বিশ্ব অর্থনীতিতে সাড়ে ৪ শতাংশ সঙ্কোচনের পূর্বাভাস ওইসিডির
মহামারিকালে বিশ্ব অর্থনীতি যতটা শঙ্কা করা হয়েছিল তার চাইতে কিছুটা ভালো করছে, তারপরও বছর শেষে সার্বিক উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ব্যাপক সংকোচনের মুখে পড়তে চলেছে। আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বিকশিত অর্থনীতির দেশের জোট- অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)।
বিশ্ব অর্থনীতির সাম্প্রতিক পূর্বাভাস সূচক প্রতিবেদনে ওইসিডি জানায়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতি ৪.৫ শতাংশ সংকুচিত হবে। গত জুনে দেওয়া সংস্থাটির প্রাক্কালনের চাইতে যা কিছুটা ইতিবাচক। জুনে সাড়ে ৬ শতাংশ সার্বিক পণ্য ও সেবা উৎপাদন (জিডিপি) সংকোচনের আভাস দিয়েছিল সংস্থাটি।
প্রতিবেদনের মন্তব্য অংশে বলা হয়, 'জিডিপি সংকোচনের পরিমাণ পূর্বানুমানের চাইতে কম হলেও, যে পরিমাণ হ্রাস পাবে- সেটাও সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন এক ঘটনা।'
তাছাড়া আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ৫ শতাংশ ইতিবাচক বৃদ্ধি পাওয়ার প্রত্যাশা করছে ওইসিডি। তবে এ প্রত্যাশার ফলাফল নির্ভর করবে মহামারি পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতির উপর। 'বিষয়টি খুবই অনিশ্চিত' বলেই উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। খবর সিএনবিসির।
অতিমারির তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভ্রমণ এবং পর্যটন খাতে। চলতি বছরের শুরুর দিকে অধিকাংশ দেশে যে কঠোর লকডাউন চালু করা হয়েছিল, তার প্রভাবমুক্ত থাকেনি প্রভাবিত অন্যান্য শিল্পও। এর মধ্যেই আবার অনেক দেশকে লড়তে হচ্ছে, দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নানা দেশের কর্তৃপক্ষ ভাইরাসের নতুন জোয়ার রুখতে আবারও কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন, যা সার্বিকভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে আরও চাপের সম্মুখীন করবে।
''জনগণের চলাচলের নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আংশিক চালুর সুযোগে; উৎপাদনের হার দ্রুত বাড়ে। তবে চলতি গ্রীষ্মকালীন কয়েক মাসে সেই পুনরুত্থানের গতি অনেকটাই শিথিল হয়ে এসেছে'' ওইসিডি জানিয়েছে।
প্যারিস-ভিত্তিক সংস্থাটি আন্তঃসরকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত ৩৭টি উন্নত দেশের জোট। সংস্থাটি দেশভেদে চলতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আর্থিক পরিস্থিতির বিভাজন দেখা যেতে পারে, এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে।
জুনে যা প্রাক্কালন করা হয়েছিল, তার চাইতে ভালো করবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরো জোনের অর্থনীতি। সেই তুলনায় ব্যাপক নেতিবাচক চিত্র লক্ষ্য করা যাবে; ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মেক্সিকোর মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশসমূহে।
শীর্ষ অর্থনীতির মধ্যে একমাত্র প্রবৃদ্ধির পথে আছে চীন। বছর শেষে দেশটি ১.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
সেই তুলনায় বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি ৩.৮ শতাংশ সংকোচনের মুখে পড়বে। ইউরো জোনে এর সার্বিক আকার হবে আরও ব্যাপক; ৭.৯ শতাংশ হারে।
সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় পড়তে চলেছে; ভারত, আর্জেন্টিনা, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মেক্সিকো। এসব দেশের অর্থনীতিতে ১০ শতাংশের বেশি সংকোচনের আভাস দিয়েছে ওইসিডি।