পঞ্চগড়ে ৪ বিচারপতি অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য হুমকি: জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও বিচারকদের অবরুদ্ধ করে রাখা স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছে অধস্তন আদালতের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ মন্তব্য করে। জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এসময় বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিচার বিভাগের সংস্কার যখন চলমান, ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা লক্ষ করেছি, যা একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য হুমকিস্বরূপ। গত ২৬ জানুয়ারি একদল বিক্ষুব্ধ জনতা পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চারজন বিচারকের অপসারণ দাবি করে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং বিচারকদের অবরুদ্ধ করে তাঁদের মধ্যে জীবননাশের ভীতি সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা আদালতের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে আদালতের কর্মচারীদের মারধর এবং আদালত ভবনের জানালা-দরজা ভাঙচুর করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতিপূর্বে মুন্সিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, বরগুনা (পাথরঘাটা), কুষ্টিয়া, নওগাঁ, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে বেআইনিভাবে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও আদালত ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি আমরা লক্ষ করেছি। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা যেমন ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তেমনি আদালতে বিচারকাজ পরিচালনার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন আরও বলছে, কোনো বিচারক বেআইনি কাজ করে থাকলে বিধিসম্মতভাবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তা না করে আদালত চত্বরে হট্টগোল, বেআইনি সমাবেশ, বিচারকদের অবরুদ্ধ করা, আদালতের কর্মচারীদের মারধর ও আদালত ভবনে ভাঙচুর করে বিচারকদের দমিয়ে রাখার প্রচেষ্টা রাষ্ট্র ও বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে।
এমন অবস্থায় দেশের সব আদালত চত্বর ও বিচারকদের নিরাপত্তায় সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণ ও অধীনে পৃথক কোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) গঠনের দাবি জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।