টুইটার কেনার আসল কারণ জানালেন ইলন মাস্ক
স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এক্স (তৎকালীন টুইটার) কিনেছেন তথাকথিত 'ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস' ধ্বংস করতে। মাস্ক আধুনিক সমাজের অনেক সমস্যার জন্য চরম উদারপন্থাকে দায়ী করেন।
গতকাল শনিবার এক্স-এ দেওয়া একটি পোস্টে মাস্ক লেখেন, "২০২১ সালে আমি ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়েছিলাম এবং এখন এটি মুছে গেছে।" এই মন্তব্যের সঙ্গে তিনি ২০২১ সালে করা তার একটি পোস্টও শেয়ার করেন, সেখানে লেখা ছিল, "ট্রেসরুট ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস"। ট্রেসরুট হলো একটি ডায়াগনস্টিক কমান্ড, যা ইন্টারনেট প্রটোকল নেটওয়ার্কের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়।
তার সেই পোস্টে এক এক্স ব্যবহারকারী মাস্ককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, "এটাই কি ছিল টুইটার কেনার প্রধান কারণ?" জবাবে মাস্ক বলেছিলেন, "হ্যাঁ।"
মাস্ক প্রায়ই তথাকথিত 'ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস'-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকেন। এটি একটি বিস্তৃত শব্দযুগল, যা কিছু রক্ষণশীলরা চরম উদারনৈতিক দর্শন ও নীতিমালা সমালোচনার জন্য ব্যবহার করেন। এর মধ্যে রয়েছে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক নীতিমালা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ এবং কর্মস্থলে যোগ্যতার পরিবর্তে বৈচিত্র্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
কানাডিয়ান মনোবিজ্ঞানী ড. জর্ডান পিটারসনের সঙ্গে গত জুলাইয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক বলেন, তথাকথিত 'ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস' তার ছেলেকে 'মেরে ফেলেছে'। তিনি তার ট্রান্সজেন্ডার সন্তান জেভিয়ারের কথা উল্লেখ করে দাবি করেন, চিকিৎসকেরা তাকে প্রতারিত করে এমন নথিতে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন, যা তার সন্তানের হরমোন চিকিৎসার অনুমোদন দেয় এবং ফলে স্থায়ীভাবে সে বন্ধ্যাত্ব বরণ করে।
মাস্ক বলেন, "আমি মূলত আমার ছেলেকে হারিয়েছি। একে 'ডেডনেমিং' বলা হয় কারণ এর পেছনে কারণ রয়েছে। একে 'ডেডনেমিং' বলা হয় কারণ আপনার সন্তান মৃত। আমার ছেলে জেভিয়ার মারা গেছে, 'ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস'-এর কারণে। আমি তখনই এই ভাইরাস ধ্বংসের শপথ নিয়েছিলাম।"
ইলন মাস্ক ২০২২ সালে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন এবং এর নাম পরিবর্তন করে এক্স রাখেন। তিনি টুইটারকে পুনর্গঠিত করার সময় তার অধিকাংশ কনটেন্ট মডারেশন স্টাফকে বরখাস্ত করেন এবং বেশিরভাগ সেন্সরশিপ নীতিমালা বাতিল করেন। এক্স ছিল প্রথম বড় সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করে, যেটি জানুয়ারি ২০২১-এ ক্যাপিটল হিলে তার সমর্থকদের বিক্ষোভের পর সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল।
প্রথম থেকেই এক্স প্ল্যাটফর্মটি অন্যদের থেকে আলাদা ছিল। এর সংস্কারের অংশ হিসেবে এক্স থেকে বিভিন্ন স্পিচ বা কন্টেন্টের ওপর নীতিমালা তুলে দেওয়া হয়। তবে প্রতিযোগী সংগঠনগুলো সেই নীতিমালা বজায় রেখেছিল। তবে সম্প্রতি মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মডারেশন নীতিমালা শিথিল করবে এবং "মুক্ত অভিব্যক্তি পুনরুদ্ধার" করতে তৃতীয় পক্ষের "ফ্যাক্ট চেকারদের" সাথে আর কাজ করবে না।
এই পরিবর্তনগুলোর পাশাপাশি, মেটা তাদের বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি (ডিইআই) নিয়োগ প্রোগ্রামগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা অফিসের পুরুষদের বাথরুম থেকে "টেমপন" সরিয়ে ফেলেছে, যা আগে "ননবাইনারি এবং ট্রান্সজেন্ডার কর্মীদের" জন্য সরবরাহ করা হতো।