ভারত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বেড়া দেওয়ার সব প্রোটোকল-চুক্তি মেনে চলেছে: ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
বেড়া নির্মাণসহ সীমান্তে সুরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে দুই দেশের সরকার এবং সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে থাকা সব 'প্রোটোকল ও চুক্তি' অনুসরণ করেছে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে ভারত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে সাউথ ব্লকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বার্তা দিয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে গভীর উদ্বেগের কথা জানানোর পরদিনই এই বার্তা দিলো ভারত।
আন্তঃসীমান্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ, চোরাচালান, অপরাধীদের চলাচল এবং পাচারের চ্যালেঞ্জগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিত করার বিষয়ে ভারত তার অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য কাঁটাতারের বেড়া, সীমান্তে বাতি ও প্রযুক্তিগত ডিভাইস স্থাপন এবং গবাদি পশু পাচার রোধে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ভারত প্রত্যাশা জানিয়েছে, বাংলাদেশ আগের সব সমঝোতা বাস্তবায়ন করবে এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
রবিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন 'অভিন্ন সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে এমন যেকোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড' থেকে বিরত থাকতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।'
তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার বিষয়ে আমাদের সমঝোতা হয়েছে।
আধা ঘণ্টারও বেশি সময়ের বৈঠক শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের দুটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ ও বিজিবি এ বিষয়ে যোগাযোগ করছে।'
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে একটি সমঝোতার কথা উল্লেখ করে এই কূটনীতিক বলেন, 'দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।'
হাইকমিশনার বলেন, 'অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিতের ব্যাপারে ভারতের প্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছি। চোরাচালান, অপরাধীদের চলাচল, পাচারের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে দমনের বিষয়ে আলোচনা করেছি।'
পররাষ্ট্র সচিব জোর দিয়ে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশেষ করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের অননুমোদিত প্রচেষ্টা এবং বিএসএফ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট অপারেশনাল পদক্ষেপের কারণে সীমান্তে উত্তেজনা ও অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যথাযথ অনুমোদন ছাড়া কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সহযোগিতার চেতনা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষুণ্ন করবে।
পররাষ্ট্র সচিব আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, বিশ্বের দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলোর মধ্যে একটি। সীমান্ত সুরক্ষা সমস্যা থেকে শুরু করে মানুষের চলাচলের মতো ঘটনাগুলো প্রায়শই বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।