর ইয়ার্কারে নিজেকে অনন্য প্রমাণ করেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই পেসার। বলকে নিজের মতো করে কথা বলাতেন সুইংয়ের এই জাদুকর। সুইংয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রণ থাকায় তার নাম হয়ে গিয়েছিল সুলতান অব সুইং।
৬টি ডেলিভারি ভিন্ন ভিন্নভাবে করতে পারতেন টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে ৯১৬ উইকেট (৪১৪টি টেস্ট, ৫০২টি ওয়ানডে উইকেট) নেওয়া সাবেক এই পেসার। ম্যালকম মার্শালের মতো ওয়াসিম আকরামও যেকোনো উইকেটে দাপট দেখাতেন। অনেকের চোখেই তিনি সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার।
ম্যালকম মার্শাল-ওয়াসিম আকরামদের মতো বিধ্বংসী বোলার ছিলেন না কোর্টনি ওয়ালশ। তবে দীর্ঘদিন ধরে খেলেছেন ৫১৯ টেস্ট উইকেটের মালিক ক্যারিবিয়ান এই কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার। ১৩২টি টেস্ট খেলা বাংলাদেশের সাবেক এই বোলিং কোচ ইতিহাসের প্রথম ফাস্ট বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। অনেকের চোখেই তিনি সেরার কাতারের সামনের দিকে।
সর্বকালের সেরার প্রশ্নে আরেকটি বড় নাম ডেনিস লিলি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই পেসারও ছিলেন দারুণ বৈচিত্র্যময়। পিঠের ইনজুরির কারণে অনেকেই ধারণা করেছিলেন, লিলির সফর দীর্ঘ হবে না। কিন্তু আরও ধারালো হয়ে ফিরে আসেন সাবেক ডানহাতি এই অজি ফাস্ট বোলার। পরের দিকে গতি কমে গেলে দক্ষতায় নিজেকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যান ৭০ টেস্টে ৩৫৫ উইকেট শিকার করা লিলি।
নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফাস্ট বোলার রিচার্ড হ্যাডলিও ছিলেন বৈচিত্র্যময়। ৮৬ টেস্টে ৪৩১টি উইকেটের মালিক হ্যাডলিও অনেকের দৃষ্টিতে সেরা। সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারের তালিকাতেও রাখা হয় তার নাম। ১৭ বছর ধরে কিউইদের প্রতিনিধিত্ব করা হ্যাডলি ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ৪০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
এই আলোচনায় গ্লেন ম্যাকগ্রা অবধারিত আলোচনা। সুইং আর লেংন্থ দিয়ে একজন বোলার কীভাবে বিশ্ব শাসন করতে পারেন, সেটা দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ডানহাতি এই পেসার। ৫৬৩টি টেস্ট উইকেটের মালিক ম্যাকগ্রার বলে কখনই গতি ছিল না। অবিশ্বাস্য লাইন-লেংন্থের সঙ্গে ছোট ছোট সুইংয়ে ব্যাটসম্যানদের নাকানি-চোবানি খাওয়াতেন তিনি।
যেকোনো উইকেটে এমন সব ছোট সুইং করতেন ম্যাকগ্রা, যা এড়ানো কঠিন হয়ে পড়তো ব্যাটসম্যানদের জন্য। ব্যাটসম্যানের একেবারে সামনে বল ফেলে বাউন্স করানো ছিল তার বিশেষ সামর্থ্য। সাধারণত এমন ডেলিভারি খেলাটা যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য দুরুহ হয়ে পড়তো। সেরার প্রশ্নে ম্যাকগ্রার নামটিও বড় করে উচ্চারিত হয়।
ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কপিল দেবও বল হাতে শাসন করেছেন। যদিও সর্বকালের সেরার প্রশ্নে তার নাম সেভাবে উচ্চারিত হয় না। ১৩১ টেস্টে ৪৩৪ উইকেটে নেওয়া কপিল দেবের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন খেলে যাওয়া। উপমহাদেশে ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক ১৩১টি টেস্ট খেলার সফরে কখনও ইনজুরির কারণে বাদ পড়েননি। একটা সময়ে টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও ছিলেন ভারতের কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডার।
ইমরান খান ও ওয়াকার ইউনিসকেও সেরার তালিকায় ওপরের দিকে রাখা হয়। যদিও উপমহাদেশেই বেশিরভাগ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের ৯২'র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। ৮৮ টেস্টে তার উইকেট ৩৬২টি। তবে ওয়াকার ইউনিস যেকোনো উইকেটে কার্যকরী ছিলেন। ইনজুরিতে পড়ার আগ পর্যন্ত রীতিমতো বিধ্বংসী চেহারায় ছিলেন ৩৭৩ টেস্ট উইকেটের এই মালিক। তার স্ট্রাইক রেট সর্বকালের সেরাদের মধ্যে অন্যতম।
সর্বকালের সেরার তালিকায় গতি তারকাদের নাম সেভাবে উচ্চারিত হয় না। তবু বেশ কয়েকটি নাম ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা। এর মধ্যে অন্যতম শোয়েব আখতার, ব্রেট লি, শেন বন্ড। আগে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ওয়েস হল, প্যাটারসন থম্পসন। এদের নামও থাকতে পারতো সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। কিন্তু গতির কারণ ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি তাদের। তাই তাদের রেকর্ডও তেমন সমৃদ্ধ নয়।
আধুনিক ক্রিকেট থেকে সেরার প্রশ্নে যে নামটি সবার আগে আসে, তিনি ডেল স্টেইন। গতি, সুইং, বাউন্স; সব দিক থেকেই অনবদ্য ৪৩৯টি টেস্ট উইকেটের এই মালিক। দেশের মাটিতে স্টেইন সব সময়ই অপ্রতিরোধ ছিলেন। এ ছাড়া ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি ভারতের মাটিতেও দারুণ সফল দক্ষিণ আফ্রিকার ডানহাতি এই ফাস্ট বোলার।
এরপর পরিসংখ্যানের কারণে জেমস অ্যান্ডারসনের নাম নিয়ে থাকেন অনেকেই। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাইরে ইংলিশ এই পেসারের রেকর্ড একদমই ভালো নয়। তার ৫৯৩ উইকেটের মধ্যে ৩৭৭ উইকেটই ইংল্যান্ডের মাটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে কিছুটা ভালো করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়াতেও সফল হতে পারেননি তিনি। আর উপমহাদেশে তো একেবারেই অনুজ্জ্বল তিনি।
একই কারণে স্টুয়ার্ট ব্রডকে নিয়েও তেমন মাতামাতি নেই। ইতিহাসের চতুর্থ ও সর্বশেষ ফাস্ট বোলার হিসেবে কিছুদিন আগে ৫০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। কিন্তু অ্যান্ডারসনের মতো তার রেকর্ডও ঘরের মাঠেই কেবল সমৃদ্ধ। ৫১১ উইকেটের মধ্যে ৩৩১ উইকেট ইংল্যান্ডের মাটিতে নিয়েছেন তিনি। ব্রডও উপমহাদেশে অকার্যকর বোলার। যে কারণে এই প্রজন্ম থেকে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েও আলোচনায় নেই অ্যান্ডারসন ও ব্রড।
বিভিন্ন প্রজন্মে বাংলাদেশের পেস বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করা কয়েকজন বোলার জানিয়েছেন তাদের ভাবনার কথা। সর্বকালের সেরার প্রশ্নে তারাও উত্তরে পৌঁছাতে পারেননি। তবে জানিয়েছেন নিজেদের সেরা ফাস্ট বোলারের নাম। চারজনের কাছেই সর্বকালের সেরা পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম।
হাসিবুল হাসান শান্ত: আসলে অনেক কিছুর ওপর সেরার বিষয়টি নির্ভর করে। এখনকার ক্রিকেট ভিন্ন। আবার আগের ক্রিকেটের বল ছিল ভিন্ন। তো আমার দেখার মধ্যে আমি গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং ওয়াসিম আকরামকে উপরে রাখব। একজনের কথা বলতে গেলে কঠিন হয়ে যায়। যেমন আছেন কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, ড্যারেন গফ, মাখায়া এনটিনি, শন পোলক, ব্রেট লি, শোয়েব আখতার, ওয়াকার ইউনিসরাও কিংবদন্তি বোলার। তো আমার দেখা গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং ওয়াসিম আকরাম সেরা।
ওয়াসিম আকরামের হয়তো অতো উইকেট নেই, তার জন্ম যদি অস্ট্রেলিয়ায় হতো, এরচেয়ে অনেক বেশি উইকেট পেতেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। উইকেট হয়তো অনেকের চেয়ে কম। তবু সর্বকালের সেরার প্রশ্নে আমি বলব ওয়াসিম আকরাম। এরপরই রাখব ম্যাকগ্রাকে। সব ধরনের উইকেটেই ওয়াসিম আকরামের রাজত্ব ছিল। গতি, সুইং থেকে শুরু করে ইয়র্কার; সব ছিল তার বোলিংয়ে। ছয়টা বল ভিন্ন ভিন্ন করতে পারতেন। তার মতো বৈচিত্র্যময় বোলার আমি দেখিনি। আমার দেখা সেরা ওয়াসিম আকরামই।
সৈয়দ রাসেল: আমার জন্মের আগে যারা খেলেছন, স্বাভাবিকভাবেই তাদের খেলা আমি দেখিনি। ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান থেকে শুরু আমার খেলা দেখা। আমার হিসেবে আমি এখান থেকেই বলব। অ্যান্ডারসন দেশের বাইরে খুব কম খেলেছে। উইকেট নিয়েছে, কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতেই বেশি। আর কিছু আছে অস্ট্রেলিয়ায়। এই অঞ্চলে সে সফল নয়। তার তেমন উইকেট নেই। তেমন সফরও করেনি এদিকে।
এসব হিসাব করলে কোর্টনি ওয়ালশ আরও ভালো। গ্লেন ম্যাকগ্রাও ভালো। তবে সব দিক দিয়ে আমি ওয়াসিম আকরামকে এগিয়ে রাখব। কারণ সে উপমহাদেশের বোলার। কিন্তু সে সবখানেই রাজত্ব করেছেন। সব ধরনের উইকেটেই ওয়াসিম আকরাম নিজেকে মেলে ধরতেন। তার যেমন ছিল গতি, সুইং, তেমন ছিল রিভার্স সুইং, ইয়র্কার। বলেকয়ে ডেলিভারি দিতে পারতেন তিনি। আমার দৃষ্টিতে তিনি সর্বকালের সেরা পেসার।
শফিউল ইসলাম: সর্বকালের সেরার প্রশ্নে তো অনেকের নামই চলে আসে। কোর্টনি ওয়ালশ, ওয়াসিম আকরাম, কার্টলি অ্যামব্রোস, গ্লেন ম্যাকগ্রা; উনাদের নাম তো নিতেই হবে। এখন অ্যান্ডারসনকেও এই কাতারে ফেলা যায় বলে আমি মনে করি। অনেকের নামই উল্লেখ করতে হবে। কারণ আমি-আপনি বললেই তো কেউ সর্বকালের সেরা হয়ে যাবেন না। এটা অমিমাংসিত একটা ব্যাপার। এভাবেই হয়তো অমিমাংসিত থেকে যাবে। যেভাবে পেলে-ম্যারাডোনাকে নিয়ে তর্ক আজও থামেনি। কিংবা মেসি-রোনালদোর।
তারপরও আমার কাছে বলা হলে আমি কোর্টনি ওয়ালশ ও ওয়াসিম আকরামকে সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার বলব। আমি এই দুজনের খেলাই দেখেছি। পুরোপুরি না দেখতে পারলেও কিছু অংশ পেয়েছি। এরআগেও আরও কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার আছেন। কিন্তু আমি এই দুজনকে সর্বকালের সেরা বলতে চাই। কোর্টনি ওয়ালসের সুইং ছিল, বাউন্সার ছিল। সব কন্ডিশনেই উনি ব্যাটসম্যানকে ভোগাতেন। দারুণ একটা প্যাকেজ ছিলেন তিনি। আবার ওয়াসিম আকরামও অনবদ্য ছিলেন। আমার কাছে এ দুজনই সর্বকালের সেরা।
তাসকিন আহমেদ: আসলে এটা অনেক কঠিন প্রশ্ন। সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার বেছে নেওয়া খুব কঠিন। কারণ অনেক কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার আছেন ক্রিকেট ইতিহাসে। ওয়ালশ, ম্যাকগ্রা, ওয়াসিম আকরাম, ব্রেট লি, শোয়েব আখতার; আরও অনেকে আছেন। এরা সবাই গ্রেট। এতো কিংবদন্তির মাঝে একজনের নাম বলা কঠিন। ওয়াসিম আকরাম একজন গেম চেঞ্জার ছিলেন, তার জুড়ি ছিল না।
আবার রেকর্ড দেখলে শোয়েব আখতারের চেয়ে অনেকেই এগিয়ে। কিন্তু আক্রমণাত্মক মনোভাব, গতি; সব মিলিয়ে তাকে আমার অন্যরকম লাগতো। শোয়েব আখতারের প্রতি আমার অন্যরকম ভালো লাগা। যে কারণে ওয়াসিম আকরামকে সর্বকালের সেরা মানলেও একটু দ্বিধা থেকে যায়। তবু ওয়াসিম আকরামকেই বলব সর্বকালের সেরা। এরপরই আমি শোয়েব আখতারকে রাখতে চাই।