প্রকাশের ১৫০ বছর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কারণে আলোচিত ফিওদর দস্তয়েভস্কির বই
টিকটকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে নানা পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর বিষয়টি অহরহই দেখা যায়। বই বিক্রির ক্ষেত্রেও ইদানীং একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কলিন হুভার কিংবা সারাহ জে মাসের মতো লেখকদের বই বহির্বিশ্বে এতে আরও পাঠকপ্রিয়তা পাচ্ছে। আর এ ধারায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে লেখক ফিওদর দস্তয়েভস্কির বই।
চলতি বছর দস্তয়েভস্কির বই 'হোয়াইট নাইটস' যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সাহিত্যকর্মের তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। লন্ডনের এক বুকশপের জেনারেল ম্যানেজার এমি রাইট বলেন, '১৯ শতাব্দীর রুশ লেখকের বইটি বর্তমানে বেশ আলোচিত হচ্ছে। গতবছর আমরা ছোট এই বইটির ১৯০ কপি বিক্রি করেছি।'
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে ১৮৪৮ সালে প্রকাশিত 'হোয়াইট নাইটস' বইটি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো মাত্র ৮০ পৃষ্ঠার বইটি কেন এখন জনপ্রিয় হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
লন্ডনের এক টিকটক ব্যবহারকারী এল্লি হওলেট বলেন, 'বইটি সংক্ষিপ্ত হওয়ায় আমি এটি পড়তে আগ্রহবোধ করেছি।'
অনেকেই প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বই পড়ার লক্ষ্য নিয়ে থাকেন। গুডরিডসের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে সেটির হিসাবও রেখে থাকেন। সেক্ষেত্রে এমন ছোট ছোট বই পড়লে কম সময়ে বেশি বই পড়া যায়।
তবে শুধু যে সংক্ষিপ্ততার কারণেই বইটি জনপ্রিয় হয়েছে এমনটা নয়। বরং ক্লাসিক রুশ সাহিত্যকর্মটির গল্পও পাঠকের মন ছুঁয়েছে।
বইটিতে এক তরুণ ও নারীর মধ্যকার খুব অল্প সময়ের পরিচয়ে নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। ঐ নারী কিছুদিন তার প্রেমিকের জন্য অপেক্ষ করেন আর নামহীন তরুণ ঐ অল্প কয়েকদিন তার বন্ধু হিসেবে সঙ্গে থাকেন।
তবে এক পর্যায়ে ঐ তরুণের পক্ষ থেকে ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হলেও ঐ নারীর জীবনে প্রেমিক থাকায় তা আর পূর্ণতা লাভ করে না। নারীর প্রেমিক কয়েকদিন পর ফিরে আসায় ঐ তরুণের ভালোবাসা অসমাপ্তই থেকে যায়।
সহজ সরল গল্প হলেও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীদের একটা বিরাট অংশ নিজেদের জীবনকে এর সঙ্গে মিলিয়েছেন।
ইনস্টাগ্রামে বইয়ের কন্টেন্ট তৈরি করেন ২২ বছর বয়সি মৌসুমি আভিরা। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়েছে যারা স্বপ্নে বিভোর থাকে, অন্যদের থেকে নিজেকেই সেরা মনে এমন বিষয়টিই বইয়ের গল্পে উঠে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের এমনটাই ভাবতে শেখায়।'
'হোয়াইট নাইটস' সচরাচর রোমান্টিক গল্পগুলোর মতো না হলেও অনেকেই পড়তে গিয়ে এমনটা অনুভব করছেন। ২১ বছর বয়সি পাঠক নাওমি মনে করেন, তরুণদের মধ্যে ডেটিং অ্যাপস ব্যবহারের মতো বিষয়গুলোর জন্য তারা এ গল্পে নিজেদেরকে আরও বেশি যুক্ত করতে পারছেন।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান