বিশ্বের ‘সবচেয়ে কুৎসিত’ অর্কিডের সন্ধান
অর্কিড ফুল তার অপরূপ শোভনীয়তার জন্য পৃথিবীজুড়েই বিখ্যাত। গন্ধ না থাকলেও এর আকর্ষণীয় রূপ ফুলটির চাহিদা এতটুকুও কমতে দেয়নি। কিন্তু সম্প্রতি মাদাগাস্কারের বনাঞ্চলে এমন এক অর্কিড ফুলের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাকে 'বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত অর্কিড' বলে খেতাব দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
৭০০ মহাজাতি এবং ২৮ হাজার পৃথক প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে অর্কিড অন্যতম বৃহৎ উদ্ভিদবর্গ। অর্কিড ফুলে গন্ধ না থাকলেও রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য্য। কিন্তু সবচেয়ে নতুন এই প্রজাতি যেন তার দলের অন্যদের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে বেমানান। একই পরিবারের বাকি সদস্যদের রূপ-লাবণ্যের কাছে এটি 'কদর্য' বলেই ঠেকছে।
এ বছর সদ্য আবিষ্কৃত উদ্ভিদ ও ছত্রাকগুলোর মধ্যে অন্যতম এই 'গ্যাস্ট্রোডিয়া অগ্নিগেসেলাসের' কোনো পাতা নেই। এটি মূলত রঙহীন বাদামি বর্ণের একটি কন্দীয় কাণ্ডের উদ্ভিদ (মাটির ভেতরে যার কাণ্ড থাকে, আলুর মতো)। বেশিরভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে; শুধু ফুল বা ফল উৎপাদনের সময় উদ্ভূত হয়।
অর্কিড গবেষক জোহান হারম্যান সিএনএনকে বলেন, 'এটি তেমন আকর্ষণীয় নয়। ভেতরে লাল এবং বাইরে বাদামি রঙ বিশিষ্ট একটি বাদামি চেহারার অর্কিড এটি।'
অন্যান্য অর্কিডের মতো, বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত উদ্ভিদটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ এবং ছত্রাকের সঙ্গে এদের মিথোজীবীতার সম্পর্ক রয়েছে। তবে অন্যান্য অর্কিড শুধু বিকাশের চক্রটিতে ছত্রাকের ওপর নির্ভর করে। অন্যদিকে, গ্যাস্ট্রোডিয়া অগ্নিসিলাস তার জীবিকার জন্য মিথোজীবিতার ওপর স্থায়ীভাবে নির্ভরশীল। কারণ, এতে সালোকসংশ্লেষণের কোনো কোষ নেই।
ছত্রাক মাটি ও অন্যান্য গাছপালা থেকে পুষ্টি, যেমন- কার্বন আহরণ করে। অন্যদিকে, অর্কিড তাদের মাধ্যমে গ্রহণ করে খাবার।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, বিজ্ঞানীরা এই নতুন ও অস্বাভাবিক চেহারার অর্কিড সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই জানেন না; যেমন, এটি কীভাবে পরাগিত হয়, বা মাদাগাস্কারের কোথায় কোথায় এর আবাসস্থল। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, অন্যান্য অর্কিডের মতো এত বাজারমূল্য সহসাই পেতে যাচ্ছে না এই প্রজাটি।
- সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল