৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে নীলফামারীর চিলাহাটী- ভারতের হলদিবাড়ী রেলপথ
নীলফামারীর চিলাহাটী থেকে ভারতের হলদিবাড়ী পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলের রেলপথটি পুনরায় সচল হতে চলেছে।
আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ অংশে নব-নির্মিত রেলপথে ৫টি পণ্যবাহী কোচ নিয়ে একটি ট্রায়াল ইঞ্জিন চালিয়ে সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদি।
নতুন রেল সংযোগে দুই দেশের যোগাযোগ নতুন মাত্রা পাবে, এমন আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সুত্রে জানা গেছে, বৃটিশ শাসনামল থেকে শুরু করে ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের আগ পর্যন্ত এ রেলপথে চলাচল করতো কলকাতা-দার্জিলিং রুটের ট্রেন।
নীলফামারী অধিবাসী তোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু জানান, রেলপথে ৫টি পণ্যবাহী কোচ ট্রায়াল ইঞ্জিন চালিয়ে যাচাই করা হয়েছে। শুধু যাচাই নয় এটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। আর এটি চালু হলে তা বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে অনেক বড় ভুমিকা রাখবে।
যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি চলতো পণ্যবাহী ট্রেনও। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর তৎকালীন দুই দেশের সরকার- ভারতের হলদিবাড়ী থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার এবং নীলফামারীর চিলাহাটী থেকে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার রেললাইন তুলে ফেলে। সেই থেকে পরিত্যাক্ত হয় এ রেলপথ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভারত সরকার চিলাহাটী-হলদীবাড়ি রেলপথ পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়।
ইতোমধ্যেই, ভারত সরকার ৩১ কোটি রুপি ব্যয়ে হলদিবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করেছে। দেশটির রেল বিভাগ সম্প্রতি নব-নির্মিত রেলপথে একটি ট্রায়াল ইঞ্জিন চালিয়েও সক্ষমতা যাচাই করেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ অংশে প্রায় ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌনে ৭ কিলোমিটার রেল লাইন কাজ শেষ হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রী অ্যাড. নুরুল ইসলাম সুজন গত ২৮ আগষ্ট এটি পরিদর্শন করে গেছেন।
উদ্বোধনের পর প্রথম ধাপে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে চলাচল করবে পণ্যবাহী ট্রেন। দ্বিতীয় ধাপে পণ্যবাহী ট্রেনের পাশাপাশি চলাচল করবে যাত্রীবাহী রেলগাড়ি।
সংশ্লিষ্টদের আশা, এর মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি ভূটান ও নেপালের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে।
রেলপথ মন্ত্রী অ্যাড. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ভারতের সাথে রেলপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চিলাহাটী-হলদিবাড়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। বর্তমান সরকার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, আধুনিক ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিণত করতে ২০১১ সালে পৃথক একটি রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে। মন্ত্রণালয়ের আওতায় দেশে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় চিলাহাটী-হলদিবাড়ী রেলপথ নির্মাণ করা হয়। যা এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করবে।