৩২ নম্বরে ভাঙচুর: ডিএমপি কমিশনার বললেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি’
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ও তার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে ডিএমপি কমিশনার দাবি করেছেন, ভাঙচুর বন্ধে তারা 'চেষ্টা করেছেন'।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার উত্তরায় কাউন্টার ও ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে বাস সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
এ সময় এক সাংবাদিক জানতে চান, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর ঠেকাতে পুলিশের কী পদক্ষেপ ছিল।
জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি, আমরা চেষ্টা করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত আমি নিজে সেখানে ছিলাম।'
তবে রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর একাধিক প্রতিনিধি রাত ৯টার পর মিরপুর রোডের পশ্চিম অংশে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের আশপাশে পুলিশের কোনো উপস্থিতি দেখতে পাননি।
একই দাবি করেছেন সে সময় ঘটনাস্থলে থাকা অন্যান্য গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। এমনকি ডিএমপি কমিশনারকেও সেখানে দেখা যায়নি বলে দাবি করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকেরা।
প্রসঙ্গত, সাধারণত ডিএমপি কমিশনার কোনো স্থানে গেলে পুলিশ মিডিয়া বিভাগ থেকে ছবি সংযুক্ত করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়, তবে এবার গতকাল বা আজ বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তা করা হয়নি।
এই প্রতিবেদক রাত সাড়ে ৮টার দিকে সন্তুর রেস্টুরেন্টের পাশে মিরপুর রোডের মূল সড়কে একটি পুলিশ ভ্যানের পাশে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তবে রাত ৯টার পর তারা কলাবাগানের বাস কাউন্টারগুলোর দিকে চলে যান।
গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে বিক্ষুব্ধ জনতা। রাত ৮টার দিকে এ ভাঙচুরের ঘটনা শুরু হয়।
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল অধিবেশনে যোগদানের ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার রাত ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে 'বুলডোজার মিছিল'র ঘোষণা দেওয়ার পরই এ ভাঙচুর শুরু হয়।
এদিন সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতা আন্দোলন নামে ফেসবুকে বিভিন্ন পেজে এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে পোস্ট করা হয়।
রাতে শুরু হওয়া ভাঙচুর ভোরের দিকে কয়েক ঘণ্টা বিরতির পর সকালে আবার শুরু হয়। এক্সকাভেটরের সঙ্গে রড ও হাতুড়ি নিয়ে লোকজন সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ভাঙার কাজ চালিয়ে যান।
শুধু ধানমন্ডি ৩২-এর শেখ মুজিবের বাড়িই নয়, গতকাল শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। এ ভবনটি ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত।
এছাড়া, গতরাতে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় শেখ মুজিবের ম্যুরাল, শেখ হাসিনার আত্মীয়সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।