পরিবারের ৬ সদস্যসহ সাবেক হুইপ সামশুলের সম্পদের হিসাব চায় দুদক
চট্টগ্রামের পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের ব্যাংক হিসাব ও তাদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ছাড়াও পরিবারের বাকি সদস্যরা হলেন— সামশুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার চৌধুরী, ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, মেয়ে তাকলিমা নাছরিন চৌধুরী, তাহমিনা নাসরিন চৌধুরী, ভাই ফজলুল হক চৌধুরী ও মজিবুল হক চৌধুরী।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক এমপি-মন্ত্রী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরমধ্যে চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাবেক এমপি সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি।
দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম বলেন, "অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বিভিন্ন দপ্তরে এবং ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। তথ্য পাওয়ার পর এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে।"
২০২৩ সালের ৮ মে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন সাবেক হুইপ ও চট্টগ্রামের পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। সে সময় দুদকের সচিব মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে এবং দুদকে বিভিন্ন ব্যক্তির করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন সাবেক হুইপ সামশুলসহ আরও বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেন। প্রায় চার বছর অনুসন্ধানের পর সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নামে হওয়া সংবাদ এবং অভিযোগের সত্যতার কোনো প্রমাণ এবং তার নামে-বেনামে কোনো অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
অবশ্য অভিযুক্ত অন্য এমপিদের দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করলেও সেসময় সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে দুদক কখনো জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
এর আগে, সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ তোলা পুলিশ পরিদর্শক সাইফ আমিনকে আদালত সাজা দেন। তার বিরুদ্ধে সামশুল হক 'মিথ্যা তথ্য' ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করেছিলেন আদালতে।
অবৈধ সম্পদ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে সামশুল হক চৌধুরীকে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল দুদক।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর দুদক তফসিলভুক্ত অবৈধ সম্পদের অপরাধ খতিয়ে দেখতে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে।