আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের
স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমাতে আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর থেকে ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সুপারিশ করেছে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, কমিশন এ বিষয়ে এনবিআরকে একটি সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে।
বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে স্থানীয় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১৪০–১৫০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১২০–১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসে দেশীয় পেঁয়াজের দাম ৩০.২৩ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৭.৮৯ শতাংশ বেড়েছে।
'ভারতে এ বছর ভারী বৃষ্টির কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় পেঁয়াজ দেশটিতে রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে,' ট্যারিফ কমিশন চিঠিতে উল্লেখ করেছে।
কমিশন আরও জানায়, অক্টোবরে পেঁয়াজের আমদানি আগের মাসের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্থানীয় বাজারে এখনও পণ্য সরবরাহে ঘাটতি রয়ে গেছে।
'পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি করে দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ মুহূর্তে ৫ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা যায়। এতে আমদানির খরচ কমবে এবং [পেঁয়াজ] আমদানিকে উৎসাহিত করা হবে,' কমিশন বলেছে।
আমদানির পরিসংখ্যান
কমিশন জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ মোট ৪৩ হাজার ৯৩৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে, যার গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ৪৬৬.১৪ ডলার। এর বিপরীতে, অক্টোবরে আমদানির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮০ হাজার ৯৭৩ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এ মাসে গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ৪২৮ ডলার।
এছাড়া, গত দুই মাসে মোট এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে।
ভারত থেকে আমদানির খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে পেঁয়াজের দাম ১১৬.৪৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত মাসে দাম ৬.৩৮ শতাংশ হ্রাস পেলেও, গত সপ্তাহে তা আবার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২৬–২৭ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে; এর মধ্যে ৭৫–৮০ শতাংশ দেশীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। বাকি চাহিদাপূরণে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, যার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে।