শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জাবির জাহানারা ইমাম হল প্রভোস্টের পদত্যাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুরশেদা বেগম।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় পাঠানো এক ইমেইল বার্তায় তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে, রাত ১১টায় তার পদত্যাগসহ ২২ দফা দাবিতে হলের গেটে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তার পদত্যাগের দাবি জানান তারা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়ে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক মুরশেদা বেগম।
দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শুরুর দিকে ১৫ জুলাই ক্যাম্পাসে প্রথম ছাত্রলীগ ও পুলিশ হামলা চালালে প্রোভোস্ট মুরশেদা বেগম মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আসেননি, গত ১৬ জুলাই রাতে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ভিসি নূরুল আলমকে সমর্থন জানিয়ে বলেন তিনি বলেন, 'কোনো মেয়ে আন্দোলনে গেলে এবং আহত হলে সেই দায় তিনি নেবেন না'। পরের দিন দুপুরে ড. মুরশেদা বেগমের নির্দেশে হল সুপার হলের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে জাহানারা ইমাম হলের মেয়েদের যৌক্তিক ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে শামিল হতে বাধা দেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, প্রভোস্টের দায়িত্বে থাকাকালীন ড. মুরশেদা বেগমের আপন বোন রোমানা ইসলামকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে জাহানারা ইমাম হলের 'এ ব্লক' এর হল সুপার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগের অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির সম্ভাবনাকে এড়ানো যায় না। তার কাছে নিয়োগের স্বচ্ছতাজনিত প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে তিনি সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেন নি কিংবা ডকুমেন্টস দেখাতেও অপরাগ হয়েছেন।
এছাড়া, গত বছর হল সংস্কারের কাজে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বাজেট আসলেও ৯৯ লাখ টাকার কাজ হয়েছে। সেই বাজেটের টাকাগুলো কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে, সেই প্রমাণসহ হিসাব শিক্ষার্থীদের কাছে এখনো দেখাতে পারেননি ড. মুরশেদা।
সর্বোপরি, ড. মুরশেদা বেগম জাহানারা ইমাম হলে মেয়েদেরকে সেবা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব নেন নি, বরং তিনি তার ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য হলের হল প্রোভোস্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন হলের শিক্ষার্থীরা।
এসময় উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হলের সামনে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), প্রক্টর এবং প্রক্টরিয়াল টিম। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।
উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, "শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করার ১৫ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসাথে, হল সুপারদ্বয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদেরও বিচার নিশ্চিত করা হবে।"