বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, সিলেটে সংঘর্ষ, লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের মারধর
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে নিহত ছাত্র-জনতা, শিশু ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার পর থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
হবিগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে যুবক নিহত
হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে মুস্তাক আহমদ নামে ২৬ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়েছেন।
তার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক সরকার। তিনি জানান, নিহত যুবকের শরীরে গুলির আঘাত পাওয়া গেছে।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাড়ি ভাঙচুর ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত 'প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল'-এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের বোর্ড মসজিদের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরের বোর্ড মসজিদ এলাকায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে পূর্ব টাউন হল এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রদল ও অন্য দলের নেতাকর্মীরা। এরপর মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে টাউন হল এলাকায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে।
নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মিছিল-অবস্থান
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মহাসড়কের চিটাগাং রোড এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আজ দুপুরে ১৫-১৬ জন শিক্ষার্থী মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে ওভারব্রিজের নিচে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন। তারা 'এই মুহুর্তে দরকার, গণতান্ত্রিক সরকার'; আমার ভাই মরল কেন, জবাব চাই জবাব চাই'; তোর কোটা তুই নে, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দে' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। পরে মহাসড়কেই তারা মিছিল করে।
পরে সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর অন্তত ১০টি গাড়ি উপস্থিত হতে দেখা যায়।
সিলেটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ; ফাঁকা গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
সিলেটের মদিনা মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের (টিবিএস) সংবাদদাতা জানান, বিকেল থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটকে অবস্থান নিতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। তারা প্রধান ফটক থেকে মিছিল নিয়ে মদিনা মার্কেট এলাকায় আসতে থাকেন। মদিনা মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করলে সেখানে অবস্থানরত পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়।
এরপরেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করলে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকলে, পুলিশও পালটা জবাবে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। মুহুর্মুহু সংঘর্ষে পুরো এলাকাই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পেটাল ছাত্রলীগ-যুবলীগ
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। পরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে লাঠিসোটা দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে প্রায় ১০ জন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
চকবাজার জামে মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু চক বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে নামাজ পড়তে আসেন। নামাজ শেষেই তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারমুখি ছিলেন। তারা মসজিদ সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়কে স্লোগান দিয়ে সাধারণ মুসল্লি ও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসার ভেতরে অবস্থান নেন।
মুন্সীগঞ্জে পুলিশের বাধায় কর্মসূচি পণ্ড
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছে, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য উপজেলা সদর হাসপাতাল সড়কে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন।
বিক্ষোভ প্রতিরোধে বাজারে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল বাইপাস সড়কে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি আয়োজনে বাধা দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ। এ সময় তাদের ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ দুই শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
বরিশালে শিক্ষার্থীদের প্রার্থনা ও গণমিছিল
বরিশাল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে বরিশালে প্রার্থনা ও গণমিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের পর সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মূল গেট থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা মিছিল নিয়ে নগরীর নথুল্লাবাদ গোল চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পুনরায় বিএম কলেজে এসে কর্মসূচি শেষ করেন।
বৃষ্টির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের অবস্থান, অচল বগুড়ার সাতমাথা এলাকা
আমাদের উত্তরাঞ্চল প্রধান জানিয়েছেন, বগুড়ায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে নগরীর সাতমাথা এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার পর কয়েক শ শিক্ষার্থী সাতমাথা মোড়ে অবস্থান নেন।
এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবারও সাত মাথায় এসে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা নিহত শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। তাদের কর্মসূচির ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে হাজারো শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ
চট্টগ্রামে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নেমেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত 'প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল'কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর পৌনে ২টার দিকে নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে তারা মিছিল বের করেন।
এতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে মসজিদের মুসল্লিদের পাশাপাশি অনেক নারীও অংশ নেন।
শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আন্দরকিল্লা থেকে লালদিঘী হয়ে দুপুর সোয়া ২টার দিকে নিউ মার্কেট মোড়ে এসে অবস্থান নেন। সেখানে প্রায় আধঘন্টা অবস্থান করেন তারা। এ সময় আন্দরকিল্লা মোড়ে দুই শতাধিক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দেখা গেছে।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা 'আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই,', 'আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাইরে', 'তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার', 'কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
খুলনায় পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ
৯ দফা দাবিতে খুলনায় আবারও রাজপথে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান নেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একপর্যায়ে পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা হন।
এদিকে নগরীর গল্লামারী মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ। শেষ খবর অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পুলিশ লাগাতার টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছিল।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে মহাসড়কের নগরজলফৈ বাইপাস এলাকা ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এতে ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলের সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে জুমার নামাজের পর শহরের সাবালিয়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবের সমানে এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে শিক্ষার্থী শহরের গুরত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ করে মহাসড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও অংশ নেন।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুমিল্লার সড়কে শিক্ষার্থীদের মিছিল
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লায় দোয়া ও গণমিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মসূচিতে যোগ দেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২ আগস্ট) কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি।
গাইবান্ধায় 'ছাত্র-জনতার গণমিছিল' কর্মসূচি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হতাহত ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় 'ছাত্র-জনতার গণমিছিল' কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বৃষ্টির মধ্যেই জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
জুমার নামাজের পরে শহরের পুরাতন জেলখানা এলাকার গোলচত্বরে সমবেত হয়ে সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। বৃষ্টিতে ভিজে মিছিল নিয়ে তারা কাচারী বাজার, পৌরপার্ক পার হয়ে ডিবি রোডে এক নম্বর ট্রাফিক মোড় এলাকায় আসে। এ সময় শিক্ষক-অভিভাবক ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে মিছিলে অংশ নেন।
শিক্ষার্থীদের মিছিলের সামনে ও পেছনে পুলিশ-র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে।
ডিবি রোডে এক নম্বর ট্রাফিক মোড় এলাকায় সমাবেশে শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় বিচার দাবি করে। এ সময় তারা গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
রংপুর শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার, আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া সকল শিক্ষার্থীর মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও পদযাত্রা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে রংপুর মহানগরীর পার্ক মোড়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও পদযাত্রার ব্যানার নিয়ে একত্র হন। এ কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের বাধা
নওগাঁ শহরের সরিষা হাটির মোড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে নিহতের ঘটনার বিচার দাবিতে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা সড়কে গণমিছিল বের করার চেষ্টা করলে তাতে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সামনেই শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে বলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল। এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশ সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে লক্ষ্য করে 'ভুয়া', 'ভুয়া' বলে স্লোগান দেন। পরে সেখানেই বৃষ্টিতে ভিজে প্রায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ করেন তারা।
জয়পুরহাটে মিছিল শিক্ষার্থীদের
জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যার প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে নতুনহাট এলাকা থেকে তাদের মিছিল শুরু হয়।
মিছিলটি শহরের বাটারমোড় এলাকায় যাওয়ার সময় তাদের পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে পুলিশের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীরা বাটার মোড় এলাকায় গিয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছেন। শিক্ষার্থীরা বাটার মোড় এলাকায় অবস্থান নেওয়ায় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
দিনাজপুরে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
আজ সন্ধ্যায় দিনাজপুরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিকাল ৫টার দিকে শহরের জেল মোড় এলাকায় 'ছাত্র-জনতার গণমিছিল' করার চেষ্টা করেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। তখন পুলিশি বাধার মুখে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
এছাড়াও পাবনা, নাটোর ও চাপাইনবাবগঞ্জেও বিক্ষোভ-অবস্থান কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা।