পরীক্ষা দিতে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মী আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে আসা এক ছাত্রলীগ কর্মীকে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় আটক করে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়।
আটক ছাত্রলীগ কর্মীর নাম শরীফুল ইসলাম সোহান। সে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং আ.ফ.ম কামাল উদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র।
জানা যায়, দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় হল রুমে বসেছিল সোহান। এসময় শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে পরীক্ষা হলে গিয়ে তার পরীক্ষা আটকানোর কথা বললে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বলেন। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে পরীক্ষার মাঝেই আটক করেন। পরে প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষকদের ছত্রছায়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর আগেও ৪৭ ব্যাচের আরেক ছাত্রলীগ নেতা এভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। প্রায় ছয় মাস পেরুতে চললেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। এসব হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
সোহানকে আটকারীদের একজন দর্শন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, 'বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের হামলাকারীদের যে লিস্ট করা হয়েছিল সেখানে তার নাম ও ছবি আছে। আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিভাগে যাই এবং বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারকে জানাই যে সে হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, তার ভিডিও ফুটেজও আছে। ওইদিন হামলায় আমাদের অনেকে আহত হয়েছে। সে ক্যাম্পাসে আসে কীভাবে? আজকে তার দ্বিতীয় পরীক্ষা। সে পরীক্ষা দিতে বসে কীভাবে? তাদের তো জেলখানায় থাকার কথা।'
তিনি আরও বলেন, 'পরীক্ষা দেওয়ার সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত। এখানে হলের প্রভোস্ট, বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর লাগে। তারা কীভাবে এরকম একজন হামলাকারীকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?'
পরীক্ষায় অনুমতিদানে শিক্ষকদের কোনো ইন্ধন আছে কি-না জানতে চাইলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, 'এমন কোনো বিষয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি যে কে পরীক্ষা দিতে পারবে, কে দিতে পারবে না। ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্যও বলা হয়নি যে তারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে সবাইকে চিনি না যে কারা কারা হামলার সঙ্গে জড়িত। সব হামলাকারীকে তো আর একসঙ্গে মনে রাখা যায় না।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, 'তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।'