বাংলাদেশের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের মানবিক সহায়তা জাতিসংঘের
জাতিসংঘ ও এর অংশীদাররা বাংলাদেশে উপর্যুপরি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ত্রাণ ও সহায়তা দেওয়ার জন্য ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বিবেচনায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের মে মাস থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল, হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা, যমুনা অববাহিকায় বন্যা, দেশের পূর্বাঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যাসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চারটি নজিরবিহীন ও বিধ্বংসী দুর্যোগে বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এগুলো বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলেছে, যা বাংলাদেশের ৪৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করেছে এবং জীবিকা ও অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করেছে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দেওয়ার জন্য সরকারের নেতৃত্বে একটি পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার ফল এই মাল্টি-হ্যাজার্ড হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স প্ল্যান (এইচআরপি)।
এইচআরপির লক্ষ্য বাংলাদেশের ২৮টি জেলার ২৫ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানো। এইচআরপি মাত্র ২৮ শতাংশ তহবিল পেয়েও মোট ১৮ লাখ মানুষকে সহায়তাকরতে পেরেছে।
হিউম্যানিটারিয়ান কো-অর্ডিনেশন টাস্ক টিমের (এইচসিটিটি) কো-চেয়ারেরা, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান এই পরিকল্পনাটি চালু করেন।
লুইস বলেন, 'এটি বাংলাদেশের একটি নজিরবিহীন মানবিক সংকট, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশটি একাধিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে।'
তিনি বলেন, সরকার ও মানবিক সম্প্রদায় মানবিক সহায়তা প্রদানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বলেন, 'আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সরকার, জাতিসংঘ, বহুপাক্ষিক ও এনজিও অংশীদারদের মাধ্যমে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে দুর্যোগের মাত্রা ও পুনরাবৃত্তি তীব্রতর হচ্ছে এবং জলবায়ু সংকটের যৌথ সমাধানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ও সহায়তা করতে আমাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।'
সংশোধিত এইচআরপিতে শিশু সুরক্ষা ও শিক্ষা, বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা, খাদ্যতালিকাগত চাহিদা বজায় রাখার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সেবা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং পানি সরবরাহ ও ল্যাট্রিন পুনর্গঠনসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে জরুরি চাহিদা মোকাবিলার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
এটি নারী, শিশু, হিজড়া, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং বয়স্কদের মতো দুর্বল গোষ্ঠীর সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়। এই অনুদান জীবিকা রক্ষা এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায়ও সহায়তা করবে।