দেশের ক্রিকেটের দুঃসময় কাটাতে সাকিবের একমাত্র চাওয়া ‘জয়’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুঃসময় কাটাতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু হতে যাওয়া একমাত্র টেস্টে কেবল জয়ের দিকেই চোখ রাখতে চান সাদা পোশাকে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এর আগে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে আটবার এবং টি-টোয়েন্টিতে চারবার মুখোমুখি হলেও টেস্টে এই প্রথমবারের মতো দলটির বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে এশিয়ার এই দুই দেশের সাদা পোশাকের লড়াই।
সেমি-ফাইনালে খেলার আশা নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গেলেও দলীয় ব্যার্থতায় আট নম্বরে থেকে মিশন শেষ করতে হয় টাইগারদের। বিশ্বকাপ শেষে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কায় তিনটি এক দিনের ম্যাচ খেলতে গিয়েও ধবলধোলাইয়ের শিকার হয় দলটি।
ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেই সাদা পোশাকের বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বললেন, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে জয় পেলেই বাংলাদেশ ফিরে পাবে তাদের সহজাত খেলা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমরা যে ম্যাচগুলো খেলেছি সেখানে আমরা সবার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি বয়সভিত্তিক দল, বাংলাদেশ এ দল এবং আমাদের হাই-পারফর্মেন্স টিমও ভালো করতে পারেনি। অনুর্ধ্ব-১৯ দল ইংল্যান্ডে একটি ফাইনাল খেলেছে যা একমাত্র মনে রাখার মত। এখন আমরা যদি এই ম্যাচটা সহজে জিততে পারি তাহলে, তাহলে তা আমাদের স্বাভাবিক খেলা ফিরে পেতে সাহায্য করবে।”
জয়ের জন্য কতোটা মরিয়া হয়ে আছে বাংলাদেশ সেটা সাকিবের কথাতেই স্পষ্ট হল।
“জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা যেভাবেই বলেন। একটা জয় সবসময়ই জয়; সেটা এক রানের জয় হোক কিংবা ১০০ রানের জয় হোক, সেটা এক উইকেটে জয় হোক বা ১০ উইকেটে জয় হোক।
সাকিব বলেন, একাদশে কতজন স্পিনার বা কতজন পেসার খেলবে সেটা নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তা নেই তার। এর চেয়ে বরং ‘দল হিসেবে’ খেলতে পারার ব্যাপারেই তার যত মনযোগ।
“আমি এটা নিয়ে খুব একটা ভাবি না। যখন অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ড কোন স্পিনার ছাড়াই চার পেসার নিয়ে খেলে তখন আমরা এটা নিয়ে সমালোচনা করি না। আমি মনে করিনা এটা নিয়ে এতো কথা বলার কিছু আছে। এর চেয়ে বরং খেলাটাকে আমরা কিভাবে নিজেদের করে রাখতে পারি সেদিকে মনযোগ দিতে চাই আমরা। এটা যদি তিনজন পেসার নিয়ে করা যায় তাহলে আমরা তা-ই করবো, অথবা যদি একজন স্পিনার লাগে তবে আমরা সেটা নেবো।”
দেশের মাটিতে বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে পেসারদের সামর্থ্য কম থাকায় বাংলাদেশ বরাবরই স্পিনারদের ওপর ভরসা রেখে এসেছে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক বিশ্বাস রাখছেন নবনিযুক্ত পেস-বোলিং কোচ চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট এর উপর।
“আমি যেহেতু পেসার নই, তাই দলের পেসারদের মনে কি ভাবনা চলছে তা আমার পক্ষে বোঝা কষ্টকর। ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা বোলিংয়ে অভ্যস্ত না হওয়াটাও বড় ভার্সনের ম্যাচে ব্যার্থতার অন্যতম কারণ। তবে আমি নিশ্চিত নতুন পেস বোলিং কোচ এ বিষয়টি দেখবেন।”
ধারণা করা হচ্ছে, ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে বড় পার্থক্য গড়ে দেবেন দুই দলের স্পিনাররা। তবে সাকিব বলছেন ভিন্ন কথা। তার ধারণা, ব্যাটসম্যানরাই এই টেস্টে জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
“দেশের মাটিতে যখন নিজেদের প্রমাণের সুযোগ এসেছে তখনই আমাদের স্পিনাররা খুব ভালো বোলিং করেছে। আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণও বেশ ভালো। তবে আমার ধারণা, জয়-পরাজয়ের মূল পার্থক্য গড়ে দেবেন দুই দলের ব্যাটসম্যানরা।”
“তবে আমি আমার ব্যাটসম্যানদের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখছি। গত দুই সপ্তাহে যতটা প্রস্তুতি নিয়েছে, আসলে এর চেয়ে বেশি কিছু করা আমার কাছে উচিত বলে মনে করি না। সবাই যার যার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দিয়েছে। এখন শুধু মাঠে ওই অনুশীলনের প্রতিফলন ফেলতে পারলে, আমরা ভালো কিছু করতে পারব।”