ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা
মঙ্গলবার ও বুধবারের মতো আজ বৃহম্পতিবারও (৮ আগস্ট) ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে মাঠে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। তারা আনন্দ নিয়েই এ কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট , ধানমন্ডি কল্যাণপুর, মিরপুর ১০, আগারগাঁও, সংসদ ভবন এলাকা, বিজয় সরণি, মগবাজার , খামারবাড়িসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচলে করতে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় চালকদের নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোর জন্য অনুরোধ জানাতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। যারা হেলমেট না পরে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন, তাদের থামিয়ে পরবর্তীতে মোটরসাইকেল চালালে হেলমেট নিয়ে বের হতে বলেন।
গতকাল আগারগাঁও মোড়ে দেখা যায়, যারা হেলমেট না পরে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন, তাদের থামিয়ে রাখা হচ্ছে। সচেতন করার পাশাপাশি শাস্তি হিসেবে চালকে সবার পরে যেতে দেয়া হচ্ছে।
দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রধান কার্যালয়ের সামনের সড়কে ৮-১০ জন জন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এ সময় তারা অ্যাম্বুলেন্স এলে অন্য গাড়ি থামিয়ে সবার আগে সেটিকে যেতে দিচ্ছেন।
গতকাল শুক্রাবাদ এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন শিক্ষার্থী খালেদ বিন সামি। তিনি বলেন, 'সুন্দরভাবে দেশ চলুক। আমরা শিক্ষার্থীসহ সবাই সচেতন হলে মানবিক দেশ গঠন সহজ হবে। আশা করছি তরুণদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।'
মগবাজার মোড়ে বুধবার বেলা ৩টার দিকে দেখা যায় প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচলে করতে দেখা যায় এ সময়।
সাধারণ নিয়ম হলো, জেব্রা ক্রসিংয়ের আগে সাদা দাগ সামনে রেখে গাড়ি থামতে হবে। কিন্তু সে নিয়ম বেশিরভাগ সময়েই মানতে দেখা যেত না এতদিন। মগবজারে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা এ নিয়ম মানতে বাধ্য করছেন চালকদের। সাদা দাগের সামনে গাড়ি থামাচ্ছেন তারা।
মগবাজারে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব পালনের সময় খাবার জন্য বিস্কুট, জুস, কেক, প্যাকেটজাত খাবার ও পানির বোতল দিয়ে যাচ্ছেন।
আসিকুর রহমান শিক্ষার্থীদের সমন্বয় করেন মগবাজার এলাকায়। তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীদের কাজে উৎসাহিত করার জন্য সাধারণ মানুষ যারা খাবার দিয়ে যাচ্ছেন, সে খাবার নিচ্ছি। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের দেয়া খাবার নিচ্ছি না।'
তিনি বলেন, 'অনেক শিক্ষার্থী আসছেন দায়িত্ব পালন করতে। আমরা তাদের দল গঠন করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব দিয়েছি। প্রতিটি মোড়ে একজন দলনেতা আছেন। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ দায়িত্ব পালন করব। যেখানে ট্রাফিক পুলিশের সদস্য নেই, সেখানে আমরা কাজ করব।'
গতকাল বেলা ১টায় নাবিস্কো মোড়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর-এর (বিএনসিসি) প্রায় ১০ জন সদস্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদেত দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের কাজের প্রশংসা করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। একই সঙ্গে পুলিশ সক্রিয় হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের কাজের প্রশংসা করে সেনাপ্রধান বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তা পরিষ্কার করছে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। চমৎকার কাজ করছে তারা।
ছাত্রদের তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব ইতিবাচক কাজ অব্যাহত রাখারও অনুরোধ জানান তিনি।
সেনাপ্রধান জানান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আনসার-ভিডিপি সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে।