স্যাটেলাইটের ছবিতে ধরা পড়ল ভূটান-ভারত সীমান্তে চীনের নবনির্মিত গ্রাম
হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে বিরোধপূর্ণ ভারত ও ভূটান সীমান্তে চীন নতুন একটি গ্রাম তৈরি করছে এমনটাই দেখা সম্প্রতি প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে। ২০১৭ সালে এ অঞ্চলের অদূরে ভারত-ভূটান সীমান্ত নিয়ে চীন ও ভারতের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি সংঘাত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্যাটেলাইট সংস্থা মাক্সার টেকনোলজি গত ২৮ অক্টোবর ছবিগুলো প্রকাশ করে। তোরসা নদীর উপত্যকায় পুরো বছর জুড়ে গ্রামের অবকাঠামো নির্মাণের প্রমাণ পাওয়া যায় ছবিগুলোতে। মাক্সার টেকনোলজি এক বিবৃতিতে জানায়, ডোকলাম অঞ্চলের পাশেই সামরিক মজুদ বাঙ্কারও তৈরি করেছে চীন। সংস্থাটি জানিয়েছে, বিরোধপূর্ণ ভূটান সীমান্তে ভূটানের অংশে এই নতুন এই পাংদা গ্রাম নির্মাণের পাশাপাশি চীনের অংশে সাপ্লাই ডিপো নির্মাণ করা হয়েছে।
ভারতে ভূটানের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল ভেটসপ নামগিয়েল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'ভূটানের ভেতরে চীনের কোনো গ্রাম নেই।' চীন নিজস্ব এলাকাতেই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে বলে জানানো হয় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
চীন ও ভূটান দুটি দেশই তিনটি দেশের সীমান্তে অবস্থিত ডোকলাম অঞ্চলের দাবীদার, শিলিগুড়ি করিডোরের কাছে অবস্থিত হওয়ায় অঞ্চলটি ভারতের কাছেও গুরূত্বপূর্ণ।
সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত চীনা সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে মাক্সার টেকনোলজি ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এ দাবী অস্বীকার করা হয়। ভূটানের ভেতর চীন কোনো গ্রাম নির্মাণ করেনি বলে প্রতিবেদনটিতে জানিয়েছেন চীনা বিশেষজ্ঞরা।
তবে এ অঞ্চলে ভুটান ও চীনের নির্ধারিত সীমান্ত এলাকা এখনো বিতর্কিত। ২০১৭ সালে ভূটানের ভেতর চীন রাস্তা নির্মাণ করছে এমন অভিযোগ আনার পর সংঘাত শুরু হয়। সেসময়ও চীন রাস্তা তৈরির অঞ্চল চীনের সীমান্তের ভেতরেই জানিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে।
ভূটানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণে সহায়তা ও বৈদেশিক নীতিতে সহযোগিতার কারণে ভারত ও ভূটানের কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধুত্বভাবাপূর্ণ। সেসময় ভূটান-চীনের সীমান্ত বিবাদে ভারতও জড়িয়ে যায়।
এ বছরের শুরুতেই হিমালয় অঞ্চলের আরেকটি বিরোধপূর্ণ সীমান্ত নিয়ে ভারত-চীনের সংঘাত শুরু হয়। দুটি দেশই পরবর্তীতে বিরোধ মীমাংসার সিদ্ধান্তে একমত হওয়ার কিছুদিন পরই মাক্সার টেকনোলজির স্যাটেলাইট ছবিগুলো প্রকাশিত হয়। তবে সামনের আগত শীতকালে হিমালয়ের আবহাওয়ার কারণে সামনের দিনগুলোতে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
সূত্র: সিএনএন