২৫ নভেম্বর: ফিদেল কাস্ত্রোর ৪ বছর পর একইদিনে গেলেন ম্যারাডোনাও
এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব ছিল তাদের। ছিল যেন পিতা-পুত্রের মতোও সম্পর্ক। কিউবা বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফিদেল কাস্ত্রো। অন্যদিকে, স্বয়ং ফুটবলের এক বৈপ্লবিক সত্তা দিয়াগো ম্যারাডোনা। তাদের দুজনেরই জীবনযাত্রা ক্যালেন্ডারের পাতার হিসেবে একই তারিখে থেমে যাবে, কে জানত!
২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর প্রয়াত হন ফিদেল। ঠিক চার বছর পর, সেই ২৫ নভেম্বরই ম্যারাডোনাও বিদায় নিলেন জীবন থেকে।
আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরিসের এক বস্তিতে হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ম্যারাডোনার। বাবা ছিলেন কারখানা শ্রমিক। ফুটবলার হিসেবে ম্যারাডোনা যখন মাত্রই বেড়ে উঠছেন, তখন স্বপ্ন দেখতেন একদিন বাবা-মায়ের জন্য একটা বাড়ি কিনে দিতে ও নিজের বড় তিন বোনের দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবেন।
তার ব্যাকগ্রাউন্ড ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই সম্ভব ফিদেলকে আকৃষ্ট করেছিল। আমাদের নিশ্চয় মনে আছে, ফিদেলের বিপ্লব সঙ্গী চে গেভারাও আর্জেন্টাইন।
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে অনেকটা একক জাদুতে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করার অল্প কিছুদিন পরই ম্যারাডোনা প্রথমবারের মতো কিউবা সফরে যান, ফিদেলের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে ফিদেলের কাছ থেকে কিউবা বিপ্লবের আদ্যোপান্ত শোনেন তিনি। নিজের ১০ নম্বর আর্জেন্টাইন জার্সি ফিদেলকে দেন উপহার।
তারপর থেকে এ দুজনের নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ব্যক্তিজীবনে মারাত্মক খামখেয়ালী ম্যারাডোনা নিজেও বারবার বলেছেন, ফিদেল তার জীবন বাঁচিয়েছেন। অন্যদিকে, ফিদেলও তাকে 'দারুণ বন্ধু' হিসেবে করেছেন অভিহিত।
২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, 'তিনি ছিলেন আমার কাছে দ্বিতীয় বাবার মতো।' আরও বলেছিলেন, 'আর্জেন্টিনা যখন আমার জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছিল, কিউবা তখন খুলে দিয়েছে।'
ম্যারাডোনার বাম পায়ে আজীবন ছিল ফিদেলের ট্যাটু।