চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আরব আমিরাতের ফ্ল্যাট-ভিলা ক্রোকের আদেশ
পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আদালত।
আজ বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
এদিন দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধান কমিশনের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান তার ফ্ল্যাট-ভিলা ক্রোকের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ফ্ল্যাট দুটি ক্রোকের আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, চৌধুরী নাফিজ সারাফাতের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিদেশে এসব অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। দুবাইয়ে থাকা সব সম্পদের পূর্ণাঙ্গ বিবরণসহ দুদকের উপপরিচালক আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে ওই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাতে সব সম্পত্তি জব্দ করে, সেই আদেশ চাওয়া হয়েছে।
দুদকের পক্ষে থেকে আদালতকে জানানো হয়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া পাঁচ বেডের একটি ভিলা কিনেছেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থ পাচার করেছেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্পদ দিয়ে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন তিনি।
দুদকের তথ্য বলছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২–এ রয়েছে ২০ তলা বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া গাজীপুর ও ঢাকার বাড্ডায় ২৫ কাঠা জমি রয়েছে।
চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রাজধানীতে পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তার। এর বাইরে তার নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক।
এছাড়া চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এছাড়াও চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর–সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।
এর আগে ৭ জানুয়ারি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ, ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থাকা ১৮টি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। ফ্ল্যাট ক্রোকের পাশাপাশি নাফিজ সারাফত ও আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে থাকা জমিসহ বাড়ি, প্লটও ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়।