করোনা আক্রান্তদের ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধছে, দেখা দিচ্ছে 'ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস'
বিশ্বজুড়েই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এগিয়ে আসছে শীতকাল। এতে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ নিয়ে আতঙ্কে আছে পশ্চিমের শীতপ্রধান দেশগুলো। আর মাঝেই গবেষণায় ধরা পড়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে বাড়ছে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস অথবা ভেনাস থ্রম্বো এম্বলিজম (ভিটিই)-এর সম্ভাবনা।
দেহের ভেতরের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে সেই গুরুত্বর অবস্থাকে বলে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস। এই জমাট বাঁধা রক্ত ঢুকে পড়ে ফুসফুসে।
রিসার্চ অ্যান্ড প্র্যাক্টিসেস ইন থ্রম্বোসিস অ্যান্ড হিমোস্ট্যাসিস জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এই গবেষণা বলছে, হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের ভিটিই-র ঝুঁকি ৫ থেকে ১১ শতাংশ। অথচ গুরুতর অসুস্থ থাকা হাসপাতালের বাকি কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি ১৮ থেকে ২৮ শতাংশ।
মোট ৫ হাজার ৯৫১ জন কোভিড রোগীকে পরীক্ষা করে গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ভিটিই-তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ শতাংশ। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে থাকা রোগীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ২৩ শতাংশ।
এই গবেষণার ফলে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কে আরও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে, কোন ধরনের কোভিড রোগীকে কোথায় রাখা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে বলে জানান ভিয়েনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিহান আই।
তবে শুধু ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিসই নয়, করোনা ভাইরাসের আক্রমণে নানা আনুষঙ্গিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে মানুষের শরীরে। এই নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরেই গবেষণা চলছে। সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ হৃদপিণ্ডের অপূরণীয় ক্ষতি করে দিচ্ছে। এমনকি যাদের ক্ষেত্রে মৃদু সংক্রমণ হচ্ছে, তাদের হার্টেও স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা বলছে রোগী করোনা আক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ার মাসখানেক পরেও হৃদযন্ত্রে প্রদাহ এবং ক্ষত থেকে যাচ্ছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিডজয়ী রোগীদের রোগমুক্ত হওয়ার পরেও শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় হওয়া- এই সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
কারণ বিশ্লেষণে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর কার্ডিওভাস্কুলার বায়োলজির গবেষক চার্লস মুরি বলছেন, হার্টের পেশি-কোষ নতুন করে তৈরি হয় না, জন্মের সময় থেকে একই থাকে। তাই কোনও ভাবে এই কোষের ক্ষয়ক্ষতি হলে তা সারার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে, হার্টের যান্ত্রিক ক্ষমতা কমে যায়।