স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে শুরু করেছে ব্যাংক খাত, তবে সময় লাগবে কিছুটা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রোববার (১১ আগস্ট) প্রথম কার্যদিবসে ব্যাংক কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করলেও, পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের উপস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার চাপও কমে এসেছে। তবে ব্যাংকের এটিএম বুথগুলোতে টাকা রিফিল করতে এখনো সমস্যায় আছে ব্যাংকগুলো।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান টিবিএসকে বলেন, "এটিএম বুথগুলোতে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা এখনো কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ফলে দূরের বুথগুলোতে টাকা রিফিল করা কষ্টসাধ্য ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সার্ভিসগুলো সচল রাখার।"
ব্যাংক কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে চলতি সপ্তাহ লেগে যেতে পারে মন্তব্য করে এই ব্যাংকার বলেন, "আমরা আশা করছি, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তখন ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও নির্বিঘ্ন হবে এবং লেনদেন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।"
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ কাদরী বলেন, "বুথগুলো সচল রাখতে আমরা বেশকিছু পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। এর মধ্যে অন্যতম দূরবর্তী ব্রাঞ্চগুলোর ক্ষেত্রে এগুলোর কাছাকাছি কোনো ব্রাঞ্চে টাকা পাঠিয়ে ধাপে ধাপে সেগুলো সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।"
"রোববার আমরা আমাদের অধিকাংশ এটিএম বুথগুলো সচল করতে সক্ষম হয়েছি। বাকিগুলো সোমবারের মধ্যে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের," যোগ করেন তিনি।
ব্যহত হয়েছে চেক ক্লিয়ারিং
ইসলামী ধারার একটি ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট (চলত হিসাব) ঋণাত্বক থাকায় তাদের চেকগুলো ক্লিয়ার করা বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘটনায় একইসঙ্গে দেশের সব ব্যাংকের চেক ক্লিয়ার হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। অবশ্য পরে সব চেকই ক্লিয়ার করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সাধারণত ব্যাংকের সব ধরনের চেক বিকেল ৫টার মধ্যে ক্লিয়ার হওয়ার কথা থাকলেও রোববার সেটি হয়েছে সন্ধ্যা ৭টার পর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসলামী ধারার একটি ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ থাকার পরও এতোদিন লেনদেন করার সুযোগ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
"তবে অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা তাদের চেক ক্লিয়ার করিনি। ব্যাংকটির প্রায় ১,০০০ কোটি টাকার মতো চেক ক্লিয়ার করার জন্য রোববার জমা হয়েছিল। তবে আমরা তাদের চেক ক্লিয়ার বন্ধ রাখায় সেটি একপর্যায়ে ১৮৩ কোটি টাকায় নেমে আসে। সেটিও আমরা অনুমোদন করেনি," বলেন তিনি।
পরে কারেন্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে ব্যালেন্স পজেটিভ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চেক ক্লিয়ার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
এদিকে, সময়মতো চেক ক্লিয়ার না হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন-ভাতা দেওয়াসহ ব্যবসায়িক লেনদেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।