উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আওয়ামী লীগের আমলের বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন বাতিল
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামালে তৈরি করা 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০' বাতিল করার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার (২০ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের ১৩তম বৈঠকে আইনটি বাতিল করে অধ্যাদেশ জারির নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে ৫ আগস্ট শাসনক্ষমতা পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এ আইনের অধীনে সকল আলোচনা এবং ক্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল।
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, 'আইনের ধারা-৬-এর অধীনে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি সম্পাদন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বিষয়ে জনমনে প্রবল বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে।'
এর আগে এক রিট আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর ৬(২) ও ৯ ধারায় দেওয়া দায়মুক্তি অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ এবং ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ব্যক্তির একক ক্ষমতা গণতান্ত্রিক দেশে থাকতে পারে না। এটি সংবিধানের পরিপন্থি।
তাই 'জনস্বার্থে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্রয় ও সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে' আইনটি বাতিলের নীতিগত ও চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ওই অধ্যাদেশ-এর খসড়া লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।
১৪ নভেম্বর আদালতের রায়ের পর রিটের পক্ষে থাকা আইনজীবী শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, 'বিশেষ বিধান আইনটি সাধারণত কুইক রেন্টাল আইন নামে পরিচিত। আইনটির ৬-এর (২) উপধারা ও ৯ নম্বর ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছি।'
৬-এর ধারায় বলা আছে, জ্বালানিমন্ত্রী তার একক বিবেচনায় কোনো একক ব্যক্তি বা কোম্পানির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি সই করতে পারবেন। এখানে মন্ত্রীর একক বিবেচনায় যাকে ইচ্ছা, যত টাকায় ইচ্ছা চুক্তি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।