বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সের পর্দা নামছে
বসুন্ধরা মল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই মাসের শেষেই চুক্তি মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে স্টার সিনেপ্লেক্সের। তাই মাস শেষে বন্ধ হয়ে যাবে প্রেক্ষাগৃহটির সবকটি ফিল্ম থিয়েটার। স্টার সিনেমাপ্লেক্সের বিপণন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ- আজ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রেক্ষাগৃহ চেইনটির চেয়ারম্যানও এর আগেই বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছিলেন।
'বসুন্ধরা মলের স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিনেপ্লেক্সের সঙ্গে বসুন্ধরার চুক্তি ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে যাচ্ছে। বসুন্ধরা মল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।'
তিনি আরও জানান 'আমরা অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ স্টার সিনেপ্লেক্সের সঙ্গে চুক্তি বাড়াতে আগ্রহী নন। থিয়েটারের জায়গা নিয়ে তাদের অন্য পরিকল্পনা রয়েছে।
মহামারির কারণে ২০ মার্চ থেকে সিনেপ্লেক্সের সবগুলো থিয়েটারে প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়। বসুন্ধরা মলে স্টার সিনেপ্লেক্সের মোট ছয়টি ফিল্ম থিয়েটার রয়েছে, সব থিয়েটার মিলে আসন সংখ্যা ১,৬২৬টি।
২০০২ সালে বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম ডিজিটাল এবং অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত স্টার সিনেপ্লেক্স। সারাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এ পেক্ষাগ্রহটি।
আড়াই কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স প্রেক্ষাগৃহটির। চালু হওয়ার ১৮ বছর পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির এই শাখা! এর আগে গত সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান রুহেল।
তিনি বলেন, ''সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের ভাড়ার মেয়াদ ছিলো। গত মাসে তারা নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে আর তারা চুক্তিটি আর নবায়ন করতে চান না! আমরা নানা ভাবে চেষ্টা করছিলাম যেনো আমাদের প্রথম শাখাটা থাকে। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলো না।'
তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ভেতরে ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে! এই মাসের মধ্যে সেটা শেষ করতে হবে। ১ অক্টোবরের মধ্যে সেটা খালি করে দিতে হবে।
জানা গেছে, করোনার কারণে ৫ মাসের ভাড়া বাকি পরে প্রতিষ্ঠানটির। সেটা কমানো ও ছাড় দেয়া নিয়ে কয়েকবার মিটিং হয়। কিন্তু বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে ভাড়া কমানো বা না দেয়ার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি। উল্টো ফ্লোর ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ পান গত মাসে।
নতুন করে চুক্তি নবায়ন না করার ফলে এখন বকেয়া ভাড়া সিনেপ্লেক্সের ডিপোজিট মানি থেকে কর্তন করতে পারবে বসুন্ধরা মল কর্তৃপক্ষ।
এ সিদ্ধান্ত সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি অগণিত দর্শকের জন্যে বেদনার। এরই মধ্যে প্রেক্ষাগৃহটির অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ফেসবুকে লিখছেন।
জানা গেছে, বসুন্ধরা সিটিতে মাল্টিপ্লেক্স করার উদ্যোগ নেন মাহবুবুর রহমান। কাজ শুরু করেন ২০০২ সালে। দর্শকের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয় ২০০৪ সালে।
শুরুতে তিনটি সিনেমা হল নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। প্রথম দুই বছর লোকসানে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। পরে লাভের মুখ দেখে তারা। দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বসুন্ধরা সিটিতে আরো তিনটি থিয়েটার বাড়ানো হয়। মোট ৬টি হলে একসাথে ১৬শ'র বেশি দর্শক চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারতেন!
চেয়ারম্যান রুহেল জানান, দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের উদ্যোগ নেয়া হয় শুরু থেকেই। স্পাইডারম্যান দিয়ে প্রথম প্রদর্শনী শুরু করে স্টার সিনেপ্লেক্স।