ভারত থেকে ৯,৬৬২ টন চাল আমদানি হয়েছে, বাজারে কোনো প্রভাব নেই
বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় দুই মাসে ৯ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন চাল আমদানির পরও যশোরের বাজারগুলোতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং গত সপ্তাহেও চালের দাম কেজিতে চার-পাঁচ টাকা বেড়েছে।
আমদানিকারকেরা বলছেন, ভারতে চালের দাম বেশি। বেশি দামে আমদানি করায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন তারা। আর ক্রেতারা বলছেন, এখন ধান-চালের ভরা মৌসুম। কৃষকের ঘরে উঠেছে আমন ধান। তারপরও সাধারণ মানুষকে বেশি দামেই চাল কিনতে হচ্ছে। এতে অনেকে আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
ভরা মৌসুমেও বাড়তি দামের কারণে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তাদের অভিযোগ- সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দাম কমছে না।
আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণার পর গত বছরের ১৭ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দুই মাসে বেনাপোল দিয়ে ৯ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। সরকার গত ১৭ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয়। এ সময়ের মধ্যে আশানুরূপ আমদানি না হওয়ায় সময় বাড়িয়ে চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। তাতেও দেশের বাজারে চালের দাম না কমায় ভারত থেকে আমদানির জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক মাস সময় বাড়িয়েছে সরকার।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, আট প্রতিষ্ঠান গত ১৭ নভেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। ৯২ প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। অনেক প্রতিষ্ঠান এ সময়ের মধ্যে আমদানি করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি না হওয়ায় আরও এক মাস সময় বাড়িয়েছে সরকার। এ সময়ের মধ্যে সব চাল আমদানি হলে দাম কমবে।
এদিকে চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দাম কমছে না বলে জানিয়েছেন অটোরাইস মিল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীরা।
যশোরের নাভারণ বাজারের চৌধুরী রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী রাশেদ চৌধুরী বলেন, পাইকারিতে মোটা চাল ৫১ টাকা ও স্বর্ণা মোটা চাল ৫৩ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। আমদানিও স্বাভাবিক রয়েছে। সামনে দাম কমবে।
যশোরে চলতি মৌসুমে এক লাখ ৬০ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এবার ধানের বাজারও বেশ চড়া। এক হাজার ৩৫০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ধান।
কয়েকটি অটোরাইস মিল ঘুরে জানা গেছে, মিল মালিকেরা জেলার বাইরে থেকে যেসব ধান কিনে আনছেন, তা থেকে চাল করতে মোটা চালের ক্ষেত্রে ৫০ টাকা এবং চিকন চালের ক্ষেত্রে ৬৩ টাকার বেশি খরচ পড়ছে।
যশোর শহরের বড় বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আশিষ কুমার বলেন, 'বর্তমানে মোটা চাল ৫২, হীরা চাল ৪৮, উনপঞ্চাশ চাল ৫৬, আটাশ চাল ৫৮-৬০, জিরাশাইল ৭৫, মিনিকেট ৬৫, ইন্ডিয়ান মিনিকেট ৭৫, বাসমতি ৯০, পাইজাম ৫৬, স্বর্ণা ৫৫ ও নাজিরশাইল ৮০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।'